শুভদীপ ভট্টাচার্য, মুর্শিদাবাদঃ
মুর্শিদাবাদ জেলার নবগ্রাম ব্লক অন্তর্গত চয়ননগর সান্তাল স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালনায় চয়ননগর, খাগড়াডাঙ্গা, গড়ের ডাঙ্গা ও কাপাসডাঙ্গা গ্রামে ঐতিহাসিক হুলমাহা পালিত হয়। সকাল ৭টায় সাঁওতাল বিদ্রোহের জনক, ব্রিটিশ বঞ্চনার বিরুদ্ধে সাঁওতাল জনতার হয়ে লড়াইয়ের অবিস্মরণীয় নাম সিধো-কানহোদের সংগ্রাম থেকে শিক্ষা নিয়ে বঞ্চনার বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের ইতিহাস তুলে ধরতেও এক বিশাল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
আদিবাসীরা শিক্ষার দিক দিয়ে এখনও অনেক পিছিয়ে। তাই হুলমাহা পালনের মধ্য দিয়ে অভিভাবকদের সচেতনতার মাধ্যমে শিশুদের স্কুলমুখী করবার অনুপ্রেরণা দেওয়া হয়।
দ্রারিদ্রতার জন্য অনেক আদিবাসী ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরেও অনেক আদিবাসী ছাত্রছাত্রী আর্থিক অভাবে কলেজে ভর্তি হতে পারে না। এলাকার সেসব ছাত্রছাত্রীদের তালিকা তৈরি করে ক্লাবের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।
আদিবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বিস্তারের জন্য চয়ননগর ক্লাব অনেক আগে থেকেই আদিবাসীদের নিয়ে সচেতনতা সভা করে আসছে।আদিবাসীরা সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে এখনও যে বঞ্চিত আছে সেই প্রসঙ্গেও বিস্তারিত আলোচনা করা হয় এই হুলমাহা পালন কর্মসূচিতে। আদিবাসী গ্রাম গুলিতে পানীয় জলের সংঙ্কট যে এখনও বর্তমান। সেটা আদিবাসী গ্রাম গুলিতে গেলেই হরবখত চোখে পড়ে। অধিকাংশ আদিবাসী গ্রাম গুলিতে রাস্তা ঘাটের সুবন্দোবস্ত এখনও অব্দি নেই।
স্বাধীনতার ৭০বছর পরে আদিবাসী অর্থাৎ দলিত শ্রেণীর মানুষেরা এখনও যে শোষিত, নির্যাতিত ও অবহেলিত এবং সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তার বিরুদ্ধেই কন্ঠস্বর দৃঢ় করতে হুলমাহা দিবস পালনের অঙ্গীকার আদিবাসী সাঁওতালদের।
আদিবাসী সাঁওতালরা মাতৃভাষায় সাঁওতালি শিক্ষার দিক দিয়ে সরকারী ভাবে বঞ্চিত। আইন ঘোষণা এবং লিপিবদ্ধের পরও স্বীকৃতি ও কার্যকারিতা এখনও আশানুরুপ নয়, তাই হুলমাহা পালনে সিধো-কানহোর লড়াইয়ের প্রতি সরকারের সম্মান ও ভাষা স্বীকৃতির দাবীতে আলোচনা করেন আলোচকরা। একই সাথে সামাজিক রাষ্ট্রিক বঞ্চনার দিকটিও সভার মধ্যে বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন কমিটির সম্পাদক সুশীল সোরেন এবং হুলমাহা পালনের শিক্ষাই তাদের আগামীর পথ এমন কথাই ফুটে উঠেছে সম্পাদকের বক্তব্যে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584