পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
ছুটির মেজাজে থাকা পর্যটকদের হায়রানির শিকার হতে হলো তৃনমূল ছাত্র পরিষদের অবরোধের জেরে। দীপক ঘোষের খুনিদের শাস্তির দাবিতে আজ সকাল দশটা থেকে বীরভূমে শুরু হয়েছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ।পাঁচড়া মোড়ের কাছে অবরোধের ফলে যানজট জাতীয় সড়কে।অবরোধে সামিল হয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পড়ুয়ারা।ঘটনার সূত্রপাত গত ২১ শে অক্টোবর রবিবার, দুপুরে কাজ সেড়ে বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হোন খয়রাশোল ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষ। সেদিন শাসকদলের এই সভাপতিকে লক্ষ্য করে অজ্ঞাত পরিচয় বেশ কয়েকজন আততায়ী গুলি চালায়।গুলি লেগে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে স্থানীয় নাকড়াকোন্দা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুর মিশন হাসপাতালে,২২ শে অক্টোবর দুপুর ১ টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামী এই দীপক ঘোষ খয়রাশোল এলাকায় যথেষ্ট প্রতাপশালী ব্যক্তি ছিলেন।এই প্রতাপশালী নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালনার ঘটনায় দুদিনের ভিতরেই গ্রেফতার করা হয় বেশ কয়েকজনকে।দীপক ঘোষের মৃত্যুর অর্থাৎ শেষবার তাঁকে গুলি চালনার ঘটনা প্রথম ছিল না।এর আগেও তিনবার দুষ্কৃতীরা হামলা করে তার উপর।
ঘটনার দিন দীপক ঘোষ তাঁর সঙ্গী ভোলা ঘোষকে নিয়ে মোটর সাইকেলে করে নিজের গ্রাম কেন্দ্রগড়িয়া ফিরছিলেন খয়রাশোল থেকে। সে সময় অজয় নদীর উপর অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে পেরোনোর সময় সুপার ইঁট ভাটার সামনে তার উপর আক্রমণ চালায় তিনজন আততায়ী মোটরসাইকেল নিয়ে। প্রথমে মুখ লক্ষ্য করে গুলি চালায় ও পরে ভোজালি দিয়ে কোপ মারা হয় গোটা শরীরে। দীপক ঘোষের সঙ্গী ভোলা ঘোষ চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে ওই তিনজন আততায়ী পালিয়ে যায়।
প্রথম বার হামলায় দীপক ঘোষ বেঁচে যায়, দ্বিতীয়বারের হামলায় খয়রাশোলে প্রভাবশালী নেতার চোখে আঘাত লাগে কিন্তু প্রাণে বেঁচে যায়, তৃতীয়বারের হামলায় তাঁর আর রক্ষা হয়নি। গুলিবিদ্ধ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় দুর্গাপুর মিশন হাসপাতালে বাঁচার লড়াই চালিয়ে গেলেও তিনি ২২ শে অক্টোবর দুপুর একটা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।খয়রাশোলের প্রাক্তন তৃণমূল ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষের মৃত্যু কেটে গেছে তিন মাস।ঘটনায় গ্রেফতার হয় ভাসান শেখ, মধু বাউড়ি, চিন্ময় দাস, শের খান।যাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই শের খানের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।ঘটনার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও তদন্ত আর এগোয়নি এই অভিযোগে আজ খয়রাশোল ব্লকের অন্তর্গত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পড়ুয়ারা জাতীয় সড়ক অবরোধে নামে।তাদের মূল দাবি দীপক ঘোষ খুনে যারা মূল অভিযুক্ত তাদের অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে।সেদিনের ঘটনার পর খয়রাশোলে তৃণমূল ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষ খুনের ঘটনায় ১৫ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী মিঠু ঘোষ।দায়ের হওয়া অভিযোগের তালিকাভুক্তরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবেই পরিচিত। ঘটনার পরপরই পুলিশ চার জনকে গ্রেফতারও করেছে।ধৃতদের মধ্যে একজনের নামও ছিল অভিযোগপত্রে।
আজ সকাল ১০ টা থেকে অবরোধ শুরু হলে দেড় ঘন্টা ধরে অবরোধ চলছে বলে জানা গিয়েছে।অবশেষে পুলিশ প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় অবরোধকারীরা।
আরও পড়ুন: সুরক্ষার প্রশ্নে পর্যটকবাহী গাড়িতে বিশেষ নজরদারি
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584