ক্ষমতা দখলের স্নায়ু যুদ্ধে তপ্ত কন্নড় রাজনীতি

0
93

শুভময় সেন, নিউজফ্রন্টঃপাল্লা কার দিকে ভারি? এই মুহুর্তে এই সহজ প্রশ্নের উত্তর ষোড়শীর ও জানা। কর্ণাটকের বিধানসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণা হতেই বিজেপি’র দামাল উদ্দাম এই মূহুর্তে ঠান্ডা ঘরে। তাদের গেরুয়া আবিরে জল ঢেলে দিয়ে হারানো রাজ্য নিজের জিম্মায় রাখতে পা চালিয়ে রাজভবনে হাজির হলেন যুবরাজের কংগ্রেস। সঙ্গে নিলেন জনতা দল সেকুলার বা জে.ডি.এস কে। না নিয়ে তো উপায় নেই। জে ডি এস এখানে গ্রেট ফ্যাক্টর। আর সোনিয়াজীর মোক্ষম দাওয়াইয়ে বিজেপির জয়ের আনন্দ উৎসব আপাতত শিকেয় উঠেছে। ২২২ আসনের কর্ণাটকের বিধানসভা ভোটে ১০৪টি আসন পেয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল। কিন্তু মাত্র আটটি আসন কম থাকায় ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে পারে নি তারা।প্রথম দিকে ভাবা হয়েছিল বিজেপিই সরকার গড়তে চলেছে।টিভির চ্যানেল গুলোর কেউ কেউ ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে প্রায় বসিয়ে দিয়েছিল। রাহুল গান্ধী ও হতাশায় ইভিএম কে দুয়ো দিয়েছে তখন। খেলা ঘুরল বিকেল যত এগিয়ে এলো।ভোটের ফলাফলে যে জোটই ভবিষ্যত তা বুঝতে অসুবিধা হয় নি কংগ্রেসের। ১০জনপথের বার্তা তখন পৌঁছে গিয়েছে রাহুল গান্ধীর কানে। ঘোষণা হয়েছে কংগ্রেস জয়ী ৭৮ আসনে আর জনতা দলের হাতে ৩৮। মোট ১১৬। ম্যাজিক ফিগারের থেকে ৪টে আসন বেশি। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী পদের টোপ দিয়ে দেবগৌড়ার দলকে কাছে টানবার চেষ্টা শুরু করতেই হাতে নাতে ফল পেলেন তারা। শাসক দলে গেলে রাজ্যের সর্বোচ্চ পদ কোনদিনই পেতো না

জেডিএসের রাজ্য সভাপতি এইচ ডি কুমারস্বামী। বিরোধী দলের তকমাও নেই।তার থেকে সুযোগ হাতছাড়া যে বোকামি তা ঢের ভালো জানেন কুমার।তাছাড়া মায়াবতী ফ্যাক্টর ও খানিকটা বিজেপির দিকে যেতে বাধা দেবে জেডিএসকে। ২০১৩ সালের বিধানসভা ভোটের ফলাফলের দিকে তাকালে দেখা যাবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দল কিন্তু প্রায় নিজেদের জায়গা ধরে রেখেছে। ৪০টা আসন পেয়েছিল তারা।এবার পেল ৩৮টা। ফলে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসবার সম্ভাবনা তৈরী হলো দেবগৌড়া পুত্রের।মনে পড়ছে ১৯৯৬ সালের লোকসভা ভোটের কথা। যেখানে কোন রাজনৈতীক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় অকংগ্রেসী ও অবিজেপি আঞ্চলিক দলগুলির মিলিত ফ্রন্ট যা থার্ডফ্রন্ট (বামপন্থী, জনতা দল, তেলেগু দেশম পার্টি) নামে পরিচিত, সেই ফ্রন্ট সরকারের হাত ধরে দেশের ১১তম প্রধানমন্ত্রীর কুরশিতে (১লা জুন ১৯৯৬-১১ই এপ্রিল ১৯৯৭)বসেছিলেন এইচ ডি দেবগৌড়া। যদি ও সেই সরকার বেশিদিন চলে নি। আজ কর্ণাটকের ভোটের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে যে কংগ্রেস ক্ষমতা ধরে রাখতে জনতা দলের হাত ধরেছে তা দেখে ইতিহাস মুচকি হাসছে।সে হাসুক। ভারতের রাজনীতিতে সব হয়। কুমার মুখ্যমন্ত্রী হতেও পারেন। হোক না তা বাবার মতো কিছুদিনের জন্য। তবু ও তো মুখ্যমন্ত্রী বলে কথা। বল কিন্তু এগিয়ে গিয়ে রাজভবনের কোর্টে।নিয়ম বলছে ম্যাজিক ফিগারে না পৌঁছালেও রাজ্যপাল বিজেপি কে প্রথম সুযোগ দেবেন সর্বচ্চ আসন পাওয়ার জন্য। বিজেপির সিদ্ধান্ত ‘না’ হলে তখন জোটসরকার ক্ষমতায় আসতে পারে।কিন্তু সেক্ষেত্রে কংগ্রেস-জনতা দলের এই প্রেম পর্ব টিকে থাকবে তো পাঁচ বছর?বিজেপি নিশ্চয় আঙ্গুল চুসবে না এতদিন ধরে। তার ওপর সামনেই লোকসভা। মোদির ৫৬ইঞ্চি ছাতি রক্ষার লড়াই। না হলে কংগ্রেসের মতো বিজেপি ও গো বলয়ে ভোট টানতে ভোটারকে টাকা ভেট দিতো না। আসলে ভারতের বর্তমান রাজনীতিতে ক্ষমতাই আসল কথা। আর তাই প্রশ্ন থেকেই যায়।  ক্ষমতাই যদি রাজনৈতিক দল গুলোর ক্ষেত্রে মোক্ষলাভ হয় তাহলে ভারতের বর্তমান দলবদলের রাজনীতির স্বর্ণযুগে জেতা বিধায়ক রঙ পালটে গেরুয়া হয়ে যাবে না এমন গ্যারান্টি কে দেবে?বিজেপি-র তো দরকার ৮টি আসন। অনেকে বলতেই পারেন সে তো কংগ্রেস ও বিধায়ক কিনতে পারে? ভালো করে পর্যবেক্ষণ না করলে ও দেখা যাবে কংগ্রেস সেক্ষেত্রে অনেক শিশু কেন্দ্রের শাসকদলের কাছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here