মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
উত্তর ভারতের পর এবার এরাজ্যেও গো-রক্ষা বাহিনীর হাতে নিগৃহীত হতে হল এক যুবককে। কোচবিহার কোতোয়ালি থানার তল্লিগুড়ি এলাকায় ওই ঘটনা ঘটেছে। যুবক গুরুতর আহত অবস্থায় কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।ওই যুবকের নাম আহাদুল ইসলাম। তাঁর বাড়ী কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের রাশিডাঙ্গা দ্বিতীয় খণ্ড এলাকায়।
শনিবার সকাল ১১ টা নাগাদ সে মোটর সাইকেলে করে বাড়ী থেকে শ্বশুরবাড়ী চিলাখানার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।পথে তল্লিগুড়ি এলাকায় একদল যুবক নিজেদের গো-রক্ষা বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দিয়ে ওই যুবককে ধরে একটি ঝোপের মধ্যে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধোর করে।এতে ওই যুবক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফিরে আসার পর মোবাইলে লক খুলতে দেওয়া হলে দাদার কাছে ফোন করে সমস্ত ঘটনার কথা জানান আহাদুল। এরপর পুলিশ সাথে নিয়ে মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে আহাদুলকে উদ্ধার করা হয়।সে এখন কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই যুবক হাসপাতালে শুয়ে অভিযোগ করে বলেন, “ঘটনার পর দুদিন কেটে গেল, থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ জানানো হয়েছে কিন্তু আমাকে ভর্তি করে দিয়ে যাওয়ার পর আর জিজ্ঞাসাবাদ করতে আসে নি।কেউ এখনও গ্রেপ্তারও হয় নি। এরাজ্যেও যদি এমন হতে থাকে তাহলে কোথায় গিয়ে নিরাপত্তা পাবো।” ওই ঘটনা নিয়ে কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডেকে মোবাইলে কথা বলতে চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি।
এদিকে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভার ৩ দিন আগে ওই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসায় কোচবিহারে ব্যাপক রাজনৈতিক টানা পোড়েন শুরু হয়েছে।৭ ডিসেম্বর ঘটনাস্থল তল্লিগুড়ি থেকে সামান্য দূরে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভাস্থল ঝিনইডাঙ্গা এলাকা।তার আগে ওই এলাকায় কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বিজেপি জানে অমিত শাহর সভায় লোক হবে না। তাই সভার আগে ওই এলাকায় উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে গণ্ডগোল পাকাতে ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এর পিছনে কারা রয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলবো।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি ব্রজগোবিন্দ বর্মণ বলেন, “ ঠিক কি ঘটেছে, কারা এর সাথে জড়িত, তা আমাদের সঠিক ভাবে জানা নেই। তাই না জানা বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজী নই।”
উত্তর ভারতে গো রক্ষা বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে।এনিয়ে খুনের ঘটনাও ঘটেছে সেখানে কিন্তু এরাজ্যে এমন ঘটনা কথা আগে সেভাবে শোনা যায় নি। তবে গোপনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গো-রক্ষা বাহিনী সহ বেশ কিছু সংগঠন গড়ে ওঠার ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তল্লিগুড়ির ওই ঘটনার পিছনে সত্যি সত্যি গো-রক্ষা বাহিনী মত কোন সংগঠন জড়িত থাকলে উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584