কালনায় শিলাবৃষ্টিঃ পাট, বোরো ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি

শ্যামল রায়,কালনাঃ

পাকা বোরো ধান কাটতে শুরু করেছেন চাষিরা। তিল গাছে ফুল আসাও শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে পাটগাছও অনেক বড় হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতেতে বৃহস্পতি ও শুক্রবার শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে পাট ও ধান ক্ষেতের। শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। মন্তেশ্বর ব্লকেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বোরো ধানের।

শনিবার চাষীদের মাঠ পরিদর্শন করেন সরকারি আধিকারিকরা। সরকারের কাছে ক্ষতির তালিকা পাঠানোর জন্য এদিন এলাকা ঘুরে দেখেন কৃষি দপ্তরের কর্মচারীরা। এদিন কৃষি দপ্তরের কর্মচারী অসীম হালদার ও বি নন্দ কুন্ডু এলাকার চাষীদের সাথে কথা বলেন এবং শিলাবৃষ্টিতে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এদিন মুসলিম পাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়কৃষ্ণপুর, হালদিপাড়া, মহাদেবপুর, নওগাঁ সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করেন আধিকারিকরা।

আরও পড়ুনঃ করোনা আবহে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন দীঘার মানুষ

এলাকার চাষী পিকু শেখ নজাই শেখ অভিজিৎ পাল বাপি মন্ডল ,কুদু শেখ জানান, ‘শিলাবৃষ্টি এবং ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আমাদের। বহু জমির পাকা ধান কাটা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে জমির ধান। শ্রমিক সমস্যার কারণে ধান ঘরে তোলা সম্ভব হয়নি। তাই ওই ধান নষ্টের মুখে।’ পিকু শেখ আরো জানান, তিল গাছে সবেমাত্র ফুল এসেছে। শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হল তিন গাছের। সেই সাথে পাট জমিরো ক্ষতি হল।

পাট গাছ ইতিমধ্যেই অনেকটাই বড় হয়ে গিয়েছিল। শিলাবৃষ্টিতে তা ভেঙে পড়েছে। ফলে নতুন করে আর বীজ ছড়িয়ে পাট গাছ তৈরি করা বা তিল গাছ  তৈরি করা সম্ভব নয়।’ এলাকার চাষিদের দাবি, যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তাতে আমরা ফসলের ন্যায্য দাম পাবো না। সরকার যদি ক্ষতিপূরণ দিয়ে সাহায্য করে থাকে তাহলে আমরা ভীষণ ভাবে উপকৃত হব। কারণ পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লকের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি নির্ভর।

কৃষকরা জানান, ‘ইতিমধ্যে ব্লক থেকে কৃষি দফতরের আধিকারিকরা খোঁজখবর নিয়েছেন এবং পরিদর্শন করেছেন যাতে আমরা সাহায্য পেতে পারি।’ কৃষি অধিকর্তা জনার্ধন ভট্টাচার্য্য জানান, ‘আমরা খোঁজখবর নিয়ে তালিকা তৈরি করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করব যাতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারি সাহায্য পেতে পারেন।’
এছাড়াও কালনা ২ নম্বর ব্লক ধাত্রীগ্রাম এবং মন্তেশ্বর এলাকাতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধানের। শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে অন্যান্য ফসলেরও। কালনা ২ নম্বর ব্লকের প্রণব রায় জানান, ‘ সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কমবেশি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যাতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন সে ব্যাপারে সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।’