রাজ্যের মন্ত্রীর ঘনিষ্টদের বিরুদ্ধে জমি আত্মসাৎ করার অভিযোগ বিজেপির

0
51

শিবশঙ্কর চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

করোনা আবহে চলা লকডাউনের মধ্যে সরকারি জমি আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘনিষ্টদের বিরুদ্ধে। রবিবার এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে এই অভিযোগ তুললেন বালুরঘাটের সাংসদ তথা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার।

Sukanta Majumdar | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, লকডাউন চলার সময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নেত্রীরা দিঘি চুরি করছে। তপন দিঘির পার্শ্ববর্তী এলাকাটির মালিক কে তা জানা ছিল না, সবাই জানত সেই এলাকাটা দিঘির-ই এলাকা। সেই এলাকা হঠাৎ করে দশজন তৃণমূল নেতার নামে রেকর্ড হয়ে গেল। সকলে মিলে ভাগ বাটওয়ারা করে নিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ জানান।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন দিঘি তপন দিঘি। তপন ব্লকের চন্ডিপুর এলাকায় ৮৩ একর জমির উপর এই তপন দিঘি। সংস্কারের অভাবে জেলার এই প্রাচীন দিঘি তার কৌলিন্য হারিয়ে ফেলেছিল। দীর্ঘদিন ধরে জেলাবাসীর তরফে এই দিঘি সংস্কারের দাবির পাশাপাশি এই দিঘিকে ঘিরে একটি পর্যটক কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানানো হলেও তাতে কেউ কর্ণপাত করেনি।

আরও পড়ুনঃ লকডাউনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিশাল মিছিল তৃণমূলের

কিন্তু ২০১৯ এর ১৯ এ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গারামপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসলে বিষয়টি তার নজরে আসে। এর পরেই তিনি জেলার প্রাচীন এই তপন দিঘি সংস্কার করে, পিছিয়ে পড়া ব্লককে অর্থনৈতিক ভাবে ঘুড়ে দাঁড়ানোর জন্য এখানে যাতে টুরিস্ট স্পট গড়ে তোলা হয় তার জন্য প্রাথমিক ভাবে ৩৭ কোটি টাকা মঞ্জুর করেন। এর পরবর্তীতে দিঘি সংস্কারের কাজ শুরু হলেও তা হঠাৎ করে থমকে যায়।

অভিযোগ, এরপরেই দিঘির জায়গায় স্থানীয় বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীর ঘনিষ্টদের নামে ওই দিঘির খাস জমি নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার চেষ্টা চলে। এরপর চলতি বছর ২০২০ সালের ১৫ জুন ওই দিঘির ৭.২৮ একর অর্থাৎ প্রায় ২৫ বিঘা জমি মন্ত্রীর ঘনিষ্ট ৭ জন ব্যাক্তি নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে নেন বলে অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বের। এর মধ্যে মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক রিন্টু বসাকও রয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ একাধিকবার ধর্ষণে গর্ভবতী নাবালিকা, গ্রেফতার অভিযুক্ত

যদিও মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক রিন্টু বসাক অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সামনে বিধানসভা ভোট তাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিজেপি তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলছে। তিনি আরও জানান তারা রায়তি সম্পত্তি কিনেছেন কোন সরকারি জমি কেনেননি। অভিযুক্ত ওই আপ্তসহায়কের আরও দাবি পুরোটাই মিথ্যা অভিযোগ। একই সঙ্গে এদিন তিনি জানান তপন দিঘি ঐ জায়গার মালিকের মেয়ে কনিকা বসাকের কাছ থেকে তারা জায়গাটি কিনেছেন এবং তাদের কাছে জায়গার সঠিক কাগজপত্র আছে।

অপরদিকে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাসদা বলেন এই জায়গাটা কোন সরকারি জায়গা নয়, সেটা রায়তি সম্পত্তি, রায়তি সম্পত্তি হিসাবেই ওরা কিনেছে। তিনি আরও বলেন রায়তি সম্পত্তি যে কেউ কিনতে পারে সেটা অভিযোগ করার কি আছে। একই সঙ্গে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বাচ্চু হাসদা বলেন সরকারি আধিকারিকরা এত বোকা নাকি যে সরকারি সম্পত্তি রেকর্ড করে দেবে।

অপরদিকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক প্রণব কুমার ঘোষ বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই, না জেনে আমি বিষয়টি বলতে পারব না। তিনি এও বলেন সরকারি জায়গা কারও নামে রেকর্ড হবে না যদি না পাট্টা থাকে। আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে এই ঘটনাটি জেলার ভোট চিত্রে আলাদা মাত্রা পেতে চলেছে তা ধরেই নিয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here