টেলি-সিনে বিভাজন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব অভিনেতারা

0
96

নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ

টেলিভিশনের অভিনেতা এবং সিনেমার অভিনেতা- এই নিয়ে একটা কথাকথি চলতেই থাকে। সিনেমায় কাজ করা মানুষগুলি সেলেব আর যাঁরা শুধুই টেলিভিশনে কাজ করেন তাঁরা সেলেব নন। এঁরা কম ব্যস্ত, কম লোকে এঁদের চেনে, আজ এই সিরিয়ালে কাল নাও থাকতে পারে। ব্যাপারটা একটু ভেঙে বলি- আমাদের মধ্যে অনেকেই সিনেমা-সিরিয়াল নিয়ে গপ্পগুজবে বসলে বলি, “আরে উনি তো শুধুই সিরিয়াল করে, উনি তো সিনেমাই করে, উনি তো সিনেমা-সিরিয়াল দুটোই করে।”

Tele serial | newsfront.co

‘উনি’র সঙ্গে ‘করেন’ বলতেও ভুলে যাই আমরা। এই যে কে টিভি সিরিয়ালে কাজ করে আর কে সিনেমায় কাজ করে, কে বেশি ব্যস্ত আর কে বেশি ব্যস্ত না কিংবা কে বেশি হিট আর কে বেশি নয়, তা নিয়ে বিভাজন তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন টলিপাড়ার বেশ কিছু জনপ্রিয় অভিনেতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার আঁচ পাওয়া গেল।

Tele serial | newsfront.co

কিন্তু কেন এই বিভাজন? সিনেমা করনেওয়ালারা কি কোনওদিন সিরিয়ালে মুখ দেখাননি? কিংবা যাদের কেরিয়ার শুরু হয়েছে বড় পর্দা দিয়ে তারা কি কখনও টিভিতে কাজ করেননি? আবির চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী, রাহুল ব্যানার্জি, প্রিয়াঙ্কা সরকার, জিত, এমনকী বলিউডের বেতাজ বাদশা শাহরুখ খান অবধি টেলিভিশনে কাজ করেছেন।

Tele serial | newsfront.co

একইভাবে যাদের কেরিয়ার ছোটপর্দা দিয়ে শুরু হয়েছে তাঁরাও পা রেখেছেন বড় পর্দায়। তাঁদের মধ্যে অনেকে এখন শুধুই টেলিভিশনেই কাজ করে চলেছেন চুটিয়ে। আর তাতেই তাঁরা দর্শকের হার্টথ্রব। সুতরাং এই বিভাজন অমূলক। ছোটপর্দা এবং বড় পর্দা একে অপরের পরিপূরক। খুব সহজভাবে বলতে গেলে, বড় পর্দার জন্য নির্মিত ছবিগুলি কদিন দেখানো হয় সিনেমা হলে।

 

Tele serial | newsfront.co

ছোটপর্দা পরবর্তীতে সেই ছবিগুলি তাদের প্ল্যাটফর্মে দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিলেই ছবিটি বাজারে আসে। ছোটপর্দাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ছবিগুলি তুলে ধরে দর্শকের কাছে। আর এই ছোটপর্দা বা টেলিভিশনকে যারা প্রত্যেকদিন রক্ত জল করা ঘাম দিয়ে টিকিয়ে রাখছেন তাঁদেরকে টেলিভিশনে কাজ করে, মানে কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন বলে পিছনের সারিতে রাখা অমূলক, অসম্মান প্রদর্শন এবং অনৈতিকও বটে।

আরও পড়ুনঃ নতুন বিপত্তি! মাস্ক পরে বেরোলেই কামড়াচ্ছে কুকুর, ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে

আর তাই এই ব্যাপারে মুখ খুলেছেন অভিনেতা জয়জিত বন্দ্যোপাধ্যায়, ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, রূপা ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকে। শুরু করতে চলেছেন ‘মুখ খোলো’ ক্যাম্পেইন। জয়জিতের কথায়, “যারা ফেসবুকে আবার বোরিং সিরিয়ালগুলো শুরু হয়ে গেল বলে রোদন করছেন তাঁদের অনেককেই আমার ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে আউট করেছি। আরও করব।”

আরও পড়ুনঃ বাংলা ধারাবাহিকে করোনার ইশারা!

অভিনেতামহলের এই বিভাজন কি শুধুই দর্শকের মুখ ফিরতি কথায় সীমাবদ্ধ নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য গল্পের হাতছানি সেটাই বড় প্রশ্ন এই মুহূর্তে। একটা কথা এই প্রসঙ্গে প্রতিবেদক হয়ে না লিখে পারছি না, এই লকডাউনে কোথায় ছিল সিনেমা হল? টিভি ছাড়া উপায় ছিল কি? আর এই টিভি চলত না যদি না মেগা সিরিয়াল দর্শকের ঘরে রাজ করত।

একইভাবে সিনেমা হল খুললেও রোজ কেউ সিনেমায় সারাদিন গিয়ে বসে থাকবে না। ঘরে ফিরে ফুরফুরে জামা গায়ে, কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে টিভিই সম্বল। ফলে, টিভিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যাঁরা সারাটা দিন উদয়াস্ত খাটেন তাঁদের খাটো করার মধ্যে কোনও মহত্ব আছে কিনা জানা নেই এই প্রতিবেদকের। একইভাবে সিনেমাশিল্প যাঁরা এগিয়ে নিয়ে চলছেন তাঁদের ভূমিকাও কম নয়। অল্প সময়ের মধ্যে নিজেদের ভাষা আর ভাবনা বুঝিয়ে দিতে হয় দর্শককে। সুতরাং দুই ক্ষেত্রের প্রত্যেকেই সমান সম্মানীয় এবং সমান ব্যস্ত।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here