নাভি দেখে অস্ত্রোপচারের নির্দেশ, প্রতারণা করে টাকা উপার্জনের চেষ্টা শল্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

0
83

শিবশঙ্কর চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

সরকারি হাসপাতালে শল্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হাসপাতালে চিকিৎসা করে মোটা টাকা নিয়ে নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার করার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়।

অভিযোগ, জেলার গঙ্গারামপুর মহুকুমা হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক দেবাশীষ সেন টাকা নিয়ে নার্সিংহোমের অপারেশন টেবিলে রোগীকে ভর্তি করে অস্ত্রোপচার না করতে পারার অক্ষমতা প্রকাশ করে রোগীকে ফিরিয়ে দিলেও, ওই শল্য চিকিৎসক টাকা ফেরত দেননি। আর এই নিয়ে আজ জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে’র নিকট গঙ্গারামপুরের মিশন মোড়ের বাসিন্দা তাপস সরকার তার ৬ বছরের রোগী শিশু অঙ্কুশকে নিয়ে এসে এই অভিযোগ জানান।

doctor order operation to baby after checking belly | newsfront.co
তাপস সরকার ও ছেলে অঙ্কুশ সরকার। নিজস্ব চিত্র

অপরদিকে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে জানান, তাপস বাবু তার ছয় বছরের শিশুকে নিয়ে অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক আরও জানান, অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দু’পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছি। সেখানে সামনাসামনি দু’পক্ষের কথা শুনে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু উনি নার্সিংহোমে টাকাটা দিয়েছেন এবং বিষয়টি আমার হাসপাতালের মধ্যে হয়নি, তাই এ নিয়ে আমার কিছু করার নেই। এই অপারেশন একটু জটিল এবং জেলায় পেডিয়াট্রিক সার্জেন না থাকার দরুণ হয়তো ওই চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করার সাহস পাননি।

doctor order operation to baby after checking belly | newsfront.co
বিস্ফারিত নাভি দেখে হার্নিয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন শল্য চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র

গঙ্গারামপুরের মিশন মোড়ের বাসিন্দা পেশায় তাঁতশিল্পী। তাপস সরকারের অভিযোগ, গত ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি তাঁর ছয় বছরের শিশু সন্তান অঙ্কুশের পেটে নাভির কাছের উঁচু ঢিপির মতো অংশের চিকিৎসা করানোর জন্য গঙ্গারামপুরের মহুকুমা হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক দেবাশীষ সেনকে দেখান।

আরও পড়ুনঃ আদিবাসীদের সম্মান জানাতে পঞ্চায়েত কার্যালয়ের নাম অলচিকিতে লিখন

ডাক্তারবাবু সন্তানকে দেখে জানান এটা হার্নিয়া। এখনই অস্ত্রোপচার না করা হলে শিশুকে পরবর্তীতে অসুবিধের সম্মুখীন হতে হবে। তবে এই অস্ত্রোপচার হাসপাতালে সম্ভব নয়। তাই স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ দেন তিনি। এর জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি।

তাপসবাবু জানান, এ বাবদ ৫ হাজার টাকাও তিনি নার্সিংহোমে আমার কাছ থেকে নেন। তাপস বাবুর অভিযোগ, সন্তানের ভবিষ্যতের সুস্থতার কথা চিন্তা করে অপারেশন করতে রাজি হন তিনি। ৫ তারিখে ওই চিকিৎসকের কথা মতো নার্সিংহোমে আমার ছয় বছরের সন্তানকে ভর্তি করি এবং শল্য চিকিৎসকের হাতে অগ্রিম বাবদ ৫ হাজার টাকা তুলে দিই।

তাপস বাবু আরও বলেন, কিন্তু আমার সন্তানকে ওই শল্য চিকিৎসক নার্সিংহোমের অপারেশন টেবিলে তুলেও পরে অপারেশন করার ব্যাপারে অক্ষমতা প্রকাশ করেন এবং অপারেশন টেবিল থেকে নামিয়ে দেন। এরপরে আমি আমার সন্তানকে নিয়ে মালদা মেডিকেল কলেজে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা আমার ছেলেকে দেখে হেসে জিজ্ঞেস করেন, কোন চিকিৎসক একে অস্ত্রোপচারের কথা বলেছে? তাদের অভিমত, শিশুদের এরকম নাভি উঁচু হয়ে থাকে কিছু ক্ষেত্রে।

পরে বয়স বাড়ার সাথে সাথে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। এরপরেই তিনি বাড়ি ফিরে আসেন তার সন্তানকে নিয়ে। কিন্তু তার মতো অন্য কাউকে যাতে আর এরকম হয়রানির শিকার না হতে হয় তাই তিনি আজ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সাথে দেখা করে ওই শল্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here