ঈপ্সিতা নায়ক
শহুরে অত্যাধুনিক জীবনে ব্যস্ততার ঘেরাটোপে আবদ্ধ মানুষ। সময়ের ছকে বন্দি। জীবন এখানে এতো দ্রুত গতিতে ছোটে যে তার সাথে পা মেলাতে গিয়ে আমরা ভুলে যাই যত্ন নিতে। দিনের শেষে যে জায়গা আমাদের সমস্ত ক্লান্তি দূর করে তা হল আমাদের নিজেদের ঘর। কিন্তু তার কতটা খেয়াল আমরা রাখার সময় সুযোগ পাই!
এখন এই লকডাউন পিরিয়ডে জীবনে মূলত কর্মে পড়েছে বিরতি। মানুষ এখন ঘরবন্দি হলেও সময়ের কাছে বন্দি নয়। তাই এই সময়কে কাজে লাগিয়ে নিজের ঘরকে করে তুলুন স্বাচ্ছন্দ্যময়।
চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি থাকার ফলে অনেকেই অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। কিন্তু আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যাদের নিজেদের বাসস্থান আছে তারা অনেকাংশে ভালো জীবন যাপন করছেন। তাই অহেতুক চিন্তিত না হয়ে নিজের ঘরকে সময় দিন যা ব্যস্ততার কারণে হয়ে ওঠে না। সুন্দর, গোছানো ঘর আপনার অজান্তেই স্ট্রেস দূর করে দেবে বইকি! আর তার জন্য রইল কিছু টিপস।
পুরোনো কিছু চাদর বা শাড়ি যা বর্তমানে অব্যবহৃত তা আপনি ব্যবহার করতে পারেন জানালা পর্দা, লফ্ট-এর কভার, টেবিল ক্লথ, কুশন কভার হিসাবে। যেহেতু গরমকাল তাই রং খুব গাঢ় না হলেই ভালো, সাথে হালকা ফ্লোরাল ডিজাইন বা পাতার মোটিফ।
আরও পড়ুনঃ হাত ধোয়ার পাশাপাশি করোনা রুখতে মানতে হবে সব নিয়ম
ডিজাইন আপনার পছন্দ মত বেছে নিতেই পারেন তবে তা খুব লাউড বা জমকালো যেন না হয়। এভাবে আপনার লিভিং বা বেড রুমে একটা নতুন লুক আসবে সাথে গরমের দিনে ফ্রেশ কালার এক ফ্রেশ ফিলিং দেবে।
যেহেতু অনেককেই এখন ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে হচ্ছে তাই বাড়িতে বসে অফিসের কাজের মনোভাব তৈরী করাটা একটু প্রব্লেমেটিক। এর সমাধান করা যায় অনায়াসেই।
বেডরুমে যদি কোনো স্টাডি টেবিল থাকে তাহলে তো কথাই নেই। একটু রিঅ্যারেঞ্জ করতে পারেন সেটিকে। টেবিলের জিনিসপত্র সরিয়ে অফিসের কাজের জিনিস অর্থাৎ ল্যাপটপ, ফাইল ইত্যাদি রাখতে পারেন সেখানে। এছাড়াও একটা কফি মগ, পেন স্ট্যান্ড, ক্যালেন্ডার ইত্যাদি রাখতে পারেন টেবিলে। এমন জিনিস যা সাধারণত অফিসের টেবিলে আপনি সচরাচর দেখেন না তা ওই টেবিল থেকে সরিয়ে দেওয়া ভালো।
আরও পড়ুনঃ চিকেন রেজালার রেসিপি
তাছাড়া টেবিল না থাকলে আপনার বাড়ির কোনো এক খালি কর্নারকে আপনি ব্যবহার করতে পারেন। যেটা দেখলে আপনার একটাই জিনিস মনে আসবে – ‘ওয়ার্ক কর্নার’। এটা পরবর্তীকালেও কাজের ক্ষেত্রে লাভজনকই হবে, মন্দ নয়।
ঘরকে আরো নিজের করে তুলতে ব্যবহার করতে পারেন নিজেরই কিছু সিগনেচার টাচ। বানিয়ে ফেলতে পারেন রঙিন কাগজ বা পুরোনো খবরের কাগজ দিয়ে ল্যাম্পশেড। তাতে লাইট স্ট্রিপ বা লো লাইট লাগিয়ে রেখে দিতে পারেন বেডরুমে। এই লো লাইটে আপনার বেডরুম যেমন দেখতে সুন্দর লাগবে তেমনই আপনার ক্রিয়েটিভিটি আপনার কমফোর্ট জোনকে করবে আরো কম্ফোর্টেবল।
আপনার বাড়িতে ব্যালকনি বা ছাদ থাকলে সহজেই তৈরী করে ফেলতে পারেন কিচেন গার্ডেন। এর জন্য বাজার থেকে চারা আনার প্রয়োজন পড়বে না। কিছু সবজি যেমন আলু, পিঁয়াজ, স্প্রিং ওনিয়ন, লঙ্কা, আদা ইত্যাদি অনায়াসেই বাড়িতে উৎপন্ন করতে পারেন।
সুন্দর অ্যারোমা মুড্ আপ্লিফমেন্টে যথেষ্ট সাহায্য করে। তাই ঘরে মোমবাতি থাকলে তা দিয়ে বেশ ইন্টারেষ্টিং একটা জিনিস তৈরী করে ফেলা যায়, সেন্টেড ক্যান্ডেল। পুরোনো মোমবাতি গলিয়ে তাকে নতুন ছোট পাত্রে রাখতে হবে। কোনো বিশেষ রং পেতে হলে ক্রেয়ন এর রং ব্যবহার করতে পারেন, মোম গলানোর সময় তাতে দিয়ে দিতে হবে।
আর সেন্টের জন্য অ্যারোম্যাটিক লিকুইড বা চন্দন, গোলাপের পাপড়ি বা যে কোনো গন্ধযুক্ত ফুলের পাঁপড়ি গলা মোমে ফেলে তা জমাট বেঁধে গেলে জ্বালিয়ে রাখতে পারেন লিভিং, বেডরুম, ডাইনিং টেবিলে। আর এভাবেই আপনার ঘর হয়ে উঠবে আরও সুন্দর, আর ফাঁকা সময়ের উপযুক্ত ব্যবহারও হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584