শিব শংকর চ্যাটার্জ্জী,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব কিছুই এখন ডিজিটাল হয়ে গেছে।বর্তমান ডিজিটাল আলোকসজ্জার কাছে হেরে যেতে বসেছে ঐতিহ্যের মাটির প্রদীপ।প্রদীপ বানিয়ে একরকম লাভ হয়না বললেই চলে।পূর্বপুরুষ স্মৃতি ধরে রাখতেই আজও মাটির প্রদীপ তৈরি করে আসছেন বালুরঘাট ব্লকের মাহিনগর এলাকার কুমোররা।অন্য পেশাকে বেছে নিয়ে বর্তমান প্রজন্মও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এর থেকে।তবে যত দিন বেঁচে আছেন মাটির প্রদীপ তৈরি করবেন বলে কুমোর সুদেব চন্দ্র পাল জানিয়েছেন।
দীপাবলি মানেই আলোর রসনা।একটা সময় ছিল যখন দীপাবলিতে মাটির প্রদীপ ব্যবহৃত হত।মাটির প্রদীপে সরষের তেলে দিয়ে বাড়ির উঠোন থেকে দেওয়ালে জ্বালিয়ে দেওয়া হত।সেই সময় প্রদীপের চাহিদাও ছিল তুঙ্গে। কুমোররা নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে প্রদীপ বানাতেন।বছর কয়েক আগে হঠাৎ বাজার ছেয়ে যায় চায়নার টুনি বাল্পে।তা ধীরে ধীরে বাজার দখল করতে থাকে। যুগের বিবর্তনের সঙ্গে বর্তমানে এলইডি আলো বাজার দখল করেছে। সাধারণ মানুষ মুখ ফিরিয়েছে মাটির প্রদীপ থেকে।নিয়ম পালনের জন্য কিছু প্রদীপ নেয় এখনও সাধারণ মানুষ।তবে তা না নেওয়ার সমানই। হাজার চেষ্টা করেও মৃত প্রায় মাটির প্রদীপকে আর আগের জায়গায় ফেরানো সম্ভব হয়নি।চাহিদা কমলেও এখনও দিপাবলীতে বাড়তি প্রদীপ তৈরি করেন বালুরঘাট মাহিনগর এলাকার কুমোররা।এবারও তারা প্রদীপ তৈরি করছেন।মাটি থেকে সবই কেনা।একটা প্রদীপ তৈরি করে তা পোড়ানোর পর বাজার জাত করতে খরচ পরে ৩০-৪০ পয়সা।আর সেই প্রদীপ বিক্রি হয় ৪০-৫০ পয়সায়।প্রদীপ বিক্রি করে লাভের মুখ খুব কমই দেখেছেন তারা।পুরনো ঐতিহ্য আর এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতেই আজও তাঁরা প্রদীপ বানিয়ে আসছেন।তবে তাদের পর নতুন প্রজন্ম এই পেশায় আর আসছে না।তাই তারা এখন লাভের আশায় নয় নিজের শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতেই মাটির প্রদীপ তৈরি করছেন।
আরও পড়ুনঃ ঐতিহ্যে এখনো ভাস্বর দীপাবলি পুতুল
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584