নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলীঃ
কারোর পৌষ মাস, তো কারোর সর্বনাশ। সরকারি নির্দেশে জটলা আটকাতে চায়ের দোকান বন্ধ করতে উদ্যোগী চন্দননগর কমিশনারেট। এক দিনেই রাস্তায় নেমে সমস্ত চায়ের দোকান বন্ধও করে দিলো পুলিশ। অনেক গরিব চায়ের দোকানদারদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হলো।
অনেক কাটখড় পুড়িয়ে একদিন থানায় আটকে থাকার পর বাড়ি ফিরলো গরিব দোকানদাররা। তাঁদের অপরাধ পেটের তাগিদে তাঁরা রাস্তার পাশে চা বিক্রি করছিলেন। পুলিশের বক্তব্য, চায়ের দোকানে নাকি আড্ডা হয়। তাই তারা নাকি উপরতলার নির্দেশ পালন করছেন।
আরও পড়ুনঃ দিনে দুপুরে চলল গুলি, আহত রায়গঞ্জ পুরসভার তৃনমূল কাউন্সিলর
অতি উদ্যোগী ব্যান্ডেল ফাঁড়ির পুলিশ তাই এক দিনেই ব্যান্ডেল সহ সংলগ্ন গোটা এলাকার চায়ের দোকান বন্ধ করে দেয়। তবে ব্যতিক্রম নজরে পড়বে ব্যান্ডেল পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন চায়ের দোকানের দিকে তাকালে।রমরমিয়ে দোকান চলার পাশাপাশি চলছে জমিয়ে আড্ডা। পুলিশ কর্মী সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই আড্ডা জমাচ্ছেন সেই দোকানে।
ফাঁড়ির ইনচার্জ শের আলী মন্ডলের বদান্যতায় এই দোকানের ক্ষেত্রে জনতা কার্ফু বা লকডাউন কোনও নির্দেশই কার্যকর হয়নি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টানা খোলা থাকছে দোকান। সোমবার দুপুরেও ওই দোকানে বেশ ভালোই ভিড় নজরে পড়ে।
নিজের ফাঁড়ির পাশের চায়ের দোকান খোলা। সেদিকে হেলদোল নেই। অথচ ব্যান্ডেল এলাকার অন্যান্য চায়ের দোকান বন্ধ করতে তৎপর ব্যান্ডেল ফাঁড়ির পুলিশ। এই ঘটনায় শের আলী মন্ডলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বন্ধ চায়ের দোকানদার থেকে সাধারণ মানুষেরা।
তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে নারাজ আলী বাবু। অন্যদিকে ভালো কাজও করছে পুলিশ। মুদিখানা দোকান, ওষুধের দোকান, সবজি বাজার ছাড়া বাকি সব দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। তবে কিছুটা ছাড় দিয়েছে লোটো আর বেআইনি মদের দোকান গুলিকে।
ব্যান্ডেলের রাস্তায় বেরোলেই সেই ব্যতিক্রম নজরে পড়বে। এই দোকান গুলি আগে সম্পূর্ণই খোলা থাকতো, লকডাউনের পর থেকে দোকান খোলা রাখার পদ্ধতিগত পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। দোকানের সামনের দিকটা বন্ধ থাকলেও, পেছন দিক খোলা থাকছে।
লকডাউনের বাজারে তাই দোকানের পেছন দিক দিয়ে মদ কিনলে দামটাও দ্বিগুন চোকাতে হচ্ছে। লক ডাউনে সরকারি লাইসেন্স প্রাপ্ত মদের দোকানগুলি বন্ধ থাকলেও ছাড় পাচ্ছে বেআইনি মদ বিক্রেতারা। কারণ ওখান থেকেই তো পুলিশের মোটা আমদানি।
এদিকে উপর মহলে কাজও দেখাতে হবে তাই ওদের ছেড়ে গরিব চায়ের দোকানদারদের পেছনে লেগেছে পুলিশ। এমনিতেই লকডাউনে গরিব মানুষের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। কাজ কর্ম বন্ধ থাকায় কিভাবে চলবে চিন্তায় ঘুম ছুটেছে সাধারণ মানুষের।
অন্যদিকে গরিব মানুষের চায়ের দোকান বন্ধ করে রাজনৈতিক নেতাদের মতো সুপিরিয়র অফিসারের কাছে পয়েন্ট কালেকশনে ব্যস্ত ব্যান্ডেল ফাঁড়ির ইনচার্জ বিখ্যাত আলী বাবু।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584