সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
বর্ধমানের মানকরের পশ্চিমপ্রান্তে বিশ্বাস পরিবারের দুর্গাপূজা অতিক্রম করল তিনশো ষাট বছর। পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিশ্বাসদের আদিবাড়ি ছিল দিগনগর। পূর্ব পুরুষ নীলমাধব গাঙ্গুলি ছিলেন নিঃস্বন্তান। কথিত আছে, এক সাধু পুরুষ তাঁকে মানকরে এসে দুর্গাপূজা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মতো তিনি মানকরে আসেন এবং পূজা শুরু করেন। লাভ করেন পুত্র সন্তান। নীলমাধব গাঙ্গুলির পৌত্র ছিলেন মহেশ বিশ্বাস।
কাশ্মীর রাজ স্টেটের দেওয়ান পদে তিনি কাজ করতেন। এই সময় থেকেই বিশ্বাস বাড়ির দুর্গাপূজা অন্য মাত্রা পেতে শুরু করে। মহেশ বিশ্বাস মানকরে নিয়ে আসেন নেপালের রাজকন্যা মা জ্ঞানানন্দ সরস্বতীকে ও আরো নানা সাধুজনকে। পরিবারের বর্তমান সদস্য সুজিত বিশ্বাস বলেন, নিয়মনিষ্ঠা মেনে এবং অতীতের পূজার রীতি মেনেই পূজা করা হয়। প্রত্যেকদিন অন্নভোগ হয় তবে কোন মহিলার স্পর্শ নিষিদ্ধ। তাই ব্রাহ্মনরাই ভোগের সমস্ত আয়োজন করে। বলি প্রত্যেকদিন হয়। তবে অষ্টমীর দিন মিষকালো পাঁঠা বলির বিধান রয়েছে।
আগে কামান দাগা হতো কিন্তু কয়েকবছর আগে বর্ধমানে সর্বমঙ্গলা পূজায় এই কামান দাগা নিয়ে দুর্ঘটনা ঘটার পর থেকে এই প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে বন্দুক দিয়ে গুলি ছোঁড়া হয়। দেবীর ভোগের জন্য সপ্তমীর দিন সাত সের, অষ্টমীর দিন আট সের, নবমীর দিন নয় সের চাল নেওয়ার রীতি রয়েছে। পাশাপাশি নবমীর দিন নর-নারায়ন সেবার মাধ্যমে মানকর সহ আশেপাশে গ্রাম গুলি থেকে আগত মানুষদের দেবীর প্রসাদ বিতরণ করা হয়। কদমা নিবেদন করা হয় দেবীকে তার ওজন এক একটির আট থেকে নয় কেজি। অরুণ বিশ্বাস বলেন, দুর্গা পূজার সময় রূপার ঘটে পাশের পুকুর থেকে জল আনা হয় এবং পারিবারিক লক্ষীদেবীকে নিয়ে আসেন বাড়ির বউরা। এক্ষেত্রে যার নতুন বিয়ে হয়েছে তাঁকে দেওয়া হয় সবার সামনে। মশাল জ্বালিয়ে বলি ও পুজার রীতি রয়েছে এই পূজায়। বিশ্বাস বাড়ির এই পুজা ঐতিহ্যকে বহন করে নিয়ে চলেছে বলে মন্তব্য করেন মানকরের বাসিন্দা বাসুদেব পাল।
আরও পড়ুনঃ শিক্ষক নিয়োগ বিতর্কে রণক্ষেত্র ইসলামপুর,মৃত এক ছাত্র
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584