নবনীতা দত্তগুপ্ত, কলকাতাঃ
জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
চ্যালেঞ্জ টু, বর বউ খেলা-তে করেছিলাম তাপস দা’র সঙ্গে। টেলিভিশনেও কাজ করেছি ‘দ্বিরাগমন’ ধারাবাহিকে। খুব বড় মাপের অভিনেতা ছিলেন। সকলের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, তাঁরা যেন তাপস দা’কে অভিনেতা তাপস পাল হিসেবেই মনে রাখেন।
তাঁর অন্যদিকগুলো যেন মনে না রাখেন। রাজনীতিতে আসার অনেক আগে তিনি সেলেব্রিটি হয়েছেন, স্টার হয়েছেন। গোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি তাঁকে স্যালুট করে সবসময়। তাপস দা’র সঙ্গে আমার শেষ দেখা মিঠু দা’র (অভিনেতা অভিষেক চ্যাটার্জি) মেয়ের জন্মদিনে।
খুব একটা ভাল লাগছিল না সেদিন দাদাকে। অত বড় মাপের এক অভিনেতাকে এই বয়সেই ধরে ধরে নিয়ে যেতে হচ্ছে অন্যদের- এটা দেখা যাচ্ছিল না। আমার ব্যক্তিগত মতে, দাদা নিজের সঙ্গে সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি নিতে পারেননি।
অত বড় মাপের অভিনেতাকে যখন নানাভাবে অপদস্থ হতে হয় তখন ভাল না লাগারই কথা। শিল্পী মানুষ, গুণী মানুষ তাপস দা। তাঁর কি ওরকম জীবন মানায়? যাক গে, আজ আর সেই সব কথা না তোলাই ভাল। তিনি আজ সবার সব কথার ঊর্ধে। ভাল থাকুন তাপস দা।
আরও পড়ুনঃ বন্ধ হল দাদার কীর্তি, শোকস্তব্ধ টলিউড
সোনালী চৌধুরী
আমি আমার বড় পর্দার প্রথম কাজে বাবার ভূমিকায় পেয়েছিলাম তাপস দা’কে। ছবিটা রিলিজ করেনি ঠিকই তবে তাপস’দা’র সঙ্গে আলাপটা হয়ে গিয়েছিল তখন। আমি যখন কেরিয়ার শুরু করছি তাপস’দা তখন স্টার। খুব কেয়ারিং ছিলেন মানুষটা।
এরপর ‘আটটা আটের বনগা লোকাল’-এ একসঙ্গে কাজ করি। সেই সময় অনেকদিন টাকীতে শুট হয়েছে আমাদের। তখন প্যাক আপ হতে রাত হয়ে গেলে বারবার বলতেন- “সাবধানে বাড়ি যেও।” এরকম ছিলেন তাপস দা।
তাপস’দা’র চলে যাওয়ার খবরটা শোনার পর থেকে আমার মনটা খুব খারাপ। সাংঘাতিক বাঙালি ছিলেন মানুষটা। দেখলেই মনে হত খাঁটি বাঙালি। দাদার কীর্তি, গুরুদক্ষিণা যাঁরা দেখেছেন তাঁরা আমার সঙ্গে এক মত হবেন। মনটা ভাল নেই আমার। তাপস’দা নেই এটা ভাবতেই অদ্ভুত লাগছে। সময়ের অনেক আগে ফাঁকি দিল তাপস’দা।
ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তীঃ
তাপস’দার সঙ্গে আমি ঠিক দুটো ছবিতে অভিনয় করেছি। শিবাজি আর শহুরে মেয়ে গ্রামের ছেলে। ওই সময় দেখা হত। মেক আপ ভ্যানে কথা হত, আড্ডা হত খুব। ভীষণ খাদ্যরসিক ছিলেন। একইভাবে আড্ডাবাজ। আর আমিও খুব কথা বলতে ভালোবাসি। তাই জমত ভাল।
সেই সব স্মৃতি ঘিরে তাপস’দা তো আমার কাছে বেঁচে থাকবেনই। তা ছাড়াও আরেকটা কারণে তাপস’দাকে আমি কোনওদিন ভুলব না। একবার একটা খুব বড় রকমের সমস্যায় পড়েছিলাম। দাদাকে বলেছিলাম আমার সমস্যার কথা।
দাদার কথাতেই সেই সমস্যা থেকে খুব তাড়াতাড়ি নিস্তার পেয়েছিলাম। পরে ফোন করে আমার কাছ থেকে নিজেই খোঁজ নিয়েছিলেন সব ঠিক আছে কিনা। তখন তাপস’দা অলরেডি এম পি হয়ে গিয়েছেন। তাপস’দা যেমন হাসিখুশি ছিলেন তেমনই উপকারী মানুষ ছিলেন।
কেউ নিজের সমস্যার কথা বললে নিজে এগিয়ে আসতেন সাহায্য করতে। আমি চাই তাপস’দাকে সবাই অভিনেতা তাপস পাল হিসেবেই মনে রাখুক। তাপস’দা একবার একটা ছবি প্রযোজনা করবেন বলে ভেবেছিলেন।
সঙ্গী ছিলেন শতাব্দী রায়ও। সেখানে আমাকে অভিনয় করাতে চেয়েছিলেন। যদিও কাজটা এগোয়নি। তবু ওটা আমার বড় পাওনা ছিল। ওঁর মতো একজন স্টার আমায় দিয়ে কাজ করাতে চেয়েছিলেন এটা ভেবেই আমি অবাক হয়ে গেছিলাম। আগামী দিনে সেই ভাল লাগাকে পাথেয় করেই এগিয়ে চলব।
অনেককে দেখছি অনেক রকমের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করছেন দাদার। তার মধ্যে একটি তাপস দা’রই নয়। তাঁর মতোই খানিকটা দেখতে হয়ত। আমার অনুরোধ ওই ছবিটা যেন কেউ আর পোস্ট না করেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584