নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
গত শুক্রবার করোনায় আক্রান্ত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। টুইট করে একথা জানিয়েছিলেন খোদ প্রেসিডেন্টই। এরপরই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কিন্তু রবিবার সকালে ট্রাম্পের চিকিৎসকরা জানান, যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এবং তা সোমবারের আগেই।
কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার কথা ভুলে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে পড়লেন ট্রাম্প। হাসপাতাল থেকে আচমকা বেরিয়ে পড়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। তাঁর এই আচরণে স্তম্ভিত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও।
That’s Trump driving by his supporters outside Walter Reed military hospital. pic.twitter.com/eqA0RGkr6A
— Philip Crowther (@PhilipinDC) October 4, 2020
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পরেও এক জন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে কী ভাবে এমন ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ কাজ করতে পারলেন ট্রাম্প। তাতে অবশ্য মার্কিন প্রসেডিন্টের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। ওই দিনই টুইটারে প্রকাশিত এক ভিডিয়োয় ট্রাম্পকে বলতে দেখা যায়, “কোভিডের চিকিৎসা চলাকালীন অনেক কিছুই শিখলাম, জানলাম। এটাই আসল বিদ্যালয়। বিষয়টি ভাল ভাবে আত্তীকরণ করেছি।”
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) October 4, 2020
রবিবার প্রকাশ্যে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটনের ওয়াল্টার রিড সেনা মেডিক্যাল সেন্টারের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা বুলেটপ্রুফ গাড়িতে উঠে বসেন তিনি। মুখে মাস্ক।
গাড়ির ভিতর থেকেই হাত নাড়তে থাকেন বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সমর্থকদের উদ্দেশে। আর এর পরেই সমালোচনার ঝড়। একজন চিকিৎসাধীন ব্যক্তিকে বাইরে বেরনোর ছাড়পত্র দিলেন কী ভাবে। ট্রাম্পের চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
চিকিৎসক মহলের একাংশের দাবি, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর ট্রাম্পের এভাবে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার ফলে জনস্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ হয়েছে। এর ফলে আক্রান্ত হতে পারেন সিক্রেট সার্ভিসের কর্মীরাও।
আরও পড়ুনঃ সাতমাস পর ইতালি সফরে পোপ ফ্রান্সিস
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান চিকিৎসক রবার্ট ওয়াচারের মতে, ট্রাম্পের যে ধরনের উপসর্গ ধরা পড়েছে, তাঁর কোনও রোগীর এমন উপসর্গ ধরা পড়লে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তিন দিনের মধ্যে বাইরে যাওয়ার অনুমতি কোনও ভাবেই দিতেন না। একজন চিকিৎসক হিসেবে এমন দেওয়া মোটেই যুক্তিগ্রাহ্য নয়।
আরও পড়ুনঃ প্রশাসনিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী রাশিয়ান সাংবাদিক
ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিত্সক উইলিয়াম স্যাফনার আবার বলেছেন, ট্রাম্প সোমবারে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া খুব একটা ভাল সিদ্ধান্ত নয়। তাঁর দাবি, “এই ঘটনার পিছনে চিকিৎসকরা দায়ী নন, প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর রাজনীতিক সঙ্গীদের চাপেই হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কোভিডের উপসর্গ ধরা পড়ার পর এক সপ্তাহ থেকে দশ দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারও কারও এর মধ্যে স্বাস্থ্যের অবনতিও হতে পারে। তাই এই সময়টা পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু ট্রাম্প ভর্তি হওয়ার দু’দিনের মধ্যেই ছাড়া পাওয়ায় যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
অন্যদিকে, হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্ট ও তাঁর সংস্পর্শে আসা প্রত্যেক কর্মীর স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ট্রাম্পকে বের হওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। সেই জন্যই তিনি হাসপাতাল থেকে বের হয়েছিলেন। এটা একবারেই হঠকারী সিদ্ধান্ত নয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584