শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
মণীশ শুক্লা খুনে তাকে যে ফাঁসানোর চেষ্টা হতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা আগেই জানিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। আর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশের হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপের ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি চ্যাট যেন সেই ঘটনারই প্রত্যক্ষ প্রমাণ দিয়ে দিল।
ওই চ্যাট প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো ডামাডোল শুরু হয়েছে পুলিশের অন্দরেও। পুলিশ হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপের ওই চ্যাট কে ফাঁস করল, পুলিশের ভিতরের খবর কে অর্জুন সিংয়ের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে, সেই লক্ষ্যে বিভীষণ-তল্লাশি চলছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এবং রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি-র অন্দরে।
সিআইডি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই পুলিশের একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আধিকারিকদের সন্দেহ, গ্রুপের কোনও সদস্যই ফাঁস করেছেন ওই চ্যাট। তবে যে আধিকারিকদের নাম ওই চ্যাটে দেখা গিয়েছে তাঁদের দাবি, গোটাটাই জাল। কেউ জাল একটি স্ক্রিনশট বানিয়েছে। জাল যদি হয়, তা হলে ঘটনার পরেই কেন ওই গ্রুপ ভেঙে দেওয়া হল তার কোনও উত্তর দেননি রাজ্য পুলিশের আধিকারিকরা।
আরও পড়ুনঃ মর্যাদা পুনরুদ্ধারে নয়া জোট উপত্যকায়
কয়েক দিন আগে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ একটি হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপের ‘চ্যাট’ প্রকাশ্যে আনেন। অর্জুনের দাবি, ওই গ্রুপের সকল সদস্য রাজ্য পুলিশের ১৯৯৮ ব্যাচের আধিকারিক। কেউ বর্তমানে সিআইডিতে, আবার কেউ বর্তমানে দক্ষিণ ২৪ পরগনা বা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন থানা বা জিআরপিতে কর্মরত। ওই চ্যাটের স্ক্রিনশট দেখিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ‘ এভাবেই মণীশ শুক্ল খুনে আমাকে ফাঁসাতে চাইছে সিআইডি।”
আরও পড়ুনঃ বেলেঘাটা বিস্ফোরণ কাণ্ডে খোঁজ শুরু এনআইএ-র
কি রয়েছে ওই চ্যাটে? এক আধিকারিককে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে, ‘শুনছি চার্জশিটে অর্জুনের নাম আছে, খবর পেলাম’। তার জবাবে অন্য এক আধিকারিক লিখেছেন, ‘ওটা তো রাখতেই হবে’। সেই সঙ্গে হাসির ইমোজি। এর পরেই মন্তব্য করা হয়েছে এক আধিকারিক সম্পর্কে, তিনি আবার মণীশ খুনের মামলায় যুক্ত।
সিআইডি সূত্রে খবর, অর্জুন ওই চ্যাট প্রকাশ করার পরেই শোরগোল পড়ে যায় গোয়েন্দা সংস্থার অন্দরমহলে। রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা এবং সিআইডির এক কর্তা ওই আধিকারিকদের কাছে ব্যাখ্যা চান, কী ভাবে এ রকম চ্যাট প্রকাশ্যে এল? সূত্রের খবর, রাজ্য পুলিশের ১৯৯৮ ব্যাচের আধিকারিকদের প্রায় সবাই রয়েছেন ওই হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপে।
এক আধিকারিক বলেন, ‘‘১৯৯৮ সালের আধিকারিকদের ওই গ্রুপ থেকেই এর আগে আরও এক বার চ্যাট ফাঁস হয়েছে।” শীর্ষ কর্তাদের সন্দেহ, রাজ্য পুলিশের আধিকারিকদের অনেকেই গোপনে যোগাযোগ রাখছেন বিজেপি-র বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে। পুলিশের অন্দরে চলা কথাবার্তা আগে ভাগে ফাঁস করে দিচ্ছেন। কে এই ঘরশত্রু বিভীষণের কাজ করছেন, আপাতত তার খোঁজেই চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584