ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন হয়ে সহ খেলোয়াড়ের জুতোর খোঁজে নাকাল হয়ে ছিলেন চুনী গোস্বামী

0
195

প্রীতম সরকার

চুনী গোস্বামীর আসল নাম কি? সেই নামে আদৌ পরিচিত ছিলেন না তিনি। তাঁর আসল নাম সুবিমল গোস্বামী। ইনি সেই ফুটবল খেলোয়াড়, যাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় দল বিদেশে গিয়ে জয় পেয়েছে। ভারতীয় ফুটবল দলের ‘ক্যাপ্টেন’ চুনী গোস্বামী নিজেই তাঁর আত্মজীবনী ‘খেলতে খেলতে’ – তে স্বীকার করেছেন, যে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ভারতের যত অভিযান হয়েছে, তাঁর জীবনে সবচেয়ে ভালো খেলা তিনি ও তাঁর দল খেলেছেন ১৯৬০ সালের রোম অলিম্পিকে।

Chuni Goswami | newsfront.co
ছবিঃ প্রতিবেদক

কিন্তু সেই অলিম্পিকের পরের অলিম্পিক হয়েছিল জাকার্তায়। রোম অলিম্পিকে ভারতীয় ফুতবল দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন পি কে ব্যানার্জী। কিন্তু জাকার্তা অলিম্পিকে ক্যাপ্টেন করা হয়েছিল চুনী গোস্বামীকে। সি দলের গোলকিপার ছিলেন বাংলার খেলোয়াড় পি থঙ্গরাজ। সবচেয়ে মজার ঘটনা ঘটেছিল এই থঙ্গ্রাজকে ঘিরেই।

footballer Chuni Goswami | newsfront.co
ছবিঃ প্রতিবেদক

দল যেদিন কলকাতা থেকে জাকার্তার ফ্লাইট ধরবে, তার আগের দিন চুনী দেখতে পান, থঙ্গরাজের জুতো ছিঁড়ে গিয়েছে। চেহারায় থঙ্গরাজ ছিলেন বিশাল বপুর। যেমন লম্বা তেমন খেলোয়াড় সুলভ চেহারা।। ৬ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা বিশাল পুরুষ। তাঁর পা-এর মাপের জুতো পাওয়া সই সময় হঠাৎ করে সহজ ছিলনা। সেই খেলোয়াড়ের জুতো ছিঁড়ে গিয়েছে। খেলার বূট নয়, ফিজিক্যাল ট্রেনিং এর কেডস জুতো। সেই জুতোর খোঁজে সারা কলকাতা চষে ফেলেও যখন হাল ছেড়ে দিয়েছেন চুনী, অথন তাঁর অভৃদয়হৃদয় বন্ধু পি কে ব্যানার্জীর পরামর্শে একবার যান কলকাতার চীনা বাজারে।

সেসময় কলকাতায় চীনাদের চামড়ার জুতো তৈরিতে সুনাম ছিল। কিন্তু সাধারন কেডস জুতোর জন্য খোঁজ করতে আর চুনী গোস্বামী থঙ্গরাজকে সঙ্গে নিয়ে চীনা বাজারে যাননি। শেষে এক চীনা দোকানের জুতো ব্যবসায়ী থঙ্গরাজের পা এর মাপ দেখে একজোড়া পুরানো কেডস বের করে দিয়েছিলেন। কোন এক ব্যক্তি, বিশেষ অর্ডার দিয়ে তৈরি করিয়েছিলেন সেই কেডস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা দোকান থেকে বাড়ি নিয়ে যাননি। সেই জুতো থঙরাজের সমস্যার সমাধান করেছিল বটে, কিন্তু দুশ্চিন্তামুক্ত করেছিল দলের ক্যাপ্টেন চুনী গোস্বামীকে।

ক্যাপ্টেন তো এমনই হওয়া উচিত, যিনি সহ খেলোয়াড়দের খুব ছোট ছোট বিষয়গুলিকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। আর সেই কারনেই চুনী গোস্বামীর নেতৃত্বে ভারতীয় ফুটবল দল সেসময় সুনাম এশিয়াতে অর্জন করেছিল। এখন ভারতীয় ফুটবলের মান অনেক পড়ে গিয়েছে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের মানুষেরা জানেনই না ভারতে ফুটবল খেলা হয়। অথভ ১৯১১ সালে কলকাতার মাঠে গোরা পল্টনদের বিপরীতে খেলে মোহনবাগান আই এফ এ শিল্ড জিতেছিল। বাংলার পুরানো সুদিন ফেরাতে চুনী গোস্বামীদের মতো ‘একনিষ্ট’ ফুটবল খেলোয়াড় এখন খুব প্রয়োজন।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here