নিজস্ব সংবাদদাতা, কালিয়াগঞ্জঃ
কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ৭ নং ভান্ডার গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন এবং কালিয়াগঞ্জ ২নং সার্কেলের অন্তর্গত পশ্চিম রামপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। কালিয়াগঞ্জ পৌর শহরের সন্নিকটে একটি সুন্দর গ্রাম্য পরিবেশে গড়ে উঠেছিল এই প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুইজন শিক্ষক এবং একজন শিক্ষিকা মিলে মোট তিনজন বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।এই তিনজন শিক্ষক শিক্ষিকার বাড়ি বিদ্যালয় থেকে দুই কিলোমিটার দূরত্বে কালিয়াগঞ্জ পৌর শহরে। বিদ্যালয়টিতে ৬০-৬৫ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে প্রথম -চতুর্থ শ্রেণীতে।বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক অবসরের পর বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক হয়ে দায়িত্বে আছেন বিকাশ চক্রবর্তী এবং অন্য দুইজন হলেন রাস্ব পোদ্দার ও তনয়া ভট্টাচার্য। আজ বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন শুরু হতেই প্রথমে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তীর সাথে শিক্ষিকা তনয়া ভট্টাচার্যের মধ্যে বচসা শুরু হয় অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টারে সঠিক সময়ে স্বাক্ষর করাকে কেন্দ্র করে।এই বচসা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যেখানে বিদ্যালয়ের সকল অভিভাবকগন এবং এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের সামনে এসে উপস্থিত হয়। বিদ্যালয়ের সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় না থাকা,সঠিক ভাবে পড়াশোনা না হওয়া এবং মিড ডে মিলে শিশুদের জন্য জঘন্য খাওয়া দাওয়া এমনকি শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে দৈনন্দিন গন্ডগোল ইত্যাদির বিরুদ্ধে তারা সকলে মিলেগন বিক্ষোভে সামিল হন।
এই সময়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর পৌঁছলে সংবাদ প্রতিনিধিদের সামনে গন বিক্ষোভের মাঝে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তী অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষিকাদের উপস্থিতির সময় বেলা ১১ টা কিন্তু আজকে শিক্ষিকা তনয়া ভট্টাচার্য ১১ টা ২০ মিনিটে বিদ্যালয়ে এসে উপস্থিত হয়ে ১১ টায় অ্যাটেনডেন্স রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করতে গেলে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তী বাধা দেন এবং তখনি শিক্ষিকা তনয়া ভট্টাচার্য অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টারটি বিকাশ চক্রবর্তীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বিদ্যালয়ের বাহিরে চলে আসেন। ঠিক তখনই বিদ্যালয়ের বাহিরে অসংখ্য অভিভাবক ও এলাকাবাসীদের জমায়েত হতে দেখা যায় এবং তারা সকলেই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে একযোগে সরব হোন বিক্ষোভে। সংবাদ প্রতিবেদকের সামনে শিক্ষিকা অভিযোগ করেন দীর্ঘদিন ধরে তার সাথে বিকাশ চক্রবর্তী কোনো রকম সহযোগিতাতো করেন না বরং দিনের পর দিন তার সাথে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অসহযোগিতা, অসভ্য আচরণ, অভব্য ব্যবহার করে আসছেন। শিক্ষিকা আরো অভিযোগ করেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তী নিজেই প্রায় সময় মতো বিদ্যালয়ে আসেন না , অপর শিক্ষক রাস্ব পোদ্দার প্রায় দুই মাসের অধিক দুর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে বিছানায় শয্যাগত হয়ে বিদ্যালয়ে না আসা সত্ত্বেও ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তী জুলাই মাস অবধি অ্যাটেনডেন্স রেজিস্ট্রারে তার স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন, মিড ডে মিলে শিশুদের জন্য জঘন্য খাওয়ারের বিরোধিতা করলেই তিনি ক্ষেপে গিয়ে শিশুদের উপর রাগারাগি করেন এবং সর্বদাই ধমক চমকে সকলকেই চুপ করিয়ে রাখেন। তবে এই গন বিক্ষোভে বিদ্যালয়ের সম্পাদক বিশ্বনাথ গোস্বামী ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তার বিভিন্ন অসঙ্গতি কার্যকলাপ ও সুষ্ঠ শিক্ষার পরিবেশ বজায় না রাখার বক্তব্য তুলে ধরেন। বিদ্যালয়ের এহেন পরিস্থিতিতে এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা সবচেয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তী কে। তারা চাইছেন শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তীকে অন্যত্র বদলি করে বিদ্যালয়ের সুষ্ঠ শিক্ষার পরিবেশ গড়ে উঠুক।এই কারনে সকল অভিভাবকগন ও এলাকাবাসী মিলে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে একটি মার্চ পিটিশন বিদ্যালয়ের সম্পাদকের মাধ্যমে কালিয়াগঞ্জ ২ নং সার্কেলের এস আই এর কাছে পৌঁছে দিতে একজোট হয়েছেন। এই বিষয়ে ২ নং সার্কেলের এস আই সংবাদ প্রতিবেদকদের জানান তিনি ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র পেয়েছেন এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এই বিষয়টি জানিয়ে তার বিরুদ্ধে কি সরকারি ব্যবস্থা গ্রহন করা যায় সেটা অবিলম্বে দেখছেন। এখন দেখার বিষয় পশ্চিম রামপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুষ্ঠ শিক্ষার পরিবেশ আগামী দিনে কিভাবে গড়ে উঠে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584