সীমা পুরকায়েত, দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ
সুন্দরবনে আমপান ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশ্বাস পেলেও এখনো তা মেলেনি। শেষ মেষ ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভে শামিল হলেন শতাধিক গ্রামবাসী। কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠকের পর ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই ঘোষণা সুন্দরবনের মানুষের মধ্যে কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু যত সময় গিয়েছে ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা, বারবার প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে মিলেছে তিরস্কার। পঞ্চায়েত সদস্য থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, ব্লক আধিকারিকের কাছে গিয়ে কোনো সমাধান মেলেনি। শেষ পর্যন্ত ক্ষোভে ফেটে পড়লেন দক্ষিণ সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমা ব্লকের অচিন্ত্য নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের শতাধিক গ্রামবাসী। শামিল হলেন বিক্ষোভে।
১২ দফা দাবি নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান দুলালচন্দ্র শীঠকে স্মারকলিপি জমা দেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে যাওয়ার সময় বাধার মুখে পড়ে পাথরপ্রতিমা থানা পুলিশের কাছে। এরপরই সকাল থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ কর্মসূচি। তাদের অভিযোগ, প্রধান এবং এই অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ও পাথরপ্রতিমা বিধানসভার বিধায়ক অনুগামীরাই শুধু ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছেন। অথচ যারা তৃণমূলের অনুগামী নন, তারা ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছেন না। তাদের দাবি, অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ টাকা রাজ্য সরকারকে দিতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনে শামিল হবেন ।
আরও পড়ুনঃ ত্রাণ বিলিতে অনিয়ম, ৫ বিডিওকে নোটিস দিল রাজ্য
দক্ষিণ সুন্দরবনের একাধিক জায়গায় শুরু হয়েছে আন্দোলন । অনেকের অভিযোগ, ‘যাদের পাকা বাড়ি তারাই ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে যাচ্ছে। প্রধানের আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ও তাদের আত্মীয়-স্বজনরা পাচ্ছে টাকা। অথচ প্রকৃত পক্ষে যাদের ঘর ভেঙেছে, বসতবাড়ি হারিয়েছে, চাষের জমির ফসল ধুলিস্যাৎ হয়েছে, তারা এখনো পর্যন্ত টাকা পায়নি। তাদের একটাই অপরাধ, তারা বিজেপির সমর্থক। বিরোধী দল করার অপরাধে এমন কঠিন শাস্তি তাদের পেতে হচ্ছে। তাদের স্পষ্ট কথা, যতদিন না তারা ক্ষতিপূরণ পাবেন, ততদিন পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। গ্রামবাসীদের চাপের মুখে পড়ে পঞ্চায়েত প্রধান জানান, এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে।
আরও পড়ুনঃ দিলীপের জবাবে বিস্ফোরক ফিরহাদ
অচিন্ত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চারিদিকে রয়েছে ঠাকুররন নদী, শিবুয়া নদী, মৃদঙ্গভাঙানদী, আঠারো গাছি নদী। ত্রিশ হাজার মানুষের বাস এই পঞ্চায়েতে। সরকারি ঘোষনার পরও মানুষ ক্ষতিপূরণের টাকা থেকে বঞ্চিত। অনেকেই তাদের নথি জমা দিয়েছেন। কিন্তু ক্ষতিপূরন পাননি।
২০০৯ সালে আয়েলার সময় থেকে আজও বঞ্চিত অচিন্ত্যনগরের মানুষ।সিপিএমের দূর্গ ভেঙে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। কিন্তু এখনো বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে তাদের। এখনো সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষতিপূরণের টাকা সেইভাবে পৌঁছোয় না। এবার স্বম্বিত ফিরবে, সেটাই এখন দেখার।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584