সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের ঐতিহ্যশালী পারিবারিক পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম প্রায় ১৩০ বছর আগে শুরু হওয়া বননবগ্রামের ‘নতুন কাছারি’ বাড়ির দুর্গাপুজো। ১৩০ বছর আগে তৎকালীন জমিদার সারদাপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল এই পুজো।
সারদাপ্রসাদের ছয় পুত্র ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন নলিনীরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন তিনি।
ব্রিটিশ আমলে এই পদ যে বিশেষ ঈর্ষনীয় ছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। জানা যায়, শেষ বয়সে সংসার ত্যাগ করে জমিদার সারদাপ্রসাদ কাশীতে বসবাস করেন। কাশী যাওয়ার আগে কুলদেবীর সেবার জন্য ‘অর্পননামা দলিল’ করে দিয়ে যান। সেই দলিল মেনে পুজো হচ্ছে এই পরিবারে।
যদিও বিশাল জমিদার বাড়ি সারা বছর কার্যত ফাঁকা থাকে। সুবিশাল ভবন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে যৌথ পরিবার ভেঙে দুটি পরিবারের সৃষ্টি হয়েছে। একটি ‘পুরনো কাছারি’, অপরটি ‘নতুন কাছারি’।
নতুন কাছারিবাড়ির বর্তমান সদস্য অসিত চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, শেষ জীবনে যে ‘অর্পননামা দলিল’ সারদাপ্রসাদ করে গিয়েছিলেন তাতে দুর্গাপূজার যাবতীয় পূজা পদ্ধতি, পুজোর আচার সব লেখা আছে।
আরও পড়ুনঃ আতাহার খানের বুড়িমা দুর্গাপুজোর ইতিহাস
সেই অনুযায়ী পুজো হয় এখনও। একচালায় তৈরি মাটির প্রতিমা এখানে পূজিত হয়। অষ্টমী এবং নবমীর দিন আশেপাশের গ্রামের প্রায় দুই হাজার মানুষ সেদিন প্রসাদ পান।
জানা যায়, পরিবারের সদস্যরা কর্মসূত্রে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকলেও পুজোর সময় সবাই এখানে এসে উপস্থিত হন। যৌথ পরিবার যখন ছিল তখন একটি প্রতিমা পূজিত হত৷ কিন্তু পুরনো কাছারি এবং নতুন কাছারি ভাগ হওয়ার পর দুটি পরিবার পৃথক করে পুজোর আয়োজন করছে।
আউশগ্রামের শতবর্ষ প্রাচীন এই পুজো ঘিরে স্থানীয় মানুষ ছাড়াও আশেপাশের জেলার মানুষদের কৌতূহল বর্তমান। তাই তাঁরাও পুজোর দিনগুলিতে প্রতিমা দর্শন করতে আসেন এখানে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584