পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
দলনেত্রীর নির্দেশমতো বীরভূমের দুই মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী আশীষ বন্দোপাধ্যায় এবং চন্দ্রনাথ সিনহা নেমে পড়েছে জনসংযোগ রক্ষায়।
গ্রামে রাত্রিবাস করছেন জেলার দুই মন্ত্রী। সিপিএমের পঞ্চায়েত স্তরের নেতারা যেভাবে প্রতি গ্রামে দলীয় কর্মীদের সাথে রাত্রি যাপন করত,কিছুটা তেমনিভাবেই।
এক্ষেত্রে অবশ্য বিধায়ক ও মন্ত্রীরা গ্রামে ছুটে যাচ্ছেন।তাঁদের কাছে নতুন অভিজ্ঞতা।বেশ ভালো লাগছে মানুষের সাথে একাত্ম হতে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
কোলকাতা থেকেই কোথায় রাত্রি যাপন করবেন বিধায়ক বা মন্ত্রীরা তা ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে এবং তা নিরাপত্তার স্বার্থে গোপন রাখা হচ্ছে।
গত রাত্রে ইলামবাজার থানার ইলামবাজারের বারুইপুরে রাত্রিবাস করেন মৎস মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা।অন্যদিকে,রামপুরহাট থানার আয়াস গ্রামে রাত্রিবাস করেন কৃষিমন্ত্রী আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধুমাত্র জনসংযোগ নয়, মানুষের অভাব অভিযোগ শুনতে যাচ্ছেন তাঁরা।
নোট করে নিচ্ছেন তাঁদের আপ্ত সহায়করা। মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা ভি.আই.পি গাড়ি ছেড়ে টোটোতে করে ইলাম বাজারের কাছেই বারুইপুরে কানন দাসের বাড়িতে ওঠেন।চন্দ্রনাথ সিনহা থেকে চাঁদুদা হতে বেশি সময় নেননি তিনি।মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন,নিশ্চয় ভালো লাগলো।৯০ শতাংশ কাজ হয়েছে।তবে কাছে পেয়ে মানুষের একটা আবদার তো থাকবেই।
আরও পড়ুনঃ ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি ঘিরে জনসংযোগে মন জ্যোতির
ধর্মরাজ ঠাকুরের নাট মন্দিরের আবেদন করেছেন গ্রামবাসীরা।কানন দাসের বাড়ির জায়গা ছোট ছিল।তাই কর্মীদের নিয়ে তাঁর বাড়ির সামনে রাস্তার ওপারে ধর্মরাজের আটচালায় গল্প করে কাটল গোটা রাত।গোটা গ্রামের প্রায় প্রত্যেকে অনুরোধ করেন বাড়িতে খাওয়ার জন্য।
কিন্তু যেহেতু আগে থেকেই কলকাতা থেকে ঠিক করা, তাই কানন দাসের বাড়িতেই সকলের সাথে ডিনার করেন মন্ত্রী। কানন দাসের স্ত্রী অঞ্জনা দাস খাবার পরিবেশন করেন।
সাধ্যমত তিনি রান্না করেন নিজের হাতে। সাদামাটা বাঙালির পদ ছিল মেনুতে।রাত্রি এগারোটা নাগাদ সাদা ভাত,বেগুন ভাজা,ডাল,পটল আলুর তরকারি,মাছ,আলু পোস্ত, চাটনি ও পাপড়।
গ্রামের বয়স্করা আটচালায় দল বেঁধে আসেন।খাওয়াদাওয়া হল কিনা খোঁজ খবর ও কুশল বিনিময় চলে। তারপর গোটা রাত কিছুটা বই পড়ে এবং তাদের সাথে গল্প করে সময় কাটান। গ্রামবাসীদের বিশেষ পাওনা, মন্ত্রী তাঁর নিজের জীবনের অনেক অজানা কথা গ্রামবাসীদের সাথে শেয়ার করেন।
আর এভাবেই রাত গড়িয়ে সকাল হয়। গল্প আর আমোদের মধ্যে কিভাবে যে সময় কেটে যায়, টের পাননি অনেকেই। জানা গেছে, সেখ আলম, সেখ সাজাদ, সমীরণ দাস, সেখ আহমেদ ও দয়াময় বাগদীরা মন্ত্রীর সাথে দেখা করেন।
তাঁরা কেউ রাস্তাঘাট, বাড়ি আবার কেউ গ্রামের জন্য নাট মন্দির চেয়ে বসেন।সকলের হাতে ‘দিদিকে বলো’ ভিজিটিং কার্ড ও কিটস ব্যাগ তুলে দেন।শেষে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন গ্রামে।অন্যদিকে, রামপুরহাট বিধানসভার রঙ্গায়পুর ও আয়াস গ্রামে রাত্রি যাপন করেন মন্ত্রী আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আয়াস গ্রামের আটচালায় প্রায় তিন ঘন্টা জন সংযোগ করেন। রাত্রিবাস করেন দলীয় কর্মী নিখিল ঘটকের বাড়িতে।তাঁর বাড়িতেই আহার সারেন মন্ত্রী। দু পিস সবজি, মাছ ভাজা,আলু পোস্ত,ছানা ইত্যাদি।
সবার হাতে একইভাবে ‘দিদিকে বলো’ কিটস তুলে দেন।জানা গেছে,গ্রামবাসীদের কেউ কেউ ছোট খাটো সমস্যার কথা জানাতেই, মন্ত্রী নিজেই সমাধান করে দিলেন।বাকিটা তাঁর আপ্ত সহায়ক নোট করে নিলেন।সমস্ত তথ্যই ফিল্ড নোটস হিসেবে ফিডব্যাক দিতে হবে কলকাতাকে বলে জানা গেছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584