পিয়া গুপ্তা, উত্তর দিনাজপুরঃ
প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে একান্তে পেতে,পাহাড় ঘেরা রোমাঞ্চে পরিবেশে আরণ্যক পাহাড়ের নান্দনিকতা এবং সবুজে ঘেরা বৃক্ষরাজির সৃষ্টিশীলতা প্রকৃতির এক অপরূপ নন্দনকানন হল উত্তর বঙ্গ।পাহাড়ের নান্দনিকতা এবং সবুজে ঘেরা বৃক্ষরাজির সৃষ্টিশীলতা প্রকৃতির এক অপরূপ নন্দনকানন এই উত্তরবঙ্গে রয়েছে সবুজে বিস্তৃত সাল,সেগুন, শিরীষ, ওদাল সহ আরও অনেক অজানা গাছের জঙ্গল।
শিলিগুড়ি থেকে সেবক রোড ধরে পেরিয়ে এসেছি মহানন্দা অভয়ারণ্যের বুক চেরা সেবক রোড ধরে তিস্তা নদীর সেতু,সেবক কালীবাড়ি, মংপং, ডামডিম,ওদলাবাড়ি, মালবাজার প্রভৃতি একের পর এক জনপদ রয়েছে এখানে।কত যে নদী-নালা-ঝোরার সঙ্গেই না পরিচয় হয় এখানে।
আর এর উত্তরে অবস্থিত ডুয়ার্স,লাভা লোলেগাও রিষপ এই ছিল আমাদের শিক্ষামূলক ভ্রমণের গন্তব্যস্থল।আমরা সারদা দেবী কলেজ অফ এডুকেশনের মোট ১০০ জন ছাত্র ছাত্রী শিক্ষক শিক্ষিকা সহ সকল এ ২০১৯ এ ২২ ফেব্রু়য়ারি সকালে প্রথমে বেরিয়ে পড়ি কালিয়াগঞ্জ থেকে ডুয়ার্স এর উদেশ্যে।পরিবেশে আরণ্যক নির্জনতায় খানিক অবকাশ। এই জন্যই তো আসা সবুজের ঘেরাটোপে।যেখানে প্রকৃতির হাটখোলা দুয়ার—ডুয়ার্স।
আমাদের শিক্ষামূলক ভ্রমণের দেখার জায়গা গুলি ছিল ডুয়ার্সের গরুমারা,চাপরামারি, জলদাপাড়া আর খয়েরবারি চারটি জঙ্গল ও
লাভা আর রিশপ সহ দুটি পাহাড়ী এলাকা সঙ্গে সামসিং,সুনতালেখোলা,মূর্তি,ঝালং,বিন্দু সহ বিভিন্ন নদীকেন্দ্রিক স্থান।শিলিগুড়ি শহর থেকে সামান্য দূরেই রয়েছে অন্যতম এই ট্রাভেল ডেস্টিনেশন।ডুয়ার্সের ছোটোবড় পাহাড় পাহাড়ি রাস্তা এঁকেবেঁকে মিশেছে দূরের পাহাড়ে।আমরা প্রথম দিন ডুয়ার্স থেকে দশ কিলোমিটার দূরে চালসা (Chalsa) এর কাছে একটি রিসোর্টে উঠি।যেখানে আমাদের থাকার ব্যবস্থা ছিল প্রথম দিন।প্রথম দিন আমরা রিসোর্টে পৌঁছায় আমাদের সমস্ত ব্যাগপত্র রিসোর্টে রেখে বেরিয়ে পড়ি,গরূমারা জঙ্গলের ওয়াচ টাওয়ার পরিদর্শনে।
মেদলা ওয়াচ টাওয়ার গরুমারা অভয়ারণ্যেরই অঙ্গ।মোষে টানা রঙিন আচ্ছাদন দেওয়া গাড়িতে পৌঁছতে হয় মেদলা নজরমিনার পর্যন্ত।ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে নজরমিনারের এক্কেবারে উপরিতলে পৌঁছলে,চোখের সীমানায় ঘন সবুজের বুনোট। একপাশে বিস্তীর্ণ বালুচর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক ক্ষয়াটে নদী।দূরে জঙ্গলে কিছু বাইসনের ঘোরাঘুরি।জানা যায় এই অভয় অরণ্যে
ইন্ডিয়ান গণ্ডার,এশিয়ান হাতি,ভালুক,হরিণ, বনগরু বা মহিষ,বড় বিড়াল,চিতাবাঘ,বন্য কুকুর, বাঘ গন্ধগোকুল,বেজি ও ছোট বিড়ালও দেখা যায়।পাখিকুলের মধ্যে বৃহৎ ইন্ডিয়ান ধনেশ, কাঠঠোকরা,ফিজন্ট্ ও দেখা যায়।এ ছাড়া এখানে অসংখ্য পরিযায়ী পাখিও দেখা যায়। বিভিন্ন সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীও রয়েছে এই উদ্যানে।তবে আমরা এখানে হাতি, গণ্ডার,বাইসন,ও ময়ূর দেখতে পাই।এই ওয়াচ টাওয়ারে প্রতিদিন দেশ বিদেশের পর্যটকেরা ভির জমান লাটাগুড়ি গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া জঙ্গল এবং প্রকৃতির নানা রুপ দেখতে।
আরও পড়ুনঃ প্রস্তাবিত মহীপাল দিঘি পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে আশায় স্থানীয়রা
বিভিন্ন আশে পাশের বাংলো এবং রিসোর্ট গুলি থেকে আসা পর্যটকেদের যাতে পশু পাখী দের দেখতে পান তাই এই জায়গা গুলো তে কোন রকম আওয়াজ বা জোরে কথা বলা মানা থাকে।সন্ধ্যা নামতেই গরুমারায় প্রকৃতি প্রেমী পর্যটকদের জন্য আদিবাসী নাচের ও ব্যবস্থা করা হয়।এই অঞ্চলের আদিবাসীদের নাচ এখানে আসা পর্যটকদের জন্য যেন বাড়তি একটা পাওনা। তারপর আদিবাসী নাচ দেখে আমরা সন্ধ্যায় আমাদের রিসোর্ট এ আবার এসে পৌঁছায়।সেখানে সন্ধ্যায় আমাদের জন্য জলখাবার চা, পাকোড়া,কচুরি ও রসগোল্লার ব্যবস্থা করা হয়। রাতের খাবার জন্য আলু পোস্ত ভাত ও মাংসের ব্যবস্থা করা হয়।খাবারের আগে আমাদের জন্য একটি আদিবাসী নাচের ব্যবস্থা করা হয়।দিন শেষ।রাতের ঘুম,তারপর দিন সকলে মিলে সকালে হাল্কা কিছু খেয়ে দ্বিতীয় দিনের ভ্রমন।এবারের আমাদের গন্তব্যস্থল লাভার উদ্দেশ্যে রওনা দিই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584