সুদীপ পাল, বর্ধমানঃ
মেধা আছে, মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গেলে যে নম্বর দরকার তাও আছে তবু ভর্তি হওয়া যাচ্ছে না! কারণ ভর্তি হতে ‘দাদা’রা যে টাকার দাবি করছে তা অনেকেই দিতে অক্ষম। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কঠোর পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন। বর্ধমান জেলা পুলিশও প্রচার অভিযানে নেমেছে। কলেজের সামনে ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। ফেসবুকেও নিয়মিত প্রচার চালানো হচ্ছে। ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে – কলেজে ভর্তির জন্য কেউ টাকা চাইছেন? কেউ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন টাকার বিনিময়ে কোন নির্দিষ্ট বিভাগে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার? এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেই সেই ব্যক্তির ব্যাপারে জানান পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশকে, দিন-কাল এবং কলেজের নাম সহ। জানান নিজের নাম ঠিকানা ও ফোন নম্বর।
এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায় চৌধুরী প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন, বর্ধমান রাজ কলেজ, বিবেকানন্দ কলেজ, শ্যামসুন্দর কলেজ, গলসী কলেজ সহ একাধিক কলেজে তৃণমূলের নেতারা কলেজের বাইরে বসে রয়েছেন।
পুলিশি প্রচার অভিযানের পরেও অভিযোগ উঠেছে, বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজে পাস কোর্সের জন্য ১০ হাজার টাকা এবং অনার্সের জন্য ২০ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে। অভিযোগ সম্পর্কে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য ব্যানার্জ্জী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য নেতৃত্ব এবং তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কলেজে ভর্তি নিয়ে কোনোরকম তোলাবাজি বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও কেউ যদি এই কাজ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বর্ধমানের বাসিন্দা সেখ দানিশ আহমেদ অভিযোগ, তিনি বাংলায় অনার্স পড়ার জন্য বর্ধমানের বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য গিয়েছিলেন। কলেজের এক নেতা জানান, পাস কোর্সে ভর্তির জন্য ১০ হাজার টাকা এবং অনার্সে ভর্তির জন্য ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। দানিশ বলেন, “আমার বাবা লরির চালক। এত টাকা দিয়ে পড়া চালানো সম্ভব নয়। ”
এখন প্রশ্ন দানিসের মত ছেলেমেয়েদের দায়িত্ব নেবে কে? তাই শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে ভর্তির যে অভিযোগ উঠেছে তাতে সংযোজিত হল পূর্ব বর্ধমান জেলাও। হীরক রাজা থাকলে বলতেন, ‘শেখার কোন শেষ নাই, শেখার চেষ্টা বৃথা তাই।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584