নিজস্ব সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদঃ
মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রথমবারের মতো গ্রামীণ রাস্তায় চালু হল টোল ট্যাক্স। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে ফরাক্কার বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩ কিলোমিটার পণ্যবাহী রাস্তায় টোল শুরুর পাশাপাশি চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় খুশি ট্রাকচালকরা।
সরকারিভাবে গ্রামীণ রাস্তায় টোলের কাজ শুরু হওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে শাসকদল তৃণমূল নেতাদের তোলাবাজিও। জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ড থেকে নিত্যদিন এই পথে প্রায় পাঁচ থেকে ছয়শো পাথর বোঝাই লরি যাতায়াত করে।
টোল চালু হওয়ায় এখন থেকে খালি লরি পিছু টোল নির্ধারণ করা হবে ৫০ টাকা। পাশাপাশি ৩০ টন পর্যন্ত পণ্যবাহী গাড়িকে দিতে হবে ১৪০ টাকা, অতিরিক্ত পণ্য পরিবহণের জন্য ২৪০ টাকা।
আরও পড়ুনঃ রাজভবনে মণীশ শুক্লার মরদেহ নিয়ে যেতে আটকাল পুলিশ, রণক্ষেত্র ধর্মতলা চত্বর
এদিকে সরকারি ভাবে টোল চালু হওয়ায় বন্ধ হয়েছে চাঁদাবাজি। অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন ও তৃণমূল নেতাদের মদতেই এতদিন টোল ট্যাক্সের নামে অবৈধভাবে লরি প্রতি ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করতেন সমাজবিরোধীরা। তাতে যুক্ত ছিলেন বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা।
অভিযোগ, তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাল্টা অভিযোগ জানাতে ও টোলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তা বন্ধের দাবিতে রাস্তায় ধর্ণায় বসেন ফরাক্কা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আঞ্জুমারা খাতুন, কর্মাধ্যক্ষের স্বামী বাবলু ঘোষ, সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া অরুনময় দাস সহ অন্যান্যরা।
আরও পড়ুনঃ কোচবিহারে বিজেপিতে ভাঙন, জেলা কমিটির দুই সদস্য যোগ দিল তৃণমূলে
এবিষয়ে বেনিয়াগ্রাম ট্রাক ওনার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুর রহমান জানান, টোল চালু হওয়ায় আমরা খুশি। ন্যায্য টাকা দিয়েই আমরা গাড়ি চালাতে পাড়ছি।
আগে টোল নেওয়া না হলেও স্থানীয় প্রশাসন ও তৃণমূল নেতাদের মদতে কিছু সমাজবিরোধী অত্যাধিক হারে জবরদস্তি ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা আদায় করত। টাকা না দিলে পুলিশি নির্যাতন চালানো হত।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের পতাকা হাতে সৌমিক বিরোধী স্লোগান রাণীনগর, ভগবানগোলায়
দিন কয়েক আগেই রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করে শাসক দলের নেতা তথা সদ্য সিপিএম ছেড়ে তৃণমূল যোগদান কারি তৃণমূল নেতা অরুনময় দাসের সাগরেদ নারায়ন সাহা ও গনেশ। নারায়ন ও গনেশ কে দিয়ে তোলা আদায় করাতেন অরুণ বাবু ।
এমনটাই দাবি লরি অ্যাসোসিয়েশনের। অন্যদিকে টোল প্লাজার কর্ণধার সায়ন বিশ্বাস জানান, সরকারি ও বৈধভাবে টোল ট্যাক্স চালু করার পরেও কিছু অসাধু ব্যক্তি সেটা বানচাল করার চেষ্টা করছে।
মূলত তাদের অবৈধভাবে তোলা আদায় বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই যেনতেন প্রকারে আমাদের হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করছে। পুলিশ প্রশাসনও টোল ট্যাক্স খোলায় অসহযোগিতা করছে।
অথচ আমরা মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ থেকে এক কোটি ৩০ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার দরপত্রে অর্ধেক টাকা জমা দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য লিজ নিয়েছি।
এদিকে এক গাড়ি চালক জানান, সরকারি ভাবে টোল চালু হওয়ায় আমরা খুশি। এর আগে রাজনৈতিক দলের মস্তান বাহীনির তোলাবাজদের কার্ডের মাধ্যমে ৭০০ টাকা করে দিতে হত। এখন তা বন্ধ হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584