পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা তথা ডিএ জানুয়ারি মাসেই মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এ দিন বীরভূমের ইলমবাজারে এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বক্তৃতা প্রসঙ্গে বলেন,রাজ্য সরকারের আর্থিক সংকট রয়েছে। তার মধ্যেও মানুষের যতটা সম্ভব আর্থিক সুরাহার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর পরই মুখ্যমন্ত্রী জানান, জানুয়ারি মাসে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ১২৫ শতাংশ বকেয়া ডি.এ মিটিয়ে দেওয়া হবে। এর পর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে তাঁদের ফারাক থাকবে মাত্র ২৩ শতাংশ।এ ব্যাপারে বাম ও বিজেপি-র সমালোচনাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতির জন্য সি.পি.এম দায়ী।৩৪ বছর ধরে বাংলায় শাসন করে কর্মচারীদের জন্য তাঁরা কিছুই করেননি। আবার কেন্দ্রে ক্ষমতায় থেকে বিজেপি রাজ্যের থেকে সব টাকা কেড়ে নিচ্ছে। বঞ্চনা করছে রাজ্যের সঙ্গে।এমনিতে রাজ্য সরকারি সমস্ত প্রকল্পের বিজ্ঞাপনেই লেখা থাকে ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায়।’ কিন্তু তাঁর অনুপ্রেরণা যে তাঁর বাবা, তা জানিয়ে দিলেন এ দিন।
![CM at birbhum](https://newsfront.co/wp-content/uploads/2019/01/CM-at-birbhum-1.jpg)
বুধবার থেকে বীরভূম সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল প্রশাসনিক সভার পর এ দিন যোগ দিয়েছিলেন, রাঙামাটি উৎসবে। সেই সরকারি সভামঞ্চ থেকেই দিদি বলেন, “আমি ছোট বেলায় দেখতাম বাবা সবাইকে সব দিয়ে দিচ্ছেন। আমি বলতাম আমাদের চলবে কী করে? আমার বাবা আমায় বলতেন, ‘যে খায় চিনি, তারে জোগায় চিন্তামণি।’ বাবার থেকেই শিখেছি মানুষের ধন মানুষকে বিলিয়ে দাও।”
সিপিএমের আমলের ৪৮ হাজার কোটি টাকার দেনা মাথায় নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে তাঁর সরকারকে। তবু সীমিত আর্থিক সামর্থ্যের মধ্যে বাংলায় তাঁর সরকার যে কাজ করেছে, তা দৃষ্টান্ত বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “বাবার অনুপ্রেরণাতেই শিখেছি মানুষের টাকা মানুষের কল্যাণের জন্যই ব্যয় করতে হয়।”
উনিশের লোকসভা ভোট আর কয়েক মাস বাকি। ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেত্রী টার্গেট করে ফেলেছেন, বাংলায় এ বার বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশটাই চাই। পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোটের আগে মমতা আরও বেশি করে মানুষের কাছে সরকারি প্রকল্পের কথা পৌঁছে দিতে চাইছেন। বেশ কয়েক দিন ধরেই শস্য বিমায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞাপন নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী।দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার সভা থেকে বলা শুরু করেছেন, “আমি দিই ৮০ টাকা।আর ওরা (পড়ুন কেন্দ্র) দেয় ২০ টাকা। কুড়ি টাকা দিয়ে ওরা দিল্লির নেতাদের ছবি টাঙাবে, রাজনীতি করবে সেটা কিছুতেই মেনে নেব না। ওদের কুড়ি টাকার দরকার নেই। আমার কৃষকদের আমি ৮০ টাকা দিতে পারলে, আরও কুড়ি টাকাও দিতে পারব।” এ দিনও সেই প্রসঙ্গের অবতারণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী, সবুজ সাথী, অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য গৃহীত সামাজিক প্রকল্প-সহ বঙ্গ সরকারের সমস্ত প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন দিদি। রাজ্যের শিল্পীদের জন্যও যে তাঁর সরকার কল্পতরু, তাও আবার মনে করিয়ে দেন লালমাটির জেলায় রাঙামাটির উৎসবে।
স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে তীব্র আক্রমণ করেন বিজেপি-কেও। বলেন, “আমরা এখানে মানুষকে সব বিলিয়ে দিচ্ছি। আর কেন্দ্রীয় সরকার সব লুটে নিচ্ছে।” সন্দেহ নেই, মূল্যবৃদ্ধি, জিএসটি এবং নোটবন্দির কথা বোঝাতে চেয়েছেন মমতা।
যদিও বিজেপি-র এক নেতা বলেন, “চিন্তামণি তো দিদিমণি নিজেই। কিন্তু চিনি খাচ্ছে শুধু তাঁর ভাইয়েরাই। জনগণ আর পাচ্ছে কই!”
আরও পড়ুনঃ বাংলা মাধ্যমের বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় উদ্বোধন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584