নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ
এই করোনা আবহে যখন সবাই চিন্তাগ্রস্ত , তখন অন্যকে আনন্দ দিতে হাজির সমাজ কল্যাণ মূলক সংস্থা ‘নারী শ্রী নিকেতন’ ও ‘উই টুগেদার উই ক্যান’ (We-Together We Can)। এই কঠিন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে বদ্ধ পরিকর এই সংস্থাদুটি।
সংস্থা দুটির তরফে জানানো হয়, “আমরা একটা ছোট্ট সমাজ সেবামূলক সংগঠন। বিগত ১৪ বছর ধরে আমরা প্রান্তিক কিছু পরিবারের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই লকডাউনের সময় আমরা ঠিক করি, প্রান্তিক মানুষদের হাতের কাজের জন্য একটা ই-কমার্স ওয়েব সাইট করব। এবং আমদের ইচ্ছেপূরণ হয়। ১২জুলাই ২০২০, আমরা নিয়ে আসি ওয়েবসাইটটি।
সাইট উদ্বোধনের দিন আমাদের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ভাস্কর রায়, রাজকুমার রায়, মেখলা দাশগুপ্ত, পর্ণাভ ব্যানার্জু, রাজীব দাস, শান্তনু সেনগুপ্ত সহ অন্যান্য বিশেষ অতিথিবর্গ। পুরো অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। এভাবেও উদ্বোধন সম্ভব! ভেবে অবাক হয়েছেন অতিথিরা।”
প্রসঙ্গত, নারী শ্রী নিকেতনের অধীনে উই টুগেদার উই ক্যান’ নামে ছয়জনের একটি ছোট দল রয়েছে যারা গত ১৪ বছর ধরে জনগণের জন্য রয়েছে এবং আগামী বছরগুলিতে মানুষের জন্য কাজ করবে বলে তাদের প্রয়াস। বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রামের মানুষের জন্য কাজ করে চলেছে এই সংস্থা। ১৪ বছর ধরে দুস্থ পরিবারগুলিকে মাসিক রেশন, ওষুধ, বাচ্চাদের জন্য শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করে আসছে তারা। এবং ১২৮ টি পরিবারকে স্বাস্থ্য সহায়তা দান করে তারা।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনে ‘কোলাজ’- এর নতুন গান ‘চল যাই’
সংস্থার তরফ থেকে অমিত দাশগুপ্ত জানান, “অনেককে আমরা প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং তারা বিভিন্ন পণ্য তৈরি করতে শুরু করেছে, যা আমরা বাজারে বিক্রি করে থাকি। আর এখন তা মিলবে ওয়েবসাইটেও।”
২০২০ সালের ২৮ শে মার্চ থেকে আজ অবধি এই সংস্থা দুটির কর্মসূচীর দিকে তাকালে দেখা যায়-
১. ২২০ টি পরিবারকে ২৫ কেজি চাল, ৫ কেজি ডাল, ৪ কেজি সয়াবিন, ৪ কেজি সরিষার তেল, ৩ কেজি চিনি, চা, দুধের গুঁড়া, লবণ, চিনি ৩ কেজি, মশলা সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ফেস মাস্ক দেওয়া হয়েছে এপ্রিল, মে এবং জুন মাসে। জুলাইতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
২. ৩৩২২ জনকে সাপ্তাহিক রেশন সরবরাহ করা হয়।
৩. লোককে জরুরি অবস্থা ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
৪. রক্তদান সহায়তার পাশাপাশি সাতজনের জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় সংস্থা দুটির তরফে।
৫. যারা অন্য শহরে গিয়ে নিজেদের রাজ্যে ফিরতে অসুবিধায় পড়েছিলেন তাঁদের ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছিল তারা।
৬. ১৬ জন শ্রমিককেও স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
৭. নিয়মিত স্ট্রিট ডগ, বিড়ালদের খাবার ও ওষুধের ব্যবস্থা নেওয়া হয় সংস্থার তরফে। এছাড়াও যারা চিকিৎসা ক্ষেত্রে পোষ্যর যত্ন নিতে অক্ষম, তাদের পাশেও দাঁড়ায় এই সংস্থা দুটি।
৮. কলকাতা পুলিশের সহায়তায় নানা জায়গায় খাবার সরবরাহ করে এই সংস্থা দুটি।
৯. নিয়মিতভাবে অঞ্চল পরিষ্কার ও স্যানিটাইজ করে রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়।
আরও পড়ুনঃ করোনা আবহে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে কলকাতা কন্যের গান
সম্প্রতি সংস্থা দুটি আরও চারটি বিভাগে কাজ শুরু করেছে-
১. বৃদ্ধদের সঙ্গে দেখা করা এবং যাঁরা একা থাকেন তাঁদের যত্ন নেয় এই সংস্থা।
২. কোভিড রোগীর জন্য প্লাজমা।
৩. মন ভাল রাখার জন্য লাইভ মিউজিকাল কনসার্ট এবং কুকিং ক্লাস সহ সংগীত থেরাপি করে এই সংস্থা।
৪. যে ব্যক্তি সমাজের জন্য ভাল কাজ করে চলেছেন তাঁদের প্রশংসাপত্র প্রদান করে সংস্থা দুটি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584