পাঠকের মতামত-“আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক থিওলজি তুলে দেওয়া হচ্ছে -এই অপপ্রচার বন্ধ হোক”-ফারুক আহমেদ।
পিছিয়ে পড়া সমাজের শিক্ষা প্রসারে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবেগ ও ভালবাসার জায়গা। এই বিশ্ববিদ্যালয় কখনই বিপদে চালিত হতে পারে না। আমরা আমাদের পরম ভালবাসায় গড়ে তোলা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষা করবই।
আসুন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমি আওয়াজ তুললাম। আপনিও আওয়াজ তুলুন। রাজনৈতিক নেতাদের আখের গোছাতে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়নি।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল তথা চ্যান্সেলর এর প্রতিনিধি হয়ে এসেছেন আর এক দক্ষ প্রশাসক, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রাক্তন উপাচার্য, বর্তমানে এলাহাবাদ সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রতন লাল হাংলু মহাশয়। তাঁর সাহায্য ও সহযোগিতায় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আগামীতে আরও ভালো জায়গায় যাবে এই আশা আমাদের।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীতে আরও নতুন নতুন বিভাগ চালু করতে উপাচার্য মহাশয় উদ্যোগী হবেন এই আশা রাখি।
কিন্তু কিছু উস্কানি প্রদানকারী রাজনৈতিক ব্যক্তি আর বর্তমানে কিছু স্বঘোষিত সংখ্যালঘু নেতা ও বিশেষ সুবিধা নেওয়া স্বার্থপর ‘গাঁয়ে মানেনা আপনি মড়ল’-দের পরোক্ষ ইন্ধনে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের ভবিষ্যতকে নষ্টের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।আন্দোলন কারীরা দাবী করছেন উপাচার্য ইসলামী থিওলজী পাশ কোর্স তুলে দিয়েছেন।তাদের আরো দাবি ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীদেরও পাশ করিয়ে দিতে হবে।এই অসভ্য আচারব্যবহার কাম্য নয়। আমরা তাদের সঠিক পথে এবং পঠনপাঠন অব্যাহত রেখে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আবেদন রাখছি।
এখন আবার নতুন করে অভিযোগ করছে আন্দোলনকারীরা যে উপাচার্য সাহেব ইসলামিক থিওলজি অর্থাৎ কোরান হাদীসকে ধ্বংস করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন।
আসুন এই বিষয়ে কিছু তদন্ত করে আসল সত্য তুলে ধরি।
এবারে দেখে নেওয়া যাক কোরান ও হাদিসের উন্নয়নের জন্য উপাচার্য কি কি উদ্যোগ নিয়েছেন।
হাদিস ও কোরান নিয়ে যারা পড়াশোনা করেন তাদের উচ্চশিক্ষার জন্য আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এই বাংলায় আলোর দিশা।
ইসলামিক থিওলজি নিয়ে যারা পড়াশোনা করেন তাদের জন্য বি.এড. পড়ার জায়গা ছিল একমাত্র আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে। গুটিকয়েক সিট্ থাকার কারণে বাংলার বহু ছাত্র ছাত্রী সুযোগই পেতোনা।
কিন্তু আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য দায়িত্ব নিয়ে আলিয়াতে বি.এড. বিভাগ খোলার জন্য সব আয়োজন করলেন।
অনুমোদন নিয়ে এলেন এবং সবথেকে বেশি সিট্ মোট কুড়িটি (একশোর মধ্যে) ইসলামীক থিওলজি বিভাগকে সংরক্ষণ করে দিলেন।
ইসলামিক থিওলজি বিষয় নিয়ে গবেষণা করার জন্য ঐতিহাসিক কাজ করলেন তিনিই। উদ্যেগ নিয়ে সব আয়োজন করলেন।
ছয়জন হাদিস-কোরান নিয়ে পড়া ছাত্র সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে গবেষণা (Ph.D) করছেন যা আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
আলিয়া ইউনিভার্সিটির মূল ক্যাম্পাস- যা হেরিটেজ বিল্ডিং তার মূল কাঠামোকে অক্ষুন্ন রেখে যে ধরণের রি-কনস্ট্রাকশন হচ্ছে তা সমালোচকদের মুখ এবার আশা রাখি একটু হলেও বন্ধ হবে। কারণ এই বিল্ডিংয়ের কথা কেউ ভাবেনি এবং এর পাশে লাইব্রেরী ভেঙে ইসলামিক থিওলজির জন্য আবার নতুন ভবন তৈরির কাজ শুরু করেছেন উপাচার্য।
হেরিটেজ ক্যাম্পাসের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এ.পি. বিভাগ নামে কলকাতা মাদ্রাসা (আরবি ও ফার্সি বিভাগ গভার্নমেন্ট স্কুল ) চলতো। ১৮৫৪ সালের পর এই ২০১৭ সালে ওই গভার্নমেন্ট স্কুলের পাশে ছয়তলা সুদৃশ্য বিল্ডিংয়ে শিফ্ট করিয়েছেন উপাচার্য। ফলে পুরো হেরিটেজ ক্যাম্পাসটা এখন এই আলিয়া তথা ইসলামিক থিওলজী বিভাগের সম্পদ।
উপাচার্য নিজে উদ্যোগ নিয়ে এ বছর নতুন করে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে UG কোর্স খুলেছেন। এখানে এই বিষয়ে শুধুমাত্র ফাজিল পাস করা ছেলেমেয়েরা যাদের থিওলজি বিষয় ছিল তারাই শুধুমাত্র আবেদন করতে পারবে। ফলে যে সব ছেলে মেয়েরা থিলোজিতে সুযোগ পেতোনা এখন তারাই এই বিষয়ে অনার্স করার সুযোগ পাবেন।
ইসলামিক থিওলজী বিষয়ে এম.এ. ও বি.এ. করার জন্য মোট চারটি জায়গা ছিল আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ফুরফুরা শরীফ এর মাদ্রাসা, মুর্শিদাবাদ এর বেলডাঙা ও মালদহের বাটনা মাদ্রাসাতে। কিন্তু আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য আবু তালেব খান এর উদ্যোগ নিয়ে এই এপর্যন্ত মোট এগারোটি উচ্চমাধ্যমিক ফাজিল মাদ্রাসায় UG কোর্স খুলে দিয়েছেন ও নতুন বিল্ডিং করার কোটি কোটি টাকা দিয়েছেন। হাদিস ও কোরান নিয়ে ছেলেমেয়েরা আরও যাতে ঘরের কাছে ইসলামিক থিওলজি নিয়ে বি.এ. পড়ার সুযোগ পায় এই প্রয়াসকে সকলেই কুর্ণিশ জানিয়েছেন।
এই মাদ্রাসা গুলিতে ইসলামিক থিওলজি নিয়ে এম.এ. ডিগ্রিও তিনি ২০১৯ এর মধ্যে চালু করবেন তার জন্য সব পরিকাঠামো ঠিক করছেন।
আগামীতে আবার মূল ক্যাম্পাসের কাছে ইসলামিক থিওলজির ছেলে মেয়েদের জন্য নতুন দুটি হোস্টেলের কাজ শুরু করতে তিনি সব আয়োজন করছেন।
নেট ও সেটে ইসলামিক থিওলজিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এই কাজ নিয়ে তিনি ছুটাছুটি করছেন। হাদিস ও কোরানের শিক্ষাকে তিনি রক্ষা করতে ও মর্যদা দিতে তিনি সর্বদা সচেষ্ট আছেন।
ইসলামিক থিওলজি নিয়ে পাশ করা ছাত্র-ছত্রীদের জন্য উপাচার্য ইতিমধ্যেই এম.এড. ও এম.ফিল. চালু করতে সচেষ্ট হয়েছেন।
গত ২৫ জুলাই ২০১৭ তে মোট ২৪ জনের ইন্টারভিউ নিয়েছেন তার মধ্য থেকে চারজনকে ইসলামিক থিওলজিতে Assistant Professor নিয়োগ করা হবে। ইসলামিক থিওলজির বিভাগকে উন্নতির জন্য।তাই ইসলামিক থিওলজি বিভাগ তিনি তুলে দিতে চাইছেন বলে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীরা যে দাবী তুলছেন তা মিথ্যা বলে মনে হয়।
তাই যদি হবে এই উপাচার্য তাহলে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করছেন কেন ? এটা আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের বুঝতে হবে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর কল্যাণকর কাজে সর্বদা উপাচার্য নিবেদিত প্রাণ।
অতএব আন্দোলনকারীদের কাছে আবেদন একটু ভাবুন এবং সচেতন হয়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষা করুন। উপাচার্য ইসলামকে শেষ করে দিলো এরকম অপপ্রচার বন্ধ করুন। উপাচার্য মহাশয় যে মহৎ কাজ করছেন তাঁর সহায়তা করে জাতি ও দেশকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আপনিও সাহায্য করুন।
সফল হওয়ার জন্য ভালো করে পড়াশোনা করুন।
গুজব ও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সত্যকে ধামাচাপা দেয়া যায়না এটা মনে রাখবেন।
আজ এই আলিয়া ইউনিভার্সিটি দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে তা শুধুমাত্র জনাব আবু তালিব খান সাহেবের দক্ষ পরিচালনায় এই সত্যটা সবার জানা এখন। রাজ্যের ৬৬ টি সিনিয়ার মাদ্রাসাতে কামিল বিভাগ পড়ানো হতো উপাচার্য উদ্যোগ নিয়ে আরও ৮ টি মাদ্রাসায় কামিল বিভাগ খুলেছেন। রাজ্যের সাধারণ ডিগ্রী কলেজে ইসলামী থিওলজি ও আরবি অনার্স চালু করতেও তিনি উদ্যোগী হচ্ছেন। এম.এ.-তেও ইসলামী কোর্সভিত্তিক কিছু বিষয় চালু করতে সবর্দা সচেষ্ট আছেন।
প্রফেসর আবু তালেব খান আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে যে উচ্চতায় তুলেছেন তাঁর কাজের দক্ষতায় তা অন্য বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্যদের কাছে বড় প্রেরণার জায়গা হয়ে উঠেছে তিনি।
সম্প্রতি কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি সংগঠন স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন এম.এ.-কোর্সে আরবি ভাষা বিভাগ চালু করতে এই উদ্যোগকেও সাদুবাদ জানিয়েছেন উপাচার্য মহাশয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584