সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
জমিদারি আর নেই, তাই নেই অতীতের বিলাসবহুল পূজোর আয়োজনও।তবে ঐতিহ্য আর নিষ্ঠার মেলবন্ধন মানকরের কবিরাজবাড়ির দুর্গাপূজায়।চারশো বছরের প্রাচীন এই পূজায় সেই একই নিয়ম চলে আসছে। দুর্গাপূজার সময় পাশে আনন্দময়ী মন্দিরেও চলে পূজার আয়োজন। দুই মন্দিরেই চলে আসছে শতাব্দী প্রাচীন বলি প্রথা।
কবিরাজ বাড়ির প্রবীনতমা সদস্যা দিপালী গুপ্ত বলেন, বৈদ্য বংশের আদি নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশে। কবিরাজি ছিল বৃত্তি। পরবর্তীকালে বর্ধমান রাজপরিবারের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি হয় ও রাজবৈদ্য হিসাবে গন্য হন। পরিবারের বর্তমান সদস্য অভিজিৎ গুপ্ত বলেন, পূজোর সময় দেবীকে ২৫ সের চালের ভোগ নিবেদন করা হয়। রাত্রে লুচি ভোগের বিশেষ আয়োজন করা হয়। আলাদা করে দেবীর জন্য বানানো হয় মন্ডা, মিঠাই থেকে হলুদ মুড়ি।
অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে দিপালী দেবী জানান,আগে মন্ডপ চত্বরে শামীয়ানা খাটিয়ে বসত যাত্রা, পালা গানের আসর। বাড়ির মহিলারাই পূজোর সব যোগাড় করতেন।বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁর ভগ্ন স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য কবিরাজ বাড়িতে বাস করেছিলেন দীর্ঘদিন। শুধু তাই নয়,লর্ড ক্লাইভ আসতেন “দানাপানি”র জন্য। অতীতের রীতি মেনে আজও ব্রাহ্মণ ভোজন কবিরাজ বাড়ির পূজোর অন্য আকর্ষণ।
“স্বদেশী গান” রচয়িতা চারণ কবি ও গায়ক মুকুন্দ দাস ও মতিলাল রায়ের অপেরা গান বাঁধা ছিল কবিরাজ বাড়ির দুর্গাপূজায়। মৃণাল সেন তাঁর বিখ্যাত ছবি বাইশে শ্রাবণ এই বাড়িতেই শুটিং করেন।
অমরারগড়ের বাসিন্দা যদুপতি ভট্টাচার্য বলেন, কবিরাজ বাড়ির পূজা মানকর তথা এলাকাবাসীর অত্যন্ত গর্বের।ইতিহাস ও আধুনিকতার মেলবন্ধন।
আরও পড়ুনঃ স্নান করতে নেমে জলে ডুবে মৃত যুবক
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584