সৌমেন মিশ্র,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
রাজ বাড়ির জায়গা জবরদখলের অভিযোগ উঠলো হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুরের নাড়াজোল রাজবাড়িতে।রাজবাড়ি চত্ত্বরেই চলছে অবৈধ নির্মান।প্রতিকার চেয়ে জেলা শাসককে লিখিত আবেদন করে নাড়াজোল আর্কিওলজিক্যাল প্রিজার্ভেশন কমিটি।অভিযোগ পাওয়া মাত্রই জেলা শাসকের নির্দেশে গত বুধবার একটি প্রতিনিধি দল এই নাড়াজোল রাজবাড়ি পরিদর্শন করে গেছেন বলে জানান রাজবাড়ির বর্তমান সদস্য সন্দীপ খান।
২০০৮ সালে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন দাসপুরের এই রাজবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষনা করেছে রাজ্য হেরিটেজ দপ্তর।রাজ্য সরকার এই রাজবাড়িকে কেন্দ্র করে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে।
এই রাজবাড়িতে একসময় দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম সারির নেতারা এসেছিলেন। মহত্মা গান্ধী, নেহেরু, নেতাজী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্রের মতো মনীষীদের যাতায়াত ছিল এই রাজবাড়িতে।একসময় রাজবাড়ির সদস্যরাও স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।
রাজবাড়ীতে গেলে এখনো দেখতে পাওয়া যায় গোপন সুড়ঙ্গ।স্বাধীনতা আন্দোলনে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা নিজেদের গা ঢাকা দিতে এই সুড়ঙ্গ ব্যবহার করতো বলে কথিত রয়েছে।রাজবাড়ির অপরুপ স্থাপত্যের নিদর্শন দেখতে বছরের বিভিন্ন সময় পর্যটকরা ভিড় জমান এখানে।
অভিযোগ, হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়া এই রাজবাড়ির জায়গা ক্রমশ বে-দখল হয়ে যাচ্ছে। হেরিটেজ ঘোষিত জায়গার একশো মিটারের মধ্যে কোনও নির্মান বা দখলদারী বেআইনি। এসবকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে বসবাস এবং অবৈধ নির্মান।
রাজবাড়ির স্মৃতি আর ঐতিহ্য বহন করা অপরুপ স্থান জলহরী, হাওয়াখানা, চাঁপাবাগান সহ একাধিক জায়গাতে চলছে জবরদখল। এর ফলে ৫০০ বছরেরও অধিক ঐতিহাসিক এই স্থানটির সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে।
নাড়াজোল আর্কিওলজিক্যাল প্রিজার্ভেশন কমিটির সম্পাদক তথা রাজবাড়ির বর্তমান সদস্য সন্দীপ খান বলেন,বর্তমানে রাজবাড়ির জায়গা রাজ্য সরকারের অধিনে।সরকারকেই উদ্যোগ নিয়ে রাজবাড়ির জায়গা পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করতে হবে।রাজা নরেন্দ্রলাল খান এর রেখে যাওয়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যতম এই ঐতিহাসিক স্থান নাড়াজোল রাজবাড়ি যাতে হারিয়ে না যায় তার জন্য রাজ্যসরকার পদক্ষেপ নেবে এই আশায় বর্তমান সদস্যরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584