বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান, স্বীকৃতি দিতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব, অস্বস্তিতে শুভেন্দু অনুগামী গৌতমরা

0
75

জৈদুল সেখ, মুর্শিদাবাদ:

মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি পৌরসভার প্রাক্তন পৌর পিতা শুভেন্দু অধিকারী অনুগামী হিসেবে পরিচিত গৌতম রায়, কান্দি পৌরসভার প্রাক্তন উপ পৌরপিতা গুরুপ্রসাদ মুখার্জি এবং কান্দি পৌরসভার ছয় নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর চন্দন হাজরা গত বুধবার কলকাতায় কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের হাত ধরে ভবানীপুর এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস দলে যোগদান করে ছিলেন। ভেবেছিলেন তৃণমূলের হয়ে কাজ করবেন কিন্তু ‘গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল’ অবস্থা হয়েছে।

Madan Mitra
মদন মিত্রের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান, নিজস্ব চিত্র

বিজেপি না তৃণমূল, কোন দলে রয়েছেন তারা? প্রশ্ন শুনে ঢোঁক গিলতে হচ্ছে মুর্শিদাবাদের কান্দি পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শুভেন্দু অনুগামী গৌতম রায় ও তার দুই অনুগামীকে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া হাওয়ায় গা ভাসিয়ে তিনজনই তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে৷ এরপর কান্দি থেকেই বিজেপির টিকিটে ভোটে লড়েন গৌতম ৷ তাতে শিকে ছেঁড়েনি ৷ ৩৮ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে তাকে পরাজিত করেন তৃণমূলের অপূর্ব সরকার ওরফে ডেভিড ৷

কান্দির তিন বিজেপি নেতা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বর অজান্তেই তৃণমূলে যোগদানের বিষয়ে মুর্শিদাবাদ আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি পার্থ প্রতীম সরকার বাপি বলেন, “প্রথম কথা তাদের তৃণমূলে যোগদান পার্টির অসাংবিধানিক। জেলা নেতৃত্ব তা অস্বীকার করছে। দ্বিতীয়ত কান্দি পৌরসভায় ১৮ টি ওয়ার্ডে তৃণমূল নেতৃত্ব মানুষের হয়ে যে সমস্ত কাজ করেছে তাতে বিজেপি শূণ্য হয়ে যাবে। তাছাড়া ওরা মানুষের কাছ থেকে বিছিন্ন হতাশায় ভুগছে। ”

একই সুরে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “ওঁরা কোথায়, কীভাবে দলে যোগদান করেছেন জানি না! আমাদের রাজ্য সভাপতিও কিছু জানেন না।”

যদিও তৃণমূলে পুনরায় যোগাযোগ করে গৌতম রায় জানান, “আমরা পার্টির নিয়ম মেনেই তৃণমূলে জয়েন্ট করেছি। আমি জেলা নেতৃত্ব বা স্থানীয় নেতৃত্বকে সম্মান জানিয়ে বলবো আমি তাদের কাছে কপি পাঠিয়ে দিয়েছিলাম তবে তাদের কাছে সময় বেশি লাগছিল বলে আমরা কলকাতায় গিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেছি। তাছাড়া জেলা নেতৃত্ব আমাকে যেমন পরামর্শ দিবে তেমনি কাজ করে যাব।”

আরও পড়ুনঃ টিকাকরণ বাধ্যতামূলক… এমন কোন নির্দেশ জারি করেনি স্বাস্থ্যমন্ত্রক, শীর্ষ আদালতে হলফনামা কেন্দ্রের

বিজেপিতে গিয়ে ভুল স্বীকার তিনি আরও বলেন, “ভোটের আগে ভুল বুঝেছিলাম। তাই ভুল করে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলাম। তবে এখন বুঝতে পেরেছি। যদি মানুষের উন্নয়ন করতে হয় তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই উন্নয়ন করতে হবে। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন উন্নয়নের কান্ডারী।”

এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, “বিগত বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে তারা দলবদলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন। এরা সুবিধাবাদী রাজনীতি করে। সুবিধা নিতেই বিজেপিতে এসেছিলেন। সুবিধা না পাওয়ায় তাই তৃণমূলে ফিরে যাচ্ছেন।”

আরও পড়ুনঃ “বেঙ্গল মিনস বিজনেস”, এলন মাস্ক-কে বাংলায় বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়ে টুইট মন্ত্রীর

এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা ওই তিন বিজেপি নেতা তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী কটাক্ষ করে বলেন, “কি বলব দিনরাত যদি কেউ জাত বদলায় অত হিসাব রাখা যায়।” সবমিলিয়ে কান্দির এই তিন বিজেপি নেতারা তৃণমূলে যোগদান শুরু হয়েছে রাজনৈতিক নতুন সমীকরণ। সামনে পৌরসভা নির্বাচন তার আগে কী বিজেপি শূণ্য হতে চলেছে! উঠছে প্রশ্ন?

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here