খাঁচাবন্দি চিতা ছাড়া হবে না অরণ্যে

0
63

মনিরুল হক,কোচবিহারঃ

caged leopard not leaved in forest
নিজস্ব চিত্র

লোকালয়ে এসে ধরা পড়া চিতাদের আর জঙ্গলে না ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর। ইতিমধ্যেই ডুয়ার্সের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা ৯ টি চিতাকে ধরে খাঁচা বন্দী করে রেখে দেওয়া হয়েছে।কোচবিহার এনএন পার্কে ফুল মেলার উদ্বোধন করতে এসে এমনটাই জানালেন বনমন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মণ।

caged leopard not leaved in forest 2
বনমন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মণ। নিজস্ব চিত্র

দীর্ঘদিন থেকে কোন বন্য প্রানী লোকালয়ে এসে ধরা পড়ার পর তাঁকে ফের জঙ্গলে ফেরানোর নিয়ম চলে আসছে কিন্তু এবার ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গল থেকে চিতা লোকালয়ে চলে এসে মানুষ খুন করতে শুরু করায় আতঙ্কিত বন দফতর ঐ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।তিনি বলেন, “ডুয়ার্সে একের পর এক চিতা হামলার ঘটনা।হামলায় শিশু মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।তাই লোকালয়ে ধরা পড়া চিতাকে আর জঙ্গলে না ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।ইতিমধ্যেই ৯ টি চিতা ধরে খাঁচা বন্দী করে রাখা হয়েছে।সেগুলো রসিকবিল ও খয়েরবাড়ির মত মিনি জু গুলোতে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
গোটা পৃথিবী জুড়ে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা ক্রমশ কমে যাওয়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়ে রয়েছে।বিভিন্ন দেশ বন্য প্রানীদের সংরক্ষণের জন্য পরিকল্পনা নিচ্ছে।বন্যপ্রাণী বাঁচিয়ে রাখার জন্য নানা পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।ঠিক এমন সময় লোকালয়ে ধরা পড়া চিতার মত বন্য প্রানীকে জঙ্গলে ফিরিয়ে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত হবে,তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।বন্যপ্রাণী প্রেমী অনেকেই মনে করেন,একদিকে জঙ্গল যেমন ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।তেমনি বন্যপ্রানীদের খাদ্য শৃঙ্খল ভেঙে পড়েছে।আর সেই কারণেই জঙ্গল থেকে চিতা বেরিয়ে লোকালয়ে চলে আসছে।জঙ্গলের ঘনত্ব বাড়ানো ও খাদ্য শৃঙ্খল ফিরিয়ে না এনে চিতার মত বন্য প্রানীকে জঙ্গলে না ফেরানোর সিদ্ধান্ততে অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।যদিও বনমন্ত্রীর দাবি এরাজ্যে সমস্ত বন্যপ্রানীর সংখ্যা বেড়েছে। চিতার লোকালয়ে চলে আসার বিষয় নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “নগরায়নের ফলে মানুষই বন্য প্রানীদের জায়গা দখল করে নিয়েছে।তাই এক সময় যে সব এলাকা তাঁদের বাসস্থান ছিল, সেই সব এলাকায় ফিরে আসতে চাইলেই মানুষ ও বন্যপ্রানীদের মধ্যে সংঘাত তৈরি হচ্ছে।”
পাশাপাশি কোচবিহারের পাতলাখাওয়ার জঙ্গলে গণ্ডার ছাড়ার জন্য ন্যাশেনাল জু অথরিটির ছাড়পত্র পাওয়া গিয়েছে বলেও মন্ত্রী জানিয়েছেন।এই বছরের মধ্যেই ওই গণ্ডার ছাড়া হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।একসময় পাতলাখাওয়ার জঙ্গলে গণ্ডার সহ বিভিন্ন ধরণের বন্যপ্রাণী ছিল।কোচবিহারের রাজারা সেখানে শিকারেও যেতেন কিন্তু এক সময় ওই জঙ্গল ক্রমশ কমে গিয়ে বন্যপ্রাণী কার্যত হারিয়ে গিয়েছিল।বন দফতর সেখানে নতুন করে গণ্ডারদের আবাসস্থল তৈরি করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে।লাগানো হয় গণ্ডারদের প্রিয় খাবার একধরণের ঘাস।সম্প্রতি সেখানে গণ্ডার ছাড়া অনুমতিও মিলেছে।ফলে কোচবিহারের মানুষ সেখানে গণ্ডার ছাড়ার অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

আরও পড়ুনঃ ছ’শো বোতল নকল মদ সহ গ্রেফতার এক

এদিন বনমন্ত্রী ছাড়াও ফুল মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উমাকান্ত বর্মণ, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল আহমেদ,জেলা শাসক কৌশিক সাহা,পুলিশ অভিষেক গুপ্তা সহ বন দফতরের বিভিন্ন আধিকারিকরা।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here