নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ
তিন হাজার টাকা দিলেই মিলবে ‘পায়েল সরকার অর্গানাইজেশন’-এর পুজোর হোর্ডিং-এ মুখ দেখানোর সুযোগ। আর সেই হোর্ডিং ছড়িয়ে পড়বে সারা বাংলার কোণে কোণে। ত্রিশ জনকে নিয়ে হবে সেই শুট। প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ আলাদা আলাদা হোর্ডিং।
আর শুধু তাই নয়, সেই ত্রিশজনকে গ্রুমিং করবে অভিনেত্রী পায়েল মিঠাই সরকার। এরপর সেই ত্রিশজনের মধ্যে থেকে যাদের লুক বেশি চটকদারি হবে তারা স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের মডেল হওয়ার সুযোগ। আর যারা অভিনয় করতে চায় তাদেরকে জনপ্রিয় বাংলা টিভি চ্যানেলে কাজ পাইয়ে দেবে পায়েল মিঠাই সরকার। এমনই সব বক্তব্য নিয়ে ফেসবুক লাইভে আসে পায়েল মিঠাই সরকার এবং তার প্রেমিক সোহেল সাহা।
তাদের বক্তব্য, রাজ্যের চলমান সরকার চাইছে পায়েল সরকার অর্গানাইজেশনের হোর্ডিং ছড়িয়ে পড়ুক বাংলার কোণে কোণে। কেননা কলকাতার সব কোণের পুজোর হোর্ডিং-এর মার্কেটিং বিভাগের ফেডারেশনের সেক্রেটারি পায়েল মিঠাই সরকার, দাবি সোহেলের।আর স্বাভাবিকভাবেই নেটিজেনের কাছে ব্যাপারটা বেশ প্রলোভনের হয়ে দাঁড়ায়। সাড়া দেয় অনেকেই। তাদেরকে দেওয়া হয় সোহেলের ফোন নম্বর।
শুধু কি তাই? পায়েল সরকার নামী প্রযোজনা সংস্থার অভিনেতা নির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছেন এমনই দাবি পায়েল মিঠাই সরকারের প্রেমিক সোহেল সাহার। পায়েলের নাকি ২০২১ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হয়ে জনপ্রতিনিধি হওয়ার কথা। এমন কথাও জানিয়েছে সোহেল।প্রথমে সিট বুকিংয়ের জন্য নেওয়া হয় ১৫০০ টাকা৷ এরপর শুটের লোকেশনে গিয়ে দিতে হয় বাকি ১৫০০ টাকা। প্যান্ডেমিক পরিস্থিতির কারণে সকলকে নিজেদের পোশাক ও গয়না নিয়ে যেতে হয়। তা ছাড়া শুটিংয়ের জন্য ব্যবহৃত ত্রিশূল, শঙখ ইত্যাদির জন্য আলাদা ভাড়া চায় ‘পায়েল সরকার অর্গানাইজেশন’।
আরও পড়ুনঃ ফের ভাঙনের পথে তৃতীয় সংসার
শুট মিটল। কিন্তু প্রতিশ্রুতিমতো হোর্ডিং নজরে আসেনি সেই নবীন মডেলদের। যে’কটি দেখা গিয়েছে সেই কটিতে অনেককে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। ঝাকের কইয়ের মতো ১০-১২ জনকে একসঙ্গে নেওয়া হয়েছে একটি হোর্ডিং-এ। আর তাতেই আশাহত হয়েছে মডেলরা। এরপর সোহেল, শ্রেয়া, জয়ন্তী, অলিভিয়া, পায়েল সহ আরও সকলকে বলে ১৫০০০ টাকা দিতে। কারণ তারা ব্র্যান্ডের জন্য সিলেক্টেড। সেই সব ব্র্যান্ডকে দিতে হবে সেই টাকা। তৈরি হবে পোর্টফোলিও। নিতে হবে গ্রুমিং ক্লাস। এর জন্য সকলের কাছ থেকে আধার কার্ডের জেরক্স নেয় সোহেল-পায়েল।
আরও পড়ুনঃ সুস্থ অপা’দি
মডেলদের বক্তব্য, “প্রতিশ্রুতিমতো হোর্ডিং দেখা যায়নি কলকাতার পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ কোনও প্রান্তে। যেটুকু দেখা গেছে সেখানে ঝাকের কইয়ের মতো অনেকের ছবি বসিয়ে দায় সারা হয়েছে৷ তাহলে কেন এত টাকা নেওয়া হল এবং আবারও টাকা চাওয়া হচ্ছে?”এই বক্তব্য নিয়ে পায়েল এবং সোহেলকে ফোন করা হলে তারা অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মডেল হতে চাওয়া তরুণীদের। শুটের দিন মডেলদের অভিভাবকদের প্রবেশাধিকার ছিল। তাদের সঙ্গেও নাকি দুর্ব্যবহার করে সোহেল, নিউজফ্রন্টকে সেই কথা জানিয়েছে মডেল জয়ন্তী। এহেন বহু অভিযোগ রয়েছে শ্রেয়া, পায়েল, সুপ্রিয়া, অলিভিয়া, তানিয়া, রূপসা, পূজা, জয়ন্তী, রূপসা, মাম্পিদের। প্রত্যেকেই প্রতারণার শিকার সোহেল এবং পায়েলের। অভিনেত্রী তথা মডেল শ্রেয়া চক্রবর্তী এর মাঝেই যোগাযোগ করে সেই ব্র্যান্ডের সঙ্গে যেখানে তাদের মডেল হওয়ার টোপ দেওয়া হয়েছিল। পায়েল এবং সোহেলের এই প্রতারণা মেনে নিতে রাজি নয় বলে জানিয়েছে শ্রেয়া।
মডেল তানিয়া, জয়ন্তী নিউজফ্রন্টকে জানায়, ” আমরা দু চোখে কত স্বপ্ন নিয়ে গিয়েছিলাম কাজটা করতে, প্রথমেই হোঁচট খেলাম। এরপর আর কারোকে বিশ্বাস করতে পারব না আমরা। যেভাবে হোক টাকা ফেরত চাই অন্তত ২০০০ টাকা। হোর্ডিংটি অতি জঘন্য। এর জন্য ৩০০০ টাকা মেনে নেওয়া যায় না। অনেক কষ্টে টাকাটা জোগাড় করেছি। অনেকের বাবা-মা এই টাকাটার কথা জানেও না।”
আরও পড়ুনঃ দেবযানী কথা
মডেলরা নিজদের বক্তব্য এবং অভিযোগ পেশ করতে চাইলে বিরুদ্ধে সংবাদ মাধ্যমে নিউজ চালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় পায়েল ও সোহেল।ভয় দেখায় তৃণমূল নেত্রী বৈশালি ডালমিয়ার নাম নিয়েও।
পাশাপাশি মেয়েদের আধার কার্ডের জেরক্স যেহেতু তাদের কাছে আছে তাই সেই আধার কার্ড সম্বল করে তাদের নামে মিডিয়ায় কুতসা রটানোর হুমকি দেয় পায়েল- সোহেল। পায়েল ও সোহেলের এই আচরণে ক্ষিপ্ত মডেলরা। তারা তাদের টাকা ফেরত চায়। নইলে আইনি পথে হাঁটবে তারা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584