বাংলায় কেন লাগু হল না সিএএ! কার্যত হতাশ মতুয়া সম্প্রদায়

0
88

নিজস্ব প্রতিবেদন, নিউজ ফ্রন্টঃ

গুজরাট, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা এই পাঁচ রাজ্যের অ-মুসলিম শরণার্থীরা নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারেন- এই মর্মে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এর ফলে মতুয়াদের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র। তাঁদের প্রশ্ন, এই তালিকায় বাংলাকে বাদ রাখা হল কেন? এ প্রসঙ্গে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের আশ্বাস, বাংলাতেও নাগরিকত্ব প্রদানের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।

modi | newsfront.co
সৌজন্যেঃ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

শান্তনু ঠাকুরের মন্তব্যকে মোটেই গুরুত্ব দিতে রাজি নন তৃণমূল নেত্রী মমতাবালা ঠাকুর। পাশাপাশি মমতাবালা ঠাকুর অভিযোগ করেছেন, কোভিডের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দেশের মানুষকে আবার একটি লাইনে দাঁড় করাচ্ছে মোদি সরকার।

হঠাৎ করেই শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে দেশের পাঁচটি রাজ্যের অ-মুসলিম শরণার্থীরা যাঁরা আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত- তাঁরা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ কার্যত সিএএ লাগু করার প্রক্রিয়া শুরু করলো কেন্দ্র।

এ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন মতুয়ারা। তাঁদের বক্তব্য, বিধানসভা ভোটের প্রচারে ধারাবাহিক ভাবে সিএএ-র আশ্বাস দিয়ে গেছে বিজেপি। এমনকি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঠাকুরনগরে সভায় বলে গিয়েছিলেন নাগরিকত্বের কথা। এখন ভোট মিটতেই বাংলাকে বাদ!

আরও পড়ুনঃ ছাত্রছাত্রীদের হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দিল AMU

বিকাশ গোঁসাই নামে এক মতুয়া এদিন বলেন, ‘প্রথমত আমরা এদেশের নাগরিক। নতুন করে আমাদের নাগরিকত্বের প্রয়োজন নেই। কিন্তু বিজ্ঞপ্তিতে যখন এ রাজ্যের নাম নেই তখন শান্তনু ঠাকুরেরই উচিত ছিল বিরোধিতা করার। এই ইস্যুতে যে রাজ্যে হাত দেওয়া উচিত ছিল, সেখানে না করে বিজেপি অন্য রাজ্যে হাত দিয়েছে।’

আরও এক মতুয়া ভক্ত বলেন, ‘কেন্দ্রের এই বিজ্ঞপ্তি মন থেকে মেনে নিতে পারছি না। মতুয়াদের ধর্মীয় সংগঠনই এর জন্য সবচেয়ে বেশি আন্দোলন করেছে। অথচ নাগরিকত্বের আবেদনের বিজ্ঞপ্তিতে এ রাজ্যের উদ্বাস্তুরা বঞ্চিত।’ মনোজ গোঁসাই নামে আরেক মতুয়া ভক্তের মতে নাগরিকত্ব বিষয়টি এত সহজ নয়, এর জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে প্রক্রিয়া সবে শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে নিশ্চয় কেন্দ্র তাঁদের দিকেও দৃষ্টি দেবে।

আরও পড়ুনঃ ব্যাংকের ৪৯ শতাংশ আমানত বিমার আওতায় নেইঃ RBI বার্ষিক রিপোর্ট

বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর রাজ্য সরকারকে নিশানা করে বলেন যে, উদ্বাস্তু সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু বাংলা। তাই আর পাঁচ রাজ্যের সঙ্গে এ রাজ্যের নামটাও জোড়া হোক বলে তিনি মৌখিক ভাবে আবেদন করেছেন। তাঁর আশা কেন্দ্র নিশ্চয় এ বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করবে।শান্তনু আরো বলেন যে, নাগরিকত্ব আইন কার্যকরি করার ক্ষেত্রে এ রাজ্যের তৃণমূল সরকার বিরোধিতা করছে। মুখ্যমন্ত্রী সহযোগিতা করলে এ রাজ্যেও নাগরিকত্ব বিষয়টি নিয়ে এগোনো যাবে সহজেই।

তৃণমূল প্রভাবিত অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর জানান, ‘ছত্তিশগড় ছাড়া অন্যান্য রাজ্যগুলিতে উদ্বাস্তুর সংখ্যা অনেক কম।এ রাজ্যের মতুয়া-সহ উদ্বাস্তু মানুষরা এদেশেরই নাগরিক। তাঁরা নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চান। শর্ত আরোপ করলে বড় আন্দোলন হবে। সেই ভয়েই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গের নাম বাদ দিয়েছে।’

আরও পড়ুনঃ প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার শূন্য পদ বিলোপের সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় রেল

তবে নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অনেকেই ভিন্ন মত পোষণ করছেন। তাঁদের বক্তব্য অনুযায়ী ঠিক সেই পাঁচ রাজ্য থেকেই নাগরিকত্ব আবেদন চাওয়া হয়েছে যার প্রতিটিতেই আগামী এক বা দুবছরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার মধ্যে পাঞ্জাব বা হরিয়ানা ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কৃষি আইন নিয়ে তুমুল আন্দোলনে রত। কাজেই এই পাঁচ রাজ্যেই বিজেপি ইস্যু করতে চাইছে নাগরিকত্বকেই।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here