শিবশঙ্কর চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
প্রায় চার মাস ধরে চলছে দেশজুড়ে লকডাউন। যার জের পড়েছে দেশের ছোটো-বড় শিল্পগুলির উপর। সব থেকে বেশি প্রভাবিত হচ্ছে মরশুমি ব্যবসা। যার অন্যতম আইসক্রিম। প্রখর গ্রীষ্মে আইসক্রিমের চাহিদা শুধু শহর নয়, মফস্বল ও গ্রামেও। সেই আইসক্রিমের বাজার এ বার একেবারে শূন্য। বন্ধ ছোট-মাঝারি সব আইসক্রিম প্রস্তুতকারী সংস্থা।
প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, চৈত্র-বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসেই সব থেকে বেশি বিক্রি হয় আইসক্রিমের। লকডাউনের জেরে এ বছর ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। করোনার দাপটে এ বছরের মতো ব্যবসাও শেষ বলে মনে করছেন তারা। গরমের মাস চারেক ব্যবসার উপর নির্ভর করে সারা বছর চলে তাদের। আগামী দিনগুলোয় কি ভাবে সংসার চলবে তা ভেবে মাথায় হাত পড়েছে আইসক্রিম প্রস্তুতকারকদের।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সীমান্ত শহর হিলি এলাকার “তিন তারা আইসক্রিম ফ্যাক্টরি” নামে আইসক্রিমের কারখানা রয়েছে অমুল্য বিশ্বাসের। তিনি বলেন, “এই সময় মাস চারেক ব্যবসার উপর সারা বছর নির্ভর করতে হয় আমাদের। এ বছর তো কোনও ব্যবসায় হল না।
আরও পড়ুনঃ একটানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন আলিপুরদুয়ার
অথচ আমার মতো অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আইসক্রিম তৈরির সরঞ্জাম কেনার জন্য বাজার থেকে ক’দিন আগেই ঋণ নিয়েছে। তাদের অবস্থা কি হবে জানিনা। পাশাপাশি এর সাথে যুক্ত কারখানার কারিগর থেকে রাস্তায় রাস্তায় আইসক্রিম ফেরি করে বিক্রি করার সাথে যুক্ত রয়েছে প্রচুর মানুষ। সবার জীবন জীবিকা কি ভাবে চলবে কিছু বুঝে উঠতে পারছি না।” সরকারের উচিত এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য উদার হস্তে এগিয়ে আসা। না হলে এর সাথে যুক্ত অনেকেই পরিবার নিয়ে পথে বসবে বলে তিনি আক্ষেপের সুরে জানান।
ফাল্গুনের শেষ থেকে আইসক্রিমের মরসুম শুরু হয়। তবে চৈত্র, বৈশাখ আর জ্যৈষ্ঠ মাসে আইসক্রিম বিক্রি হয় সব থেকে বেশি। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ছোট বড় শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু আইসক্রিম ফ্যাক্টরি৷ সংখ্যাটাও নেহাত খারাপ নয়।
সেই সব ছোট বড় শহর লাগোয়া কারখানাগুলোয় তৈরি হওয়া আইসক্রিম, গাড়িতে করে নিয়ে তাদের নিজ নিজ এলাকা জুড়ে বিক্রি করেন বিক্রেতারা। এ বছর সে সবই বন্ধ।
আরও পড়ুনঃ বিশেষভাবে সক্ষম কিশোরীর পাশে প্রশাসন
অপরদিকে আইসক্রিম বিক্রেতারা জানান “কারখানা থেকে গাড়ি নিয়ে আমরা আইসক্রিম বিক্রি করি। যেমন বিক্রি হয়, সেই মতো টাকা পাই। এ বছর দিন চারেক বেরোতে পেরেছিলাম। তার পর সব বন্ধ। কি করে চালাব বুঝে উঠতে পারছি না।”
এখন সবাই সমস্যায়। এই সময়টা চলে গেলে এ বছরের মতো আইসক্রিম ব্যবসার সময়ও চলে যাবে। একটা গোটা বছর নষ্ট হয়ে যাবে এই ব্যবসার সাথে যুক্ত সকলের।ব্যবসার সময়টাও চলে যাচ্ছে। ক্ষতি পূরণের কোনও সুযোগও পাবেনা এ বার তারা।
আরও পড়ুনঃ তিস্তার জলে তলিয়ে গেল যুবক
আপাতত তাই সকলেই তাকিয়ে লকডাউন ওঠার দিকে। স্কুল কলেজ পার্ক গুলি খুলে গেলেও তাতে অন্তত গরমের দিন গুলোর দুপুরে কিছুটা হলেও ব্যবসার সুযোগ মিলবে। বলে আশা ব্যবসিকদের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584