পিয়া গুপ্তা, উত্তর দিনাজপুরঃ
ব্যাঙ্ক থেকে গচ্ছিত সোনা রেখে লোন নেওয়ার পর সেই সোনা ফেরৎ নিতে গেলে দেওয়া হয় ইমিটেশনের গহনা দেওয়ায় ক্ষোভ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে।কালিয়াগঞ্জের মদনপুর শাখার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঘটনা।
জানা যায়, বাঘন বটতলীর জ্যোৎস্না বর্মন নামে এক ব্যক্তি আজ থেকে তিন বছর আগে তার নিজের গলার সোনার হার বন্ধক রেখে এই ব্যাঙ্ক থেকে ৭৫ হাজার টাকা লোন নিয়েছিল কৃষিকাজের জন্য। তিন বছর ধরে সেই লোন আস্তে আস্তে শোধ করছিল। আর যখন পুরো লোনটাই সে শোধ করে দিল তখন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাকে গলার হারের পরিবর্তে দেয় হাতের বালা। যদিও সেই বালা তাকে দেওয়া হয়, সেটা তো আবার ভেজাল। অর্থাৎ সেই বালা ইমিটেশনের বলেই অভিযোগ।
আর এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে জ্যোৎস্না বর্মন এবং তার পরিবার। পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে বাধ্য হয়ে পুলিশকে ব্যাঙ্কে আসতে হয়। এরপর এই ঘটনা জানাজানি হতেই একে একে স্থানীয় অনেক বাসিন্দারাই ব্যাঙ্কে এসে জ্যোৎস্না বর্মনের হয়ে সওয়াল করেন ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অনিমেষ দাসকে।কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তার কোন সঠিক জবাব দিতে পারেননি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য এটি কিভাবে হল কেন হল সেটা তারাও বুঝতে পারছেন না। তবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের চোখেমুখে যে একটা আতঙ্কের ছাপ ছিল তা তাদের দেখলেই বোঝা গিয়েছিল। বারেবারে তাদের দেখা যাচ্ছিল তাদের ভিতরের ঘরে গিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে। এদিকে জ্যোৎস্না বর্মন এবং তার পরিবারের বক্তব্য তারা যতক্ষণ না পর্যন্ত গলার হার পাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ব্যাঙ্ক থেকে যাবেন না কোথাও।
অন্যদিকে এই ঘটনা জানাজানি হতেই জ্যোৎস্না বর্মনের মত অনেকেই সেখানে হাজির হন ব্যাঙ্কে । এদিকে গোল্ড রেখে লোন নেওয়ার পর কিভাবে একটি সরকারি ব্যাঙ্ক থেকে এই ধরনের একটি জালিয়াতি চক্র করতে পারলো সে নিয়ে অনেকেই স্তম্ভিত হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুনঃ সরকারী সাহায্যের প্রত্যাশায় অর্ধাহারে দিন কাটছে অনাথ আশ্রমের শিশুদের
জ্যোৎস্না বর্মনের দাবি, তিনি রেখেছিলেন গলার হার আর তিনি যখন লোন শোধ করলেন তখন পেলেন হাতের বালা। এটা কিভাবে সম্ভব হলো।
এদিকে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অনিমেষ দাস জানান, জ্যোৎস্না বর্মন যে অভিযোগ করছে তা কোন সত্যতা আছে বলে তিনি মনে করেন না কারণ তাকে যখন বালাটি দেওয়া হয়েছিল তখন সে বাড়ি চলে গিয়েছিল। পরবর্তীতে এসে সে ব্যাঙ্কে বলে যে তার গলার হার ছিল না। অন্যদিকে এই ঘটনার পর ঘটনাস্থলে অর্থাৎ ব্যাঙ্কে গিয়ে হাজির হন কালিয়াগঞ্জ থানার মেজবাবু শংকর রায়। তিনি জ্যোৎস্না বর্মন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে সবকিছু শোনেন। এদিকে আজ এই ঘটনার পর ব্যাঙ্কের পরিষেবা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সমস্ত গ্রাহকরা তাদের ব্যাঙ্কের টাকা ঠিকমতো গচ্ছিত আছে কিনা এবং যে সোনা বন্ধ রেখে লোন নেওয়া হয়েছে সেই সোনা ঠিকঠাক আছে কিনা সেই ব্যাপারে খুব চিন্তায় পড়ে যান। সন্ধ্যা অবধি ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন জ্যোৎস্না বর্মন সহ স্থানীয় ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584