চাহিদা হারিয়ে ধুঁকছে কদমাশিল্প

0
456

সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ

মানকরের ঐতিহ্যবাহী কদমাশিল্প ক্রমশই রুগ্ন হচ্ছে চাহিদার ও উপযুক্ত কারিগরের অভাবে।অথচ একসময়ে মানকরের কদমা পাড়ি দিত ভিন রাজ্যে।এমনকী,যেত বিদেশেও।বর্ধমানের সীতাভোগ,মিহিদানা, শক্তিগড়ের ল্যাংচার সাথে উচ্চারিত হত মানকরের কদমার নাম। কিন্তু সেই ঐতিহ্য এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে যাচ্ছে।স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন,বেশ কয়েক জন এখনও কদমা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখলেও বেশির ভাগই অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন।

কদমা।নিজস্ব চিত্র

ফলে,সেই রমরমা আর নেই মানকরের কদমার।মানকরে ১০ গ্রাম থেকে শুরু করে ১০ কিলোগ্রাম ওজনের কদমাও তৈরি করে থাকেন শিল্পীরা।তাঁদের কথায় চিনি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টির চাহিদা সারাবছর ঢিমেতালে চলে তবে পুজোর সময়ে ভালই থাকে। স্থানীয় দুর্গা পুজো, কালী পুজোতে দেবীকে বিশাল আকারের কদমা নিবেদন করা হত।কিন্তু সেই কদর এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে।কমে গিয়েছে কদমা তৈরির শিল্পীর সংখ্যাও।কদমা শিল্পীরা বলেন,নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই শিল্প নিয়ে উৎসাহ কম।ফলে, নতুন কারিগরের অভাব তৈরি হয়েছে।

মানকরের কদমার বিশেষত্ব হল,এর উপরে শক্ত হলেও ভিতর ফাঁপা রাখা হয়।মানকরের বাসিন্দা আনন্দগোপাল গোস্বামী জানান,কথিত আছে,বর্ধমানের রানি উপহার দেওয়ার জন্য এখানকার কদমার ভিতরে ঘণ্টা ভরে আমেরিকায় নিয়ে গিয়েছিলেন।কদমার ভিতরে সেই ঘণ্টা নাকি বাজত।আগে বিয়েতে উপহার দেওয়ার জন্য মানকরের কদমা ব্যবহার করত।অর্থাৎ কদমার ভিতরে বিয়ের শাড়ী,গয়না ইত্যাদি ভরা থাকত।যা উপর থেকে বোঝা যাবে না।কিন্তু কদমা ভাঙলেই সেই উপহার বাইরে বেরিয়ে আসে।মানকরের কদমা ব্যবসায়ীরা জানান,এখন বিভিন্ন পুজোয় বাজারে যন্ত্রের তৈরি কদমার ব্যবহার বেড়েছে।কিন্তু হাতে তৈরি কদমার গুণগত মান অনেক ভাল।

কদমা বিক্রেতা।নিজস্ব চিত্র

চিনির সাথে ছানার জল পাক দিয়ে দক্ষতার সঙ্গে কদমা তৈরি করতে হয়। তবে তা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ও ব্যাপক পরিশ্রম হয়।মানকর স্টেশন বাজারে মিষ্টির দোকান রয়েছে নিমাই নাগ ও রবি নাগের। তাঁরা জানান,কদমা শিল্পী মানকরে কমে গেলেও কদমার চাহিদা রয়েছে।তাঁরা এবং মানকর হাটতলায় মানিক কর প্রমুখরা এখন কদমা তৈরি করেন।হাতে তৈরি কদমায় কোন রকম ভেজাল দ্রব্য মেশানো হয় না।ফলে রেডিমেড কদমার থেকে মানুষ হাতে তৈরি কদমা বেশি পছন্দ করে। অমরারগড়ের সাবেকি কালী পুজোর এক সদস্য বলেন, মায়ের পুজোয় হাতে গড়া কদমা দেওয়া হয়। অর্ডার দিয়ে বানানো হয় কদমা।রবিবাবু জানান,ছোট বড় মিলিয়ে এখনও অব্দি পুজোর মরসুমে কদমার ভালো চাহিদা রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ সংস্কার কবে হবে জানা নেই এলাকাবাসীর 

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here