মনিরুল হক,কোচবিহারঃ
পুনর্নির্বাচনের আগে ফের রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠল কোচবিহার শীতলখুচি এলাকা।ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তিনজন বিজেপি কর্মী। আহতদের উদ্ধার করে মাথাভাঙ্গা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।এদিন সকালে তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি কর্মী কানাই বর্মন, দীনবালা বর্মন, মৌমিতা বর্মন, বাড়িতে হামলা চালায় এবং বাড়ির লোকজনদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের শীতলখুচি বিধানসভার ১৮১ নং বুথে পুনর্নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।আগামী ২৯ এপ্রিল চতুর্থ দফা নির্বাচনের দিনেই কোচবিহারের ওই বুথে পুননির্বাচন হবে।এই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার মকপোল ডিলিট না করেই ভোট গ্রহন করায় হয় বিপত্তি।এই ভোট গ্রহন হবে শীতলখুচি বিধানসভার ১৮১ নং বুথে ভোগডাবরী এন এন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।এদিন পৃথক ভাবে তৃণমূল ও বিজেপি প্রচারে বের হলে।প্রথমে বচসা থেকে সংঘর্ষের রূপ নেয়।
এবিষয় বিজেপি নেতা হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, “আমাদের কর্মীরা তৃণমূলের হাতে লাগাতার আক্রান্ত হচ্ছে।পুলিশ সেখানে একেবারেই নিষ্ক্রিয় ভুমিকা নিয়েছে।আজ চূড়ান্ত পর্যায় আক্রমণ হয় বিজেপি সমর্থক।এমনকি তাদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর, লোহার রড, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় বেশ কয়েকজন বিজেপিকে।এদের মধ্যে কানাই বর্মন, দীনবালা বর্মনকে গুরতর অবস্থায় মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোট হলে তা প্রহসনে পরিণত হবে। তাই আমরা দাবী করছি,ওই বুথে যেন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করা হয়।”
অন্যদিকে শীতলকুচির ভাইওরথানা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা তন্ময় প্রামাণিক বলেন, “বিজেপি জানে তাদের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে।তাই তাঁরা নিজেরাই নিজেদের বাড়ি ভাঙচুর করে তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে প্রচারের আলোয় আসতে চায়। ওই ঘটনার সাথে তৃণমূলের কোন যোগ নেই।”
প্রসঙ্গত, ভোটের দিন ওই বুথে ‘মক পোল’ এর ভোট না মুছেই শুরু হয়ে গিয়েছিল ভোটগ্রহণ৷ এরপরই নড়েচড়ে বসে নির্বাচন কমিশন৷নিয়ম অনুযায়ী জেলা নির্বাচন আধিকারিক ও পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে হয় স্ক্রুটিনি৷সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন৷ সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোট হয়েছিল ১১ এপ্রিল৷ ওই দিন রাজ্যের দু’টি আসনে ভোট গ্রহন হয়৷তারমধ্যে কোচবিহারে ভোট পড়েছিল ৮৩.৮৮ শতাংশ৷ পথম দফার নির্বাচন কমিশনের দাবি ছিল, বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া ভোট ছিল শান্তিপূর্ণ৷ যদিও বিরোধীদের অভিযোগ ছিল,ভোটের দিন যে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না,সেই সব বুথেই বেশি গন্ডগোল হয়েছে৷ভোট শেষে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে বিজেপির তরফে কোচবিহারের ২৯৭টি বুথে ফের ভোটের দাবি জানানো হয়েছিল এবং বাম প্রতিনিধির একটি দল কোচবিহারের ৬৩টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল৷
আরও পড়ুনঃ খুল্লাম খুল্লা অস্ত্র মিছিলে ধৃত অভিযুক্ত তিন তৃণমূল কর্মী
স্ক্রুটিনির পর একটি বুথে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিল কমিশন৷ পুনঃনির্বাচনের দিন ঘোষণা হতে না হতেই শুক্রবার বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয় ওঠে ওই শিতলখুচির ওই এলাকা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584