নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুরঃ
সূর্য ডোবার পরে যখন জ্যোৎস্নার আলো মিটি মিটি উঁকি মারছে তখন একদল অচেনা পাখির খুঁজতে শুরু করল তাদের আপনজনদের।
মুহূর্তের যেন আপন হয়ে গেল অচেনা বন্ধুদের। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তমলুকের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার। এই সংস্থা সব সময় পাশে দাঁড়িয়ে আপন করে নেয় পথ চলতি ভবঘুরেদের। এক মানবতার নজির।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার সময় পূর্ব মেদিনীপুর থেকে একটি সংস্থার টিম পৌঁছায় মেচেদা রেলওয়ে স্টেশনে। স্টেশন থেকে কিছু ভবঘুরে বন্ধুদের নিয়ে সজা বাগনান রেলওয়ে স্টেশন। প্রায় ৮০ থেকে ১০০ জন ভবঘুরেদের নিয়ে আনন্দে ভাসে সবাই।
কেউ বা অন্ধ, কেউ বা চলতে পারে না, কেউ বা কথা বলতে পারে না, কেউ বা সব বুঝতে পারি কিন্তু অভাবের তাড়নায় আজ তার ভবঘুরে।
দুবেলা-দুমুঠো পেট ভরে খেতে পায় না। সারাদিন ভিক্ষা করে আনবেটা খেয়ে রাত্রি যাপন করতে হয় ভবঘুরেদের।
তমলুকের এই সংস্থা তাদের আপন করে নিল কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই। তাদের নিয়ে চলল নাচ গান। ভবঘুরে না জানে না তাদের কবে জন্মদিন আজ স্বাধীনতা দিবস বা রাখি বন্ধন উৎসব। তাই ভবঘুরেদের হাতে হাত ধরে কাটা হলো কেক। দেওয়া হলো নতুন জামা কাপড়। সাত বছরের টিম্পা নতুন জামা কাপড় পেয়ে আপ্লুত। ৬২ বছরের অনামিকা মাসিমা আবার নতুন কাপড় পেয়ে চোখের কোনায় জমল আনন্দাশ্রু। অন্ধ কৃষ্ণা দুয়ার ও মানস দুয়ার বলেন আমরা পেট ভরে খেতে পাই না গো।
রোদ বৃষ্টি ঝড়ে আমাদের ঠিকানা এই রেল স্টেশন। রাত তখন দশটা।
বাগনান রেল স্টেশনে আশে পাশে যত ভিক্ষুক ভবঘেরা খবর পেয়ে চলে আসে বাগনান রেল স্টেশন। একসাথে সকলকে বসিয়ে পেট ভরে ভাত,ডাল, সবজি, মাংস মধ্যাহ্নভোজন করান। তৃপ্তিভরে আহার গ্রহণ করেন ভবঘুরে রা। সংস্থার সদস্যরা জানান আমরা গর্বিত আনন্দিত। এক শ্রেণীর মানুষ যখন আনন্দের উৎসাহিত হন আর এক শ্রেণীর মানুষ রাস্তাঘাটে স্টেশনে না খেয়ে রাত্রি যাপন করে খুব কষ্ট হয়। শুধু আজ নয় আমরা সব সময় এদের পাশে থাকি।
আরও পড়ুনঃ দল বদলের জল্পনা উস্কে দিয়ে দিল্লিতে সব্যসাচী
আমাদের সাধ্যের মধ্যে যতটা সম্ভব এদের পাশে দাড়াই। এদের সাথে সময় কাটাই কারণ ভবঘুরেদের কোনো বন্ধু নেই কোন আত্মীয় পরিজন নেই। আমরা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে একসাথে বসে খাওয়া দাওয়া থেকে আনন্দ উপভোগ করি একসাথে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584