হিলের বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মশালা

0
78

নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

অবিভক্ত মেদিনীপুর চিরকালই বন্যপ্রাণের আকরভূমি হিসেবে সমাদৃত। আজ জেলাভাগের পরেও বনভূমির সেই বৈচিত্র্য বিন্দুমাত্র কমে যায়নি। জেলার মাটি থেকে আজও বিভিন্ন সময় প্রাপ্ত নানান দুর্লভ ও বিপন্ন বন্যপ্রাণীর খোঁজ অবাক করে চলেছে গবেষক থেকে সাধারন মানুষদের। দুঃখের বিষয় এখনও আমাদের জেলায় প্রাপ্ত বন্যপ্রাণের কোনও সম্পূর্ন তালিকা নেই। তার উপর প্রতিবছর সংগঠিত বন্যপ্রাণী শিকারের ফলে আজ জেলার জঙ্গলগুলিতে বন্যপ্রাণের পরিমাণ ও সংখ্যা হু হু করে কমছে। সাধারন মানুষের শিক্ষা ও বিষয় জ্ঞানের অভাবকে অনেকেই এর জন্য দায়ী করলেও তা ইতিমধ্যে ভুল প্রমাণ করেছেন লালগড় থানার ভূমিজ ধানশোলা গ্রামের বাসিন্দারা।

নিজস্ব চিত্র

এই গ্রামের যৌথ বনরক্ষা কমিটি তাদের অভূতপূর্ব কাজের জন্য এবার পেয়েছে বন দপ্তরের বিচারে সেরা বনরক্ষা কমিটির সম্মান। রত্নাকরের মাটিতে দাঁড়িয়ে এভাবে আজকের বাল্মিকীদের এই মহাগাথা রচনা নজর কেড়েছে সবার। গ্রামের মানুষদের এই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়ে তাদের সর্বতোভাবে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ালো বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা হিল (হিউম্যান এন্ড এনভায়রনমেন্ট অ্যালায়েন্স লীগ)। মেদিনীপুর বন দপ্তরের সহযোগিতায় হিলের উদ্যোগে বন রক্ষা কমিটির সদস্যগন এবং শতাধিক গ্রামবাসীদের নিয়ে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা হয়ে গেল ভূমিজ ধানশোলা গ্রামে। আমাদের দেশের বনাঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতির পাশাপাশি এলাকায় পাওয়া যাওয়া বিভিন্ন বন্যপ্রাণীদের সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা দেওয়া হয়। শুরুতেই হিলের সদস্য জুবিলী গাঙ্গুলির সপ্রতিভ পরিচয়প্রদান পর্বের পর হিলের সভাপতি অর্ক সরকার তার বিস্তারিত উপস্থাপনার মাধ্যমে জানান, বন্যপ্রাণীরা কিভাবে আমাদের আজান্তেই আমাদের বিবিধ উপকার করে এবং তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হলে সমগ্র বন এবং বনকেন্দ্রিক মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। গ্রামবাসীদের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন ১৯৭২ এবং অরণ্যের অধিকার আইন ২০০৬ সম্পর্কে ধারনা দেওয়া হয়। ভারতীয় আইন আদিবাসী মানুষের হাতে অরণ্যের অধিকার দিলেও তার বন্যপ্রাণী দেশের ঐতিহ্য এবং এই দুই আইন যে প্রথাগত শিকারকে নিষিদ্ধ এবং দন্ডনীয় অপরাধ বলে ঘোষনা করা হয়েছে তা জানানো হয়। ‘হিলের’ প্রধান উপদেষ্টা পেশায় আইনজীবী মেঘনা ব্যানার্জী বলেন-“ভূমিজ ধানশোলার মানুষ বন সংরক্ষণের ব্যাপারে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমরা চাই ওনারা এবার বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষণের ব্যাপারে এগিয়ে আসুন। আমরা বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগ এবং খারাপ পরিস্থিতির ব্যাপারে একযোগে কাজ করে এখানকার মানুষ ও বন্যপ্রাণের সুস্থ সহাবস্থান গড়ে তুলব।”

আরও পড়ুনঃ অধ্যাপক থেকে গবেষক-পড়ুয়া সকলের কাছে সমাদৃত ‘একবিংশ’

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here