পল্লব দাস,বিশেষ প্রতিবেদনঃ
ডিজিটালাইজেশন চলছে দেশ জুড়ে। বিজ্ঞান যেমন উন্নত হচ্ছে পাল্লা দিয়ে এগোচ্ছে জীবনযাত্রার মান।প্রত্যেক দিনের কর্মব্যস্ততা গিলে খাচ্ছে বাকি সবটুকু,নিজের জন্য সময় বলতে মোবাইল ফোনে মুখ গুঁজে কিছুক্ষন।কখনো সোশ্যাল মিডিয়া আবার কখন এমনি এটাসেটা সার্ফিং,কিছু ভালো না লাগলে ‘ভিডিও গেম’, ব্যাস এটুকুই তো।কম দামে স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট প্রভাবিত করেছে তরুণ প্রজন্ম কে।হাতে হাতে এখন স্মার্টফোন,মানুষ সেটা ব্যবহার করতে গিয়ে কতখানি স্মার্ট হয়েছে বা আদৌ হয়েছে কি না সেটা পরের প্রশ্ন কিন্তু একটা বিষয় , উন্নয়নশীল দেশে সব ইতিবাচক হিসেবে ধরে নেওয়াটাও কি খুব সমীচীন হবে !
ইন্টারনেট আর স্মার্টফোনের দুনিয়ায় ব্যক্তি নিজে খুব একা হয়ে পড়ছে,সময়ের আগেই চলে আসছে পরিণত হওয়ার চিন্তা , মাঠের খেলোয়াড় কমে আসছে আর ছাদ , ড্রয়িংরুম এর ভিডিওগেম খেলোয়াড়দের সংখ্যা বাড়ছে উত্তোরত্তর।মা বাবা গর্ব করে বলছেন তাঁদের সাড়ে চার বছরের বাচ্চা টি নাকি মোবাইলের মাস্টার, মানে সব ই জানে আর কি ; কিছুক্ষন পর ওনারা অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের ফলে হওয়া সমস্যার কথা বলতে শুরু করেছেন।সাম্প্রতিক কিছু মোবাইল গেম ঝড় তুলেছে সারা বিশ্বে । ‘মোমো’ হতে পারত এটা সুন্দর একটি খাবার যেরকম আমরা জানতাম ,কিন্তু আজ এই মোমো নামের গেম এর ত্রাস দেশ জুড়ে । ‘মোমো’চ্যালেঞ্জ সুইসাইড গেমটি ইতিমধ্যে শেষ করেছে বেশ কিছু তাজা প্রাণ। হতাশাগ্রস্ত তরুণ প্রজন্মকে চিহ্নিত করে খুব পরিকল্পনা মাফিক সোশ্যাল মিডিয়া দ্বারা এরা ফাঁদ পেতে থাকছে,গেমের শেষে থাকছে মৃত্যুর হাতছানি।২০১৬ সালে ভ্যানিলা গ্যালারি শিল্প প্রদর্শনীতে মিদেরী হায়াসি নামে একজন শিল্পী একটি ছবি আঁকেন ঐ ছবিটি পরবর্তীতে মোমো গেম এর লোগো হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ।
কিছুদিন আগে ও ‘ব্লু-হোয়েল’ নামে একটি গেম ত্রাসের সৃষ্টি করে ; একের পর এক ধাপ পার হতে হতে আর অন্তিম পর্বে মৃত্যু দিয়ে শেষ হতো সব খেলা। কিউরেটর দ্বারা পরিচালিত অনলাইন এই গেম গুলো আত্মহত্যার প্রবেশের পথ ছাড়া কিছু নয়। বিকৃত রুচিসম্পন্ন কিছু মানুষের প্রয়াসে একের পর এক অসচেতন প্রাণ নষ্ট হচ্ছে।পশ্চিমবঙ্গে এই গেম আক্রান্ত সংখ্যা নেহাত কম নয়,এগুলি আটকানোর জন্য প্রশাসনিক ভাবে তৎপরতার সাথে সাথে সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন ।
সুপারসেল’ নামে একটি কোম্পানি ২০১৩ সালে একটি গেম বাজারে আনে ‘ক্ল্যাশ অব ক্লেন’ ।
অনলাইন এই গেমের জনপ্রিয়তা এতটাই বেড়ে যায় যে ,মাত্র এক বছরের মধ্যে মিলিয়ন এর সংখ্যায় মানুষ এটি ইন্সটল করে খেলতে থাকে।এই গেম মানুষকে এতটাই নেশাগ্রস্থ করে তোলে যে সময় চলে যাওয়ার আভাস ও সে পায় না । এমন কথা ও শোনা যায় যে বাড়িতে সময় না দিয়ে শুধু গেম খেলার জন্য অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। ‘কিং অব গ্লোরি ‘ অনলাইন যুদ্ধ সংক্রান্ত এই গেমটি চীন সেনাবাহিনীতে এতটাই জনপ্রিয় হয় যে বিরূপ প্রভাব এড়ানোর জন্য প্রশাসনকে ব্যাবস্থা নিতে হয়েছে।দিনের কিছু সময় গেমটি চালু রাখা হয়।
সব বিষয়ে ভালো মন্দ দুটি দিক আছে তাই সচেতনতা অবলম্বন করে চললে বিপদ এড়ানো সম্ভব। মোবাইল থেকে অনেক তথ্য খবর আমরা পাই , তেমনি কিছু বিপদ এড়িয়ে যাওয়া টাও জরুরি।আংশিক নয় পূর্ন খবর রাখতে হবে তবেই ইন্টারনেট স্মার্টফোনের সম্পূর্ন বিষয় জানা যাবে।
আরও পড়ুনঃ মাদার গোষ্ঠীর কাছে পরাস্ত যুব গোষ্ঠী
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584