পূর্ব মেদিনীপুর জুড়ে অবাধ্য জনতাকে ঘরে ঢোকাতে কড়া পদক্ষেপ পুলিশের

0
22

নিজস্ব সংবাদদাতা,পূর্ব মেদিনীপুরঃ

বিশ্বে মহামারি করোনা ভাইরাসের লক্ষণ দেখে কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সারা দেশবাসীকে সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে জারি করা হয়েছিল লকডাউন ৷এরপর এলাকার মানুষের কথা ভেবে লকডাউন কিছুটা শিথিল করে দেওয়া হয় এ রাজ্যে, কিন্তু লকডাউন শিথিল হওয়ার পরেও ক্রমশ থাবা বসাচ্ছে এই সংক্রমণ ৷

people | newsfront.co
কঠোর প্রশাসন ৷ নিজস্ব চিত্র

পুনরায় রাজ্য প্রশাসন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় সপ্তাহে দুদিন সারা রাজ্য জুড়ে লকডাউন পালন করার ৷ জেলায় যেন আবার ফিরে এলো সেই প্রথম দফার লকডাউনের চিত্র। বৃহস্পতিবার দিনভর পুলিশের ডান্ডার ভয়ে একেবারে কার্যত ঘরবন্দি সাধারণ মানুষ। যেভাবে করোনার থাবা গোটা রাজ্যে গ্রাস করেছে তাতে মার্চ মাস থেকেই চলছে লকডাউন। কিন্তু প্রথম দফার মাত্র কয়েকদিন রাজ্যের পুলিশকে কড়া হাতে লকডাউন বলবৎ করতে দেখা গেলেও এরপর আস্তে আস্তে লকডাউন পরিস্থিতি কার্যত স্বাভাবিক হয়ে যায় গোটা রাজ্যে।

police | newsfront.co
কড়া নজরদারি ৷ নিজস্ব চিত্র

এর মাঝে করোনার ভয়াল থাবা আরও গভীরভাবে গ্রাস করতে শুরু করে গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলাকে । আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করে মৃত্যুর সংখ্যাও। আর এর পরেই চলতি সপ্তাহে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বৃহস্পতিবার ও শনিবার পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই লকডাউনে আবারও সেই প্রথম দফার লকডাউনের মতো পুলিশের ডান্ডার ভয়ে ঠান্ডা হল গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে।

আরও পড়ুনঃ লকডাউন ভাঙার অপরাধে আটক বহরমপুরে

করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন জেলার এক বিধায়ক সহ  ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকও। ফলে আতঙ্ক বাড়ছে জেলাজুড়ে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যে কোথাও এক সপ্তাহ আবার কোথাও এক বেলা বাজার বন্ধ রেখে লকডাউন পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় ব্লক ও জেলা প্রশাসন। এর মাঝে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে করোনার গ্রাসের কথা মাথায় রেখে চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও শনিবার এবং আগামী সপ্তাহে বুধ- বৃহস্পতিবার ও শনিবার পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেইমতো বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সমগ্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা একেবারে জনশূন্য হয়ে পড়ে।

বাজার হাট থেকে রাস্তাঘাট সমস্তই একেবারে শুনশান হয়ে পড়ে। জরুরী ভিত্তিতে জেলার সমস্ত ঔষধ দোকান খোলা রাখা হয়। সৈকত শহর দিঘাও একেবারে জনমানব শূন্য হয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি কাঁথি, এগরা, তমলুক, মহিষাদল, হলদিয়া সর্বত্রই একেবারে শুনশান। সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশের টহল বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চলে নাকাচেকিং।

আরও পড়ুনঃ লকডাউন সফল করতে বাঁকুড়া জুড়ে কড়া নজরদারি

বিনা কারণে কোন মানুষকে রাস্তার বাইরে বের হতে দেখলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিচ্ছে পুলিশ। সকালের দিকে বেশ কয়েকটি দোকান পুলিশের নজর এড়িয়ে খুললেও পরে পুলিশ গিয়ে ডান্ডা উঁচিয়ে তা বন্ধ করে দেয়। এর মধ্যেই একাংশের বক্তব্য, এইরকম কড়াকড়ি লকডাউন প্রথম থেকেই চললে হয়তো আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকতো। তবে বর্তমান সময়ে এভাবে একদিন কিংবা দুদিন লকডাউন করার পরিবর্তে টানা বেশ কিছুদিন কড়াকড়ি লকডাউন থাকলে কমবে আক্রান্তের সংখ্যা।

আরও পড়ুনঃ লকডাউনে হেনস্থা, দুধের প্যাকেট রাস্তায় ফেলে ক্ষোভ প্রকাশ বিক্রেতার

প্রথম দফার লকডাউনেই পুলিশকে দেখা গিয়েছিল ডান্ডা উঁচিয়ে কড়া ভাবে লকডাউন বলবৎ করতে। কিন্তু এর মাত্র কয়েকদিন পর পুলিশের সেই ডান্ডাই হয়ে যায় ঠাণ্ডা। ফলে সর্বত্র একেবারে স্বাভাবিক পরিস্থিতির আকার নেয়। আর এর মাঝেই করোনা আক্রান্ত হু হু করে বাড়তে শুরু করে জেলায়। ফলে বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এসে ফের কড়া লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন থানার ওসিকে দেখা যায় রাস্তায় নেমে লকডাউন পালন করতে। মহিষাদল থানার ওসি পার্থ বিশ্বাস বলেন, “আমরা সকাল থেকেই লকডাউন পালনে রাস্তায় নেমেছি। বিনা কারণে কেউ রাস্তায় বের হলে তাকে পুনরায় ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করার কাজও চলছে।”

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here