গুরুত্ব না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ আচার্য, জবাবে চিঠি শিক্ষা দফতরের

0
58

নিজস্ব সংবাদদাতা ,কলকাতাঃ

রাজ্যপাল রাজ্যের সংঘাতের ফের চূড়ান্ত মাত্রায়! আচার্য হওয়া সত্ত্বেও তাকে রাজ্যে কোন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে ফের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য প্রশাসনকে বিঁধলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ছ’মাস ধরে তার চিঠির কোনো উত্তর দেননি বলে অভিযোগ করলেন।

Jagdeep Dhankhar | newsfront.co
ফাইল চিত্র

করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা নিয়ে আলোচনার জন্য ভার্চুয়াল কনফারেন্সের ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এর জন্য সমস্ত উপাচার্যদের মেল পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের কাছে আমন্ত্রণ না আসায় উপাচার্য পরিষদের তরফে জানানো হয়, তারা এই বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না। তারপর থেকেই যারপরনাই ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল। শিক্ষাকে রাজনীতি মুক্ত করার কথা বলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। এবার বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ফের শিক্ষা রাজনীতিকরণের অভিযোগ তুললেন রাজ্যপাল।

বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর বলেন, ‘রাজ্যে শিক্ষায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যাঁরা কলেজে ভর্তি হয়েছেন, তাদের আর্থিক শোষণ করা হয়েছে। গত ২ বছর ধরে এই পরিস্থিতি চলছে। শিক্ষায় অবহেলা আঘাত করে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। তিনি বলেন, এই রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থা রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত। রাজনীতির ফাঁস ক্রমেই শিক্ষাব্যবস্থার উপর চেপে বসছে।’

আরও পড়ুনঃ বিধায়ক মৃত্যুতে খুনের মামলা দায়ের করল সিআইডি, অস্বস্তিতে জেলা পুলিশ

রাজ্যপালের দাবি, ‘উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকের কথা বললেও শোনেনি রাজ্য। তাঁর মতে দেশের কোনও রাজ্যে এমন পরিস্থিতি নয়। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখি। কী করে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য প্রশাসন, সেটা জানতে চাই। ৬ মাস পরেও মুখ্যমন্ত্রী উত্তর দেওয়ার সময় পাননি।’

রাজ্যপাল জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মাথায় রেখে ভার্চুয়াল বৈঠকের আবেদনও করেছিলেন। বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল বৈঠকের প্রস্তাব দিই। সরকার বলে, এমন পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল বৈঠকের নিয়ম নেই।’

আরও পড়ুনঃ করোনায় আক্রান্ত কর্মী, ১০ দিন বন্ধ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা: স্পিকার

রাজ্যপালের আরও দাবি, রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থার মান নামছে, প্রাক্তন উপাচার্যরাও এ নিয়ে একমত। তিনি বলেন, ২৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষামন্ত্রী নিশ্চয়ই এ নিয়ে অবহিত। কোনও দেশ ঠিকঠাক শিক্ষা পেলে তবেই এগোতে পারে। রাজ্যের মানুষের কাছে সরকারের দায়বদ্ধতার কথা বলাই আমার কাজ। পড়ুয়াদের এক বছর নষ্ট হলে, ক্ষতিপূরণ হবে কীভাবে? এই সমস্ত ইস্যুকে অবহেলা করা হচ্ছে। গোটাতেই পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। আমার সঙ্গে আলোচনা করছেন না কেন?’

এদিকে, রাজ্যপালের এই ভূমিকার পাল্টা সমালোচনা করেছে রাজ্য প্রশাসন। শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ‘আচার্য-উপাচার্য ভার্চুয়াল বৈঠকের অনুমোদন সরকার দেয়নি।বিশ্ববিদ্যালয়-আচার্য যোগাযোগ অনুমোদন সাপেক্ষ। শিক্ষা দফতরের মারফৎ করতে হবে যোগাযোগ। আচার্যের কোনও সচিবালয় থাকতে পারে না। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৮(৫) নম্বর ধারায় উল্লেখ রয়েছে।

রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে রাজ্যপালের অভিযোগ থাকলে শিক্ষা দফতরকে জানাতে হবে। বলা হয়েছে, ‘শিক্ষা দফতরকে জানালে বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার আগে রাজ্যপাল এভাবে উপাচার্যদের ব্যক্তিগত মেল করে কনফারেন্সে যোগ দেওয়ার কথা বলতে পারেন না।’

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here