ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে জট মুক্ত হল কয়লা শিল্প

0
86

নিজস্ব সংবাদদাত,বীরভূমঃ  “জমির মূল্য  ঠান্ডা ঘরে বসে নয়  এলাকায় গিয়ে সমস্ত চাষীদেরকে নিয়ে বসে ঠিক করতে হবে” একদিন আগে এমনই দাবি করছিলেন  বীরভূমের লোবা কৃষিজমি রক্ষা কমিটি।সোমবার সিউড়িতে প্রস্তাবিত লোবা কয়লা খনি নিয়ে পুনর্বাসনসহ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে তাদের দাবি মেনে নেওয়া হল আর এই দাবি মেনে মাঠে গিয়ে সার্ভে এবং নতুন তিনটি মৌজা সংযুক্ত করা হলো। বৈঠক শেষে কৃষিজমি রক্ষা কমিটি থেকে প্রশাসন সকলেই বৈঠক নিয়ে সন্তোষপ্রকাশ করলেন এবং আশাবাদী হয়ে জানালেন খুব শীঘ্রই কয়লা শিল্পের জন্য কাজ শুরু হয়ে যাবে।

জমি অধিগ্রহণ থেকে পুনর্বাসন এই নিয়ে শুরু হয়েছিল লোবার কয়লা শিল্পের জট ।যদিও পরে কৃষি জমি রক্ষা কমিটি সরকারের কাছে আবেদন করে  কয়লা শিল্প  শুরু করার । তারপরেই বেঙ্গল এমটাকে বাদ দিয়ে ডিভিসি সরাসরি কাজ করতে শুরু করে। ডিভিসি, জেলাশাসক, সভাধিপতি এবং কৃষিজমি রক্ষা কমিটি সদস্যদের নিয়ে কমিটি গঠন হয় এবং ঠিক হয় প্রস্তাবিত খনি এলাকার ফের সামাজিক নিরীক্ষণ এবং কোন কোন এলাকা খনির জন্য নেওয়া হবে সেটাও ফের আলোচনা হবে। কৃষি জমি রক্ষা কমিটির দাবি সমস্ত নিরীক্ষণের কাজ  শেষ করে তার পরেই পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা হবে সেটা আবার চাষিদেরকে  সঙ্গে নিয়ে করতে হবে এবং প্রশাসন এবং ডি ভি সি তাদের দাবি মেনে নিয়েছে।

নিজস্ব চিত্র

বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের বির্স্তীণ এলাকা জুরে লোবা পঞ্চায়েত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাটির নিচে রয়েছে উন্নতমানে কয়লা। কিন্তু সেই কয়লা উত্তোলন করে সেখানে শিল্পের জন্য আগেও উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সেখানে বিশেষ কারনে জমি জটের কারনে আটকে গিয়েছিল সেই কয়লা শিল্প। ফলে সেখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল বেঙ্গল এমটা। তবে এমটা সেখান থেকে সরে আসার সময় একটি মাটি কাটার মেশিন সেখানে ফেলে আসে। সেই মেশিনটি উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছিল ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর। ওই দিন গ্রামবাসীরা মারমুখি হয়ে উঠলে তাদের উপর পুলিশ গুলিও চালিয়েছিল। ঘটনায় পুলিশ ও সাধারন মানুষ মিলিয়ে প্রায় জনা কুড়ি  জখম হয়েছিল। ঘটনায়  সেই ঘটনার পর থেকে জমি জটের কারনে থমকে গেছিল সেখানকার  কয়লা শিল্প। কিন্তু পরে ফের কৃষি জমি রক্ষা কমিটি  তাদের অবস্থান বদল  করে প্রশাসনের কাছে আবেদন করে  কয়লা শিল্পের জন্য পুনরায় কাজকর্ম শুরু হোক।  প্রশাসন তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে ডিভিসি কাজকর্ম শুরু করে।

২০১১ সালের পর থেকেই লোবা এলাকায় উন্মুক্ত কয়লা খনি করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে  বেঙ্গল এমটাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক এমটার তরফে জমি অধিগ্রহণের কাজও শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু মানুষ সেখানে জমি দিতে না চাওয়ায় থমকে যায় খনির কাজ। সরকারি রিপোর্ট মোতাবেক এলাকায় প্রায় ৩৩৫৩ একর জমিতে রয়েছে কয়লা। সেই মতো কয়লা খনি করতে এই গোটা পরিমাণ জমিই প্রয়োজন ছিল। কিন্তু দালাল চক্রের মধ্যস্থতার কারনে গ্রামবাসীরা তাদের জমি দিতে নারাজ হয়। কারন অভিযোগ তারা জমির সঠিক মূল্য পাচ্ছিল না বলে অভিযোগ। তাই তারা জমি না দিয়ে জমি রক্ষার আন্দোলনে নামে। তৈরী হয় লোবা কৃষি জমি রক্ষা কমিটি। লোবা কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সম্পাদক জয়দীপ মজুমদার জানিয়েছেন, “আমরা আগেও চেয়েছি সরকার ন্যায্য মূল্যে জমি নিয়ে এখানে শিল্প করুক। কিন্তু পুনর্বাসন কি হবে  সেটা চাষীদেরকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনা করতে হবে ঘরে বসে নয় দ্বিতীয়বারের জন্য যখন  এই প্রকল্পের  কাজের অগ্রগতি শুরু হল তখন ঠিক হয়েছিল  সমস্ত এলাকার সার্ভে হওয়ার পর  পুনর্বাসনের ব্যাপারগুলি আলোচনা হবে  কিন্তু সার্ভে শেষ না করেই পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা করা হবে হবে না আমরাই দাবি করেছিলাম আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি শিল্পের জন্য কাজ শুরু হয়ে যাবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন আমাদের আজকের বৈঠকে ঠিক হয়েছে আরও নতুন তিনটি মৌজা এই শিল্পের জন্য নেওয়া হবে এবং মাঠে মাঠে গিয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর জমির রেকর্ড এবং বর্গা এবং পাট্টা দারদের বিষয়টি দেখবেন। তারপরেই অধিগ্রহণ পুনর্বাসন বিষয়টি দেখা হবে।

 

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here