পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
নানুরে বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল দুজনকে। ধৃতদের নাম আলো চৌধুরী ও তুফান দাস। নানুরের মঙ্গলপুরে তল্লাশি চালিয়ে এদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ তাদের আদালতে তোলা হবে।
ধৃতদের বিরুদ্ধে সংবিধানের ৩০২ ধারা যোগ করতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানাবে পুলিস।প্রসঙ্গত, ৬ তারিখ, গ্রামে বিজেপির পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বচসা শুরু হয় নানুরের রামকৃষ্ণ গ্রামে। সেই বচসা-ই পরবর্তীতে রূপ নেয় দু’পক্ষের সংঘর্ষে। দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি।
অভিযোগ, সংঘর্ষের সময়ই বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইকে লক্ষ্য করে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। গুলি লাগে স্বরূপ গড়াইয়ের পাঁজরে।আশঙ্কাজনক অবস্থায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। শেষে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছিল স্বরূপ গড়াইকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। রবিবার রাতে মৃত্য়ু হয় স্বরূপ গড়াইয়ের। আর তারপর থেকেই নতুন করে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে নানুরে। দলীয় কর্মীর মৃত্যুতে আজ জেলাজুড়ে আন্দোলনে নেমেছে বিজেপি। এসপি অফিসের সামনে অনির্দিষ্টকালীন অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। এসপি অফিসের পাশাপাশি নানুর থানার সামনেও চলছে বিক্ষোভ।
বিজেপির দাবি, স্বরূপ গড়াইকে খুনের পিছনে হাত রয়েছে নানুরের তৃণমূল নেতা। সে-ই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তাঁকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। এদিন সন্ধ্যায় স্বরূপ গড়াইয়ের দেহ পৌঁছনোর কথা গ্রামে।
এদিকে নিহত দলীয় কর্মীর দেহ রাজ্য সদর দফতরে নিয়ে যেতে চায় বিজেপি। এই দাবিতে এন আর এস-এর মর্গের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। মর্গের সামনে মোতায়েন বিশাল পুলিস বাহিনী। ব্যারিকেড করে ঘিরে রাখা হয়েছে মর্গ। এলাকায় রয়েছেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা।
বিজেপি কর্মীদের দাবি, তৃণমূলী দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত বিজেপি কর্মীকে প্রথমে সদর দফতরে নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে, তারপর তাঁর দেহ নানুরে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু পুলিস গণ্ডগোলের আশঙ্কায় দেহ সরাসরি বীরভূমের নানুরেই পাঠিয়ে দিতে চায়। আর তা নিয়েই বাদানুবাদ শুরু হয়। মৃত বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইের স্ত্রী চায়না গড়াই দাবী করেন, স্বামীর শেষ ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর তাকে যেন বিজেপির রাজ্য দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তাই স্বামীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করা স্ত্রী হিসেবে আমার দায়িত্ব। কোনো প্রশাসনের কথা আমি মানি না, যদি আটকায় তাও শুনবো না যেমন করেই হোক আমি নিয়ে যাব আমার স্বামীর মরদেহ কে।
আরও পড়ুনঃ গৃহবধূ হত্যায় যাবজ্জীবনের সাজা স্বামী ও শ্বশুরের
বীরভূম জেলা বিজেপির সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মন্ডল বলেন, স্বরূপ গরাই কে খুন করার প্রধান চক্রান্তকারী তৃণমূলের বীরভূম জেলা পরিষদের কর্মদক্ষ করিম খানের ভূমিকা রয়েছে, তাই পুলিশ যতক্ষণ না করিম খানকে গ্রেপ্তার করছে ততক্ষণ আমাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলবে বীরভূম জেলা পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে। যদিও বীরভূম জেলা বিজেপির সভাপতির এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ দাবি করেন চক্রান্ত করে বিজেপি তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে, বিজেপির অন্তর কলহের জেরে স্বরূপ গরাইকে খুন হতে হয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584