শরীয়তুল্লাহ সোহন, মুর্শিদাবাদঃ
“লালগোলা পুরাতন বাসস্ট্যান্ড চত্বরে প্রতিদিন সান্ধ্যকালীন থালায় করে মাছ বিক্রি”–লালগোলার এক প্রাচীন ঐতিহ্য। যা আজও পরম্পরা রীতিতে বিদ্যমান।
লালগোলা হল সীমান্ত সংলগ্ন বহু ইতিহাস সমৃদ্ধ এলাকা। যার দেহ ছুঁয়ে বাংলাদেশ অভিমুখে ছুটেছে পদ্মা নদী। যে সারাবছরই প্রায় শীর্ণকায় ও জরাজীর্ণ রূপে থাকে কিন্তু বর্ষার আগমনে সে হয়ে উঠে যৌবনা উত্তেলিত নারী। যার থাবায় বহুবার বসতহীন হয়েছে বহু মানুষ। তবু পদ্মা লালগোলা বাসীর কাছে পরম স্নেহের, অতি গর্বের। কারণ এই পদ্মাকে ঘিরে বহু মানুষের রুটি রোজগারের প্রধান অবলম্বন। কারণ আমরা আজ লালগোলার যে ঐতিহ্যবাহী মাছের বাজারের কথা জানছি, সেখানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় পদ্মা নদী থেকে ধরে আনা মাছ নিয়েই এই বাজার জমে উঠে।
এখানে মাছ বিক্রির পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওজোনে মাছ বিক্রির কোন রীতি এখানে নেই, তাই দাঁড়িপাল্লা ব্যবহারের কোন রেওয়াজ নেই। প্রতিদিন সন্ধ্যের প্রাক্কালে জেলেরা সারিবদ্ধভাবে নদীর বিভিন্ন মাছ থালায় সাজিয়ে নিয়ে বসেন। যাদের অধিকাংশের বাড়ি ঐ মাছ বাজার সংলগ্ন এলাকায়। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই লালগোলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও লালগোলা পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার ক্রেতারা ছুটে আসেন এই সমস্ত স্বাদু মাছের স্বাদ আস্বাদন করার একান্ত ইচ্ছায়। শুরু হয় দাম কষাকষি ক্রেতাদের পছন্দ মতো থালার মাছ নিয়ে। ক্রেতা ও বিক্রেতা দুই পক্ষ দামের ক্ষেত্রে সহমত স্থানে এলেই মাছ বিক্রি হয়।
আরও পড়ুনঃ রামনগর থেকে পাহাড়পুর পর্যন্ত বেহাল রাস্তা মেরামতের দাবি
আনুমানিক সত্তরের দশক থেকে অর্থাৎ প্রায় ১৯৭৫ সাল থেকে এই মাছের বাজার বসে আসছে। আগে এই বাজার বসত নেতাজী মোড়েই কিন্তু বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার ওদের কথা ভেবে ২০১৪ সালে গড়ে তোলেন মীন বাজার। যদিও ওরা মীন বাজার ব্যবহার করেন না। কিন্তু কেন করেন না, এর সদুত্তর কারোরই সঠিক জানা নেই। তবে ওরা এখন মীন বাজারের সামনে বসে মাছ বিক্রি করেন। আর তাদের এই মাছের বাজার পরম্পরা নীতিতে সগর্বে মাথা উঁচু করে বহুকাল চলবে পদ্মা নদীর মতোই মৃদু স্রোতে…….
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584