পঞ্চস্বরে পঞ্চম

0
193

প্রীতম সরকার

বলিউডে রাহুল দেব বর্মনের মতো মজার মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। তিনি একদিকে যেমন ছিলেন মিউজিক ডাইরেক্টর, অন্যদিকে প্রচন্ড বন্ধু বৎসল। তাঁর সমসাময়িক যেসব ব্যক্তিত্ব অখন বোম্বের সিনেমা জগতে ছিলেন, প্রত্যেকেই রাহুল দেব বর্মনের বন্ধুত্বের কাছে হার মানতে বাধ্য হতেন। বাবা শচীন দেব বর্মন ছিলেন বিখ্যাত সুরকার। তিনি তাঁর ছেলে রাহুলের নাম রেখেছিলেন সঙ্গীত দিয়েই।

music director R D burman | newsfront.co
ছবিঃ প্রতিবেদক

ছোটবেলায় রাহুল প্রচণ্ড চিৎকার করে কাঁদতেন। ছোট বাচ্চার সেই চিল চিৎকারে সঙ্গীত সাধনায় ব্যঘাত ঘটতো শচীন কর্তার। প্রায় সারাদিনই প্যাঁ প্যাঁ করে চিৎকার করতেন ছোট্ট রাহুল। সপ্তসুরের পঞ্চম সুর, “পা” থেকে শচীন কর্তা ছেলের নাম রাখেন পঞ্চম। অর্থাৎ সা রে গা মা পা – এই পাঁচ নম্বর স্বর দিয়ে ছোট্ট ছেলের নাম হয় পঞ্চম। সেই নামেই পরে বিখ্যাত হয়েছিলেন শচীন দেব বর্মনের ছেলে রাহুল দেব বর্মন

burman's family | newsfront.co
ছবিঃ প্রতিবেদক

পঞ্চমের সুরের কীর্তি আজও অবিস্মরনীয় রয়ে গিয়েছে। শব্দযন্ত্রী থেকে সুর তৈরি – রাহুল ছিলেন সবেতেই সব্যসাচী। ছোটবেলা থেকেই পঞ্চম ভালো মাউথ অর্গান বাজাতেন। তাঁর মাউথ অর্গানে ‘লিপ’ দিয়ে ‘ষোলো সাল” ছবিতে বিখ্যাত হয়েছিলেন দেব আনন্দ। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গলায় দেব আনন্দ ‘বোম্বাই কি বাবু’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ‘হ্যায় আপনা দিল তো আওয়ারা’ গানের সঙ্গে।

R D Burman | newsfront.co
ছবিঃ প্রতিবেদক

সেই গানে মাউথ অর্গান ছিল পঞ্চমের বাজানো। রমেশ শিপ্পির বিখ্যাত ছবি “শোলে” তে অমিচাভ বচ্চন যে মাউথ অর্গান বাজিয়েছিলেন, সেই ধুন ছিল পঞ্চমের তৈরি। যা আজকের দিনেও অনেক মোবাইল ফোনের রিং টোনে বাজে। সিনেমাতে কমেডি রোলে অভিনয়ও করেছেন পঞ্চম। ‘ভুত বাংলা’ ছবিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আর. ডি. বর্মন অর্থাৎ রাহুল দেব বর্মনের করা অনেক মধ্যে এখনও বিখ্যাত সুর ‘মনে পরে রুবি রায়’ গানে। যা এখনও জনপ্রিয়।

memory of RD Burman | newsfront.co
ছবিঃ প্রতিবেদক

তুখোড় আড্ডাবাজ পঞ্চম আড্ডা দিতে দিতে কখনও খালি কাঁচের গ্লাস দিয়ে সুর করেছেন, যেমন – জিনাত আমনের লিপে আশা ভোসলের গলার গান ‘চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে জো দিলকো’, আবার মুখ দিয়ে নানা রকম আওয়াজ করে গানে লাগিয়েছেন, যা আজও জনপ্রিয়। রাহুল জন্মসূত্রে ত্রিপুরার মানুষ হলেও তাঁর নিজের প্রচণ্ড পছন্দের জায়গা ছিল দার্জিলিং।

আরও পড়ুনঃ বাঙালীর গর্বের সেতু

এই দার্জিলিঙ্গেই তিনি বিয়ে করেছিলেন আশা ভোসলে কে। লেট নাইট ডিনার, ডান্স আর লং ড্রাইভ পছন্দের ছিল পঞ্চমের। বন্ধুদের নিয়ে এইসব করলেও সবেতেই চলতো তাঁর সুর তৈরির আরাধনা। পঞ্চম শেষ সুর দিয়েছিলেন অনিল কপূর- মনীষা কৌরালার ছবি ‘১৯৪২ এ লভ স্টোরি’ ছবিতে। তপঞ্চমের তৈরি হরেকরকম সুরের কাওরসাজির জন্য আজও মানুষ তাঁকে মনে রেখেছেন।।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here