বিশেষ প্রতিবেদন, তমাল চক্রবর্তীঃ
‘৮ ই অক্টোবর’ ২০১৯। মঙ্গলবার। দূর্গা দশমীর দিন। উমার কৈলাসে ফেরার মুহূর্ত। চারিদিকে বিষাদের সুর। ভারাক্রান্ত মন। মনজুড়েও কেমন যেন বিষাদের ছায়া। পৃথিবীর নিয়ম মেনে যার আগমন হয় তার বিসর্জনও হয়।
কিন্তু মন মানতে চায় কই! কিন্তু উমার বিসর্জন হবেই। আসছে বছর আবার হবে সেই আশা নিয়ে, মন খারাপের ঝুলি কিছুটা হাল্কা করার জন্য আমি আমারই খুবই প্রিয় বন্ধু নির্মাল্য, বুবাই, রাজা, লাড্ডু গুপীকে নিয়ে গিয়েছিলাম এই ঘন জনবসতি থেকে কিছুটা দূরে। এক নির্জন নদীর ধারে। প্রকৃতির মাঝে সময় কাটিয়ে মনটাকে একটু তরতাজা করতে।
অভূতপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য । এক ধার দিয়ে নদী আপন গতিতে কলকল শব্দে বিরামহীন ভাবে বয়ে চলেছে। আর সেই দৃশ্য দেখে মনে পড়ল বইয়ের পাতায় পড়া লাইন “সময় বহিয়া যায় নদীর স্রোতের ন্যায় “।
এরপর উপরে দেখলাম নীল আকাশের বুকে সারি সারি সাদা মেঘের ভেলা। ঠিক তার নীচে রয়েছে কাশফুলের এক বিশাল সমুদ্র। শরৎ কালের এই চেনা দৃশ্য এক অপরূপ সৌন্দর্য বয়ে নিয়ে আসে যা ভাষায় প্রকাশ করতে আমি ব্যর্থ ।
এই প্রকৃতির কোলে বসে গল্প করছিলাম সকলে মিলে হঠাৎ-ই দেখলাম একটা ছোট্ট ছেলেকে, যার বাড়ি সম্ভবত নদীর ওপারে। সে নদীর ধারে বসে একাকী খেলে চলেছে। কোন খেলার সঙ্গী নেই ওর, প্রকৃতিকেই সে নিজের বন্ধু করে নিয়েছে আপন মনে। কোন দিকে কোন ভ্রুক্ষেপই নেই তার। সে বোঝে না উমা চলে যাওয়ার বিষাদ। সে শুধু জানে পুজো শেষ, দুগা পুজো শেষ।
আমি দেখে যাচ্ছিলাম, ছোট্ট ছেলেটা আপন মনে নদীর ধারে একা একাই তার ছোট্ট হাতে যতটা মাটি ওঠে তা নিয়ে নদীতে বাঁধ নির্মাণের এক খেলায় আপন মনে মেতে উঠেছে ।
তার শৈশবটা আর দশটা শিশুদের মতো নয়, সে শুধু জানে সে প্রকৃতির মাঝে খুব ভালো আছে আর প্রকৃতির মতো আর কোনো ভালো বন্ধু হয়না। সে জানেনা পাপ পূণ্য, হিংসা হানাহানি। আন্দাজ নেই এই কঠিন বাস্তবের। সে জানে ভালোবাসা। জানে তার রূপ রস গন্ধ। ওকে দেখে যেন নিজের শৈশবকে ফিরে দেখলাম।
আপন কাজে নিমগ্ন এই শিশুটিকে দেখে ওর ছবি না নিয়ে পারলাম না থাকতে। ইচ্ছে হলো পরিচয় করাই আপনাদের সঙ্গে।
তাই তুলে ফেললাম দূর থেকেই। সামনে গেলে ওর একাগ্রতা যদি নষ্ট হয়ে যায়।একলা মনে মুজনাইয়ে খেলছে ‘শিশু’ একলা মনে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584