নিজস্ব সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদঃ
তৃণমূলের নাম করে ‘কাটমানি’ চাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত ডোমকল পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুনঃ শেয়ার বিক্রির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি বীমা কর্মচারীদের
অভিযুক্ত কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আজ ডোমকল এসডিও-র কাছে এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মুসলিমা খাতুন নামে এক মহিলা। ডোমকল পৌরসভার চেয়ারম্যান জাফিকুল ইসলামের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত আসাদুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন।
আরও পড়ুনঃ গ্রেফতার পাখি পাচারচক্রের মূল পাণ্ডা
এ বিষয়ে জাফিকুল ইসলামের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি আসাদুল ইসলামকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। উনি অত্যন্ত নিরীহ প্রকৃতির একজন ভাল মানুষ। উনি এই কাজ করতেই পারেন না বলে দাবি জাফিকুলের।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ডোমকল পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমিক হোসেনের অপসারণের পর বিভিন্ন ওয়ার্ডে গৃহনির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারের আবাস যোজনা থাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হয়।
অভিযোগ, প্রথম কিস্তির এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন কাউন্সিলর উপভোক্তাদের কাছ থাকে টাকা দাবি করেছেন। নিউজফ্রন্টের হাতে আসা দুটি অডিওটেপে এক ব্যক্তিকে এক মহিলার কাছ থাকে গৃহনির্মাণের পরের কিস্তির টাকা দেওয়ার জন্য ‘তৃণমূলের’ নাম করে ৩০,০০০ টাকা দাবি করতে শোনা গেছে। (নিউজফ্রন্ট এই অডিওটেপ দুটির সত্যতা যাচাই করেনি।)
এই ভাইরাল হওয়া অডিওটেপের কথা উল্লেখ করে যখন জাফিকুলের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়, তখন তিনি বলেন, এখানে একটু ইতিহাস জড়িয়ে আছে। আসাদুল ইসলাম ডোমকল পুরসভা থেকে ২০১৭ সালে কংগ্রেসের টিকিট নিয়ে পৌর নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন এবং জিতেছিলেন।
এরপর তিনি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজকর্মে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূলে যোগ দিলে স্বাভাবিকভাবেই সিপিএম-কংগ্রেসের সদস্যরা ব্যাপারটা ভাল চোখে দেখেনি। তাই জাফিকুলের মতে এই ঘটনা সিপিএম-কংগ্রেসের কারও ষড়যন্ত্র আসাদুলকে ফাঁসানোর জন্য। যদিও তিনি এই ব্যাপারে অন্য খবর জানতে পারলে তদন্ত করবেন এবং নিউজফ্রন্টকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
আসাদুলের নামে আসা অভিযোগ সম্পর্কে আসাদুলকে প্রশ্ন করা হলে উনি বলেন, হিতানপুর গ্রামে গিয়ে উনি দেখেন একটি পরিবারে স্বামী মারা গিয়েছেন এবং পরিবারে তিন মহিলা ছাড়া আর কেউ নেই। তাদের দুঃখ-দুর্দশাপূর্ণ অবস্থা দেখে আসাদুল তাদের একটি ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং পার্টির অনুদান বাবদ ৩০,০০০ টাকা জমা করার কথা বলেন।
কিন্তু ভাইরাল হওয়া দুটি অডিওটেপের একটিতে মুসলিমা খাতুন এবং আসাদুলের বার্তালাপে স্পষ্ট শোনা যায়, যেখানে মুসলিমা খাতুন আসাদুলকে জিজ্ঞাসা করছেন ঘর বাবদ ৫০,০০০/- নেওয়ার পরেও আরও ৩০,০০০/- উনি কেন চাইছেন, যার উত্তরে আসাদুল বলেন এই টাকা পার্টির টাকা, তাঁর নিজের নয়।
আরও একটি অডিওটেপে হিতানপুরের বুথ সভাপতি ও মুসলিমার মধ্যে হওয়া বার্তালাপ থেকে জানা যায়, সেই বুথ সভাপতি মুসলিমাকে টাকা দেওয়ার জন্য তাড়া দিতে থাকেন। কিন্তু মুসলিমা তার অসুবিধার কথা জানিয়ে বলেন, সামনে তার বোনের বাচ্চা হওয়া-সহ আরও কিছু অর্থসাপেক্ষ কাজ থাকায় কিছুদিন পর সেই টাকা নিলে তার পক্ষে সুবিধা হতো। কিন্তু সেই বুথ সভাপতি মুসলিমাকে একরকম হুমকি দিয়ে বলেন, এখনই টাকাটা দিতে হবে, দেরী করা যাবে না, কারণ কাউন্সিলর টাকা চাইছেন।
যাবতীয় ঘটনার উল্লেখ করে ভদ্রমহিলা এসডিও-র কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584