শ্যামল রায়,নদীয়াঃ
সংগ্রামপুর এর পর এবার নদীয়া জেলার শান্তিপুরে চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যু হল ১১জনের।পুলিশ তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে একাধিক জনকে গ্রেপ্তার করেছে।অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চন্দন নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে এই মদ বিক্রি হয়, সচরাচর এই মদ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে শ্রমজীবী মানুষের।কেউ ইটভাটায় কাজ করে কেউ দিনমজুর খাটে তাদের মৃত্যু হয়েছে বিষ মদে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে সকাল বেলা খালি পেটে অনেকে এই চোলাই মদ খেয়ে কাজে বেরোই আবার কাজ শেষে সন্ধ্যেবেলায় বিনোদন বলতে চোলাই মদ খাওয়া।চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি।রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অসীম মিত্র মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা দেবে বলে ঘোষণা করেছেন।অমিত মিত্র আরও জানিয়েছেন কিছু মদ অন্য রাজ্য থেকে এখানে আসে বিহার সহ বেশ কিছু রাজ্যের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন।এছাড়াও এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আবগারি দফতরের মোট ১২ জন কর্মী আধিকারিককে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ইতিমধ্যে সাসপেন্ড করা হয়েছে।এর মধ্যে রয়েছেন আবগারি দপ্তরের শান্তিপুর সার্কেলের ইন্সপেক্টর এবং ৮ জন কনস্টেবল ;রানাঘাট রেঞ্জ এর ডেপুটি কালেক্টর কেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। নদীয়া জেলার শান্তিপুর এর নৃসিংহপুর চৌধুরীপাড়ার চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ উঠেছে এলাকায়।অনেকের অভিযোগ যে এখন এই ধরনের মদ মুদিখানা দোকানে পাওয়া যাচ্ছে।অভিযোগ যে পুলিশ প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা জেনেশুনে এই সমস্ত চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না তাই বেআইনিভাবে আড়ালে আবডালে গ্রামগঞ্জে বিক্রি হচ্ছে মদ আর এই সমস্ত মদ খেয়ে শিকার হচ্ছেন গরীব মানুষরা।মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। শান্তিপুরে অনেকেই বলছেন এখন বিভিন্ন রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এই সমস্ত চোরাকারবারিদের ভিড় বেশি।প্রতিটি রেল স্টেশনের পাশেই ঝোপ ও বাগানের মধ্যে চোলাই মদ বিক্রিকারীরা ঠিক করে অনায়াসেই বিক্রি করে চলছেন মদ অথচ রেলের নিরাপত্তায় থাকা আরপিএফ এবং জি আর পি জেনে শুনেও এ সমস্ত কারবারিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিন মদ খেয়ে রাতে মারা গিয়েছে বাসুদেব মাহাতো এবং লক্ষ্মী মাহাতো।আরেকজনের নাম পাওয়া যায়নি মোট মৃত্যু হয়েছে ১১জনের।
যদিও নদীয়ার মত মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে বলে অনেকেই মনে করছেন।তাই জেলা জুড়ে যে সকল চোলাই মদ কারবারিদের চোখে পড়েনি বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গায় আপাতত ঠেক গুলোর দেখা মিলেছে।অনেকেই বলছেন এরকম ভাবে দু এক দিন কেটে গেলে ফের আবার রমরমা কারবার শুরু করবে চোরাকারবারিরা।আবার কেউ মনে করছেন এইভাবে লাগাতার যদি পুলিশ প্রশাসন এবং আবগারি দফতরের লোকেরা অভিযান চালায় তাহলে এ সমস্ত কারবার বন্ধ হতে পারে এবং এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে তারা মনে করছেন। নদীয়া জেলার ডি এম সুমিত গুপ্ত জানিয়েছেন যে সমস্ত এলাকা জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসন এবং পুলিশ দফতরের আধিকারিকরা দফায় দফায় এলাকা পরিদর্শন করছেন এবং কথা বলছেন এলাকার মানুষদের সঙ্গে।তবে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার মানুষ তারা জানিয়েছেন যে পুলিশকে বারবার বলা সত্ত্বেও এই সমস্ত কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেও পুলিশ কোনো কাজ করেনি।তবে চোলাই মদ বিক্রি এবং বিভিন্ন দোকানপাট এগুলো সম্পর্কে আবগারি দফতরের পুলিশদের নজর রাখা দরকার এবং অনতিবিলম্বেই বন্ধ করে দেয়া উচিত বলেই সাধারণ মানুষের দাবি।
আরও পড়ুনঃ চোলাই মদের বিষক্রিয়ার বলি সাত
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584