শুভদীপ ভট্টাচার্য, বহরমপুরঃ
রাজ্যের ডিকশনারিতে এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় শব্দ ‘উন্নয়ন’। এককালীন ‘অধীরের গড়’ বহরমপুরেও, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী সেতুর নীচ দিয়ে প্রবাহিত ভাগীরথীর স্রোতের মতই ‘উন্নয়নের’ স্রোতধারাতে গা ভাসিয়েছে শহর। প্রায় সব রাস্তার মোড়েই বিশাল হোর্ডিং জুড়ে উন্নয়নের ফিরিস্তি। হোর্ডিংয়ের চিত্রপাঠে মানুষ চিনে নিতে শেখে উন্নয়নের হোতাদের। কিন্তু সত্য বড়ই নিঠুর ও পরিহাসের।
যখন শহরজুড়ে কেবলই উন্নয়নের রমরমা তখনই মাত্র একঘন্টার বৃষ্টিতেই হাঁটুজলে ভাসল বহরমপুর শহর। শহরের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের স্তুতি ও প্রত্যাশাও চলে গেল বিশ বাঁও জলে। গীর্জার মোড়, রানীবাগান মোড়, সতীমার গলি সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সমস্ত মোড়েই হাঁটুজল অব্দি জল জমে থাকে দীর্ঘক্ষন। ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হন পথচারীরা। রাস্তা সংলগ্ন দোকানগুলিতে জল নিকাশের সুযোগ না থাকায় রাস্তা ছাপিয়ে জল ঢুকে যায়। দীর্ঘক্ষন আটকা পড়ে বড় গাড়ি, বন্ধ থাকে যান চলাচল। গীর্জার মোড় সংলগ্ন স্কুল কাশীশ্বরী, ছুটির সময় হতেই বাড়ে অভিভাবকদের ভীড়, এদিনও তেমনটাই হাজির ছিলেন তারা। ছুটির অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষমান অভিভাবকরাও হন ব্যাপক ভোগান্তির কবলে। এক হাঁটু জলে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর, রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়ে তারা জলনিকাশী ব্যাবস্থা নিয়ে পৌরসভার উদাসীন মনোভাবকেই দায়ী করেন।
শহরজুড়েই জনগণের ট্যাক্সের টাকাতে বসছে হোর্ডিং, চলছে মিটিং-মিছিল-সভা-সমাবেশ। আর খালি পেটে আজকাল ধর্মের পাশাপাশি রাজনীতিও হয়না, তাই চলছে দেদার খানাপিনা, ক্লাবে ক্লাবে পৌঁছচ্ছে সরকারী অনুদান, চলছে উন্নয়নেও ঢালাও প্রচার অথচ জনগনের ট্যাক্সের টাকা জনপরিষেবাতে ব্যায় করা হচ্ছেনা।
শহরের জলনিকাশি ব্যাবস্থা নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার বাস্তবায়নও করা হয়নি পৌরসভার তরফে বরং দিনদিন চরম ভোগান্তিতে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মানুষকে এরকম মন্তব্যেই নানাভাবে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন অভিভাবকেরা।
যদিও নীলসাদা রঙে সেজে উঠেছে শহর, তবুও জনগন ছিল যে তিমিরে রয়ে গেছে সে তিমিরেই। তার মধ্যেও ‘উন্নয়ন’ শব্দে আস্থা রেখেই এর আভিধানিক অর্থের যথার্থ প্রয়োগের অপেক্ষায় দিন গুনছেন শহরবাসী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584