পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
তিন সিপিএম কর্মীকে খুনের অভিযোগে বিজেপি নেতা মনিরুল ইসলাম এবং মুকুল রায় দুজনের বিরুদ্ধে বোলপুর মহকুমা আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট বীরভূম জেলা পুলিশের। ২০১০ সালে বালি ঘাটের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লকের দ্বারকা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মনিরুল ইসলাম নিজের বাড়িতে সালিশি সভা বসায়, সেখানে ডাকা হয় টোকোন শেখ, তুরুক শেখ, ধানু শেখ কে। সেখানে বালি ঘাটের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে আচমকাই বচসা শুরু হয় উত্তেজিত হয়ে মনিরুল ইসলাম, সিপিএম কর্মীকে নৃশংসভাবে খুন করে। তার নিজের বাড়িতে প্রথমে ব্যাপকভাবে মারধর করা হয় তিন জনকে। এরপর পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে গুলি ও বোমা মেরে খুন করা হয় । এরপরই লাভপুর থানায় সিপিএম সমর্থক তিন ভাইয়ের খুনের ঘটনায় মা জেরিনা বিবি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে। বেশ কিছুদিন মামলা চলার পর বেকসুর খালাস হয়ে যায় মনিরুল ইসলাম। ২০১১ সালে মনিরুল ইসলাম তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন।
তারপরে লাভপুর বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে বিধায়ক হন। ২০১৪ সালে বীরভূম জেলা পুলিশ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়, কিন্তু সেখানে মনিরুল ইসলাম এর নাম ছিল না। এখানেই অভিযোগ বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডলের, তিনি অভিযোগ করেন যখন মনিরুল ইসলাম মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন তখন তারা তৃণমূলের সম্পদ ছিলেন বলে দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু এখন তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে যেহেতু বিজেপিতে যোগদান করেছে তাই প্রতিহিংসাবশত তৃণমূল কংগ্রেস পুলিশকে দিয়ে চার্জশিটে মনিরুল ইসলাম এবং মুকুল রায়ের নাম দিতে বাধ্য করেছে। যদি মুকুল রায়ের নাম বাদ না যায় তবে বীরভূম জেলা জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বিজেপি এমনটাই হুঁশিয়ারি দেন বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল। কিন্তু গত ৩ মাস আগে জেরিনা বিবি হাইকোর্টে আবেদন করেন তিন ছেলের খুনের বিচার পুনরায় তদন্ত চেয়ে। হাইকোর্ট থেকে বীরভূম জেলা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয় তিন মাসের মধ্যে চার্জশিট দিতে। গত ৪ই ডিসেম্বর বীরভূম জেলা পুলিশ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় বোলপুর মহকুমা আদালতে।
হাইকোর্টের নির্দেশ আসার পর গত ১৬ নভেম্বর বীরভূম জেলা পুলিশের তরফে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করে।
সরকারি আইনজীবী ফিরোজ পাল জানান খুন ও অস্ত্র আইনে ধারা দিয়ে পুলিশ বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিয়েছে। বিজেপি নেতা মনিরুল ইসলাম এবং মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে সিপিএম কর্মী তিন ভাইয়ের আরেক ভাই আনারুল শেখ জানিয়েছেন , মনিরুল ইসলাম প্রথম থেকেই মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাজনীতি করেছে আমার তিন ভাইকে খুনের পেছনে মুকুল রায় আছে বলে আমার বিশ্বাস। মৃতদের মা জেরিনা বিবি দাবী করেন, মনিরুল ইসলাম ও মুকুল রায়ের ফাঁসি না দেখে আমার মৃত্যু হবে না । বীরভূম জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব মুখোপাধ্যায় বলেন বিজেপি সব ব্যাপারেই তৃণমূলের ষড়যন্ত্র দেখে যদি কেউ অন্যায় করে থাকে তাহলে তার শাস্তি পাবে আর অন্যায় না করলে আদালত থেকে বেকসুর খালাস পাবে এতে বিজেপি নেতৃত্ব এত ভয় কেন পাচ্ছে সেটাই বুঝে উঠতে পারছিনা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584